মৌমাছিদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা
২১ মার্চ ২০১১একদিকে ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীর জনসংখ্যা ৯ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাওয়ার রেকর্ড ছুঁতে চলেছে৷ অন্যদিকে এই বেড়ে চলা জনসংখ্যা আরও নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে মৌমাছির মতো প্রকৃতির ছোটখাটো কীট পতঙ্গের উপর, যারা শস্য উৎপাদনে সাহায্য করে৷
মৌমাছিরা ৭০ শতাংশেরও বেশি শস্যকে পরাগনিষিক্ত করে বিশ্বের ৯০ শতাংশ খাদ্য যোগান দিতে সাহায্য করে৷ কিন্তু ১৯৬০ সাল থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে মৌমাছিদের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে৷ সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে নতুন করে আরও কতগুলো জায়গায় মৌমাছির বিলুপ্তি শুরু হয়েছে, যেখানে আগে এমনটি ঘটেনি৷
চীন এবং জাপানের মৌচাষীরা লক্ষ্য করেছেন মৌমাছির আকস্মিক এই হ্রাস পাওয়ার ঘটনা৷ আফ্রিকায় মিশরের নীল নদ বরাবর অঞ্চলেও দেখা গেছে একই ঘটনা৷ উত্তর অ্যামেরিকায়ও ২০০৪ সালে এই সমস্যা পরিলক্ষিত হয়েছে৷ জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি বা ইউনেপ এর একটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে৷
ইউনেপ এর মুখপাত্র নিক নুট্টাল এর মতে, এই ঘটনার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে৷ মানুষের আচরণের কারণে ফুল গাছগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, যা বন্য মৌমাছিদের প্রধান খাবার৷ আর এই কারণে এই সমস্যাগুলোর সৃষ্টি হচ্ছে৷ এছাড়া বায়ু দূষণের ফলে এরা ঘ্রাণ বুঝে ফুল সনাক্ত করতে পারে না৷ ফলে সেসব ফুলে ফুলে তারা বিচরণ করতেও পারে না৷ এছাড়া প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আগামী এক দশকে পৃথিবী থেকে আরো প্রায় ২০ হাজার ফুল গাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবে৷
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চল জুড়ে রয়েছে প্রায় ২০ লাখ মৌ কলোনি৷ আর এদের একেকটি কলোনিতে বাস করে প্রায় ২ কোটি মৌমাছি৷ যেসব কলোনির উপর নির্ভর করে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ চাষী৷ নুট্টল ডয়চে ভেলেকে জানান, বংশগত বৈচিত্র্যের অভাবে এই কলোনিগুলোতে সহজেই ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি মারা যায়৷ আর এই প্রবণতা আরো বাড়ছে৷ তিনি বলেন, মানুষ হিসেবে আমাদের আরেকবার ভেবে দেখা উচিত, আমাদের জীবনের জন্য অপরিহার্য এসব খুদে পতঙ্গের অস্তিত্ব রক্ষা করতে কী পদক্ষেপ ও পন্থা গ্রহণ করা দরকার৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন