রাজউকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ!
২৮ জুলাই ২০১৩ঢাকার পাশেই রূপগঞ্জ এবং এবং কালিগঞ্জের ৬,১৫০ একর এলাকা নিয়ে রাজউকের পূর্বাচল আবাসিক প্রকল্প৷ কিন্তু রাজউক কর্তৃপক্ষ এখন কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই কালিগঞ্জ এলাকায় পূর্বাচল দ্বিতীয় প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে৷ আর এই কাজ করতে গিয়ে তারা বনাঞ্চল উজাড় আর জলাভূমি ভরাট করছে পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা না করেই৷ এমনকি তারা সাধারণ মানুষের জমি এবং ঘর বাড়িও দখল করছে৷
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-র সমন্বয়কারী স্থপতি ইকবাল হাবিব ডয়চে ভেলেকে জানান, তারা সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখেছেন ইতিমেধ্যেই ১,৬০০ একর এলাকার গাছ এবং বন কেঁটে উজাড় করা হয়েছে৷ ভরাট করা হয়েছে জলাভূমি৷ তিনি বলেন, ‘‘ঐ এলাকায় শালবন ছাড়াও শতবর্ষী অনেক গাছ রয়েছে৷ আর আছে প্রাকৃতিক জলাধার৷ এর আগে তারা বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনলে আদালত গাছ কাঁটা এবং জলাধার ভরাটের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়৷ রাজউক চেয়ারম্যান আদালতে হাজির হয়ে গাছ না কাঁটা এবং জলাভূমি ভরাট না করার মুচলেকা দেন৷ কিন্তু বাস্তবে উল্টো কাজ করছে রাজউক৷''
ইকবাল হাবিব জানান, রাজউক তার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বেটেক্সকে দিয়ে একটি প্রতারণামূলক প্রতিবেদন তৈরি করেছে৷ তাতে বলা হয়েছে ঐ এলাকায় মাত্র ৫.৭ শতাংশ এলাকায় বনভূমি৷ কিন্তু বাস্তবে সেখানকার ৪২.৭৬ শতাংশ এলাকায় বনভূমি রয়েছে৷
ঐ এলাকায় নিরীহ গরীব মানুষের জমি এবং ঘরবাড়ি দখলেরও অভিযোগ করেন ইকবাল হাবিব৷ এলাকার মানুষ এর প্রতিবাদ জানালে অন্তত ১ হাজার পরিবারের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করেছে রাজউক৷ তারা এখন গ্রেফতারের ভয়ে এলাকায় থাকতে পারছেন না৷ আর এই সুযোগে রাজউক তার দখলের মহোত্সব চালিয়ে যাচ্ছে৷ তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের শেষ সময়ে প্লট বরাদ্দের নামে লুটপাটের আশায় রাজউক চেয়ারম্যান ও সরকারের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি দখল, বন উজাড় এবং জলাভূমি ভরাটের কাজ করছেন৷ আর রাজউক পারিবেশ অধিদপ্তরের কোনো অনুমতি ছাড়াই এসব কাজ করছে৷ তাঁরা এর বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবেন বলে জানান৷
এই বিষয়ে রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মে. নুরুল হুদার কাছে জানতে চাইলে তিনি পরে যোগাযোগ করতে বলেন৷ কিন্তু পরে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়৷
গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খান অবশ্য দাবি করেন, রাজউকের এই বেআইনি কাজের ব্যাপারে তার কিছু জানা নেই৷ দেশের প্রচলিত আইনের বাইরে গিয়ে রাজউক বনভূমি উজাড় বা জলাধার ভরাট করতে পারেনা বলে জানান তিনি৷ এদিকে পরিবেশমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ বলেন, রাউজক যদি পরিবেশ আইনের লঙ্ঘন করে থাকে তাহলে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে৷
ইকবাল হাবিব মনে করেন, রাজউক চেয়ারম্যানের এই অপকর্মের দায় সরকারকেও নিতে হবে৷