মিশরে পদত্যাগ করলেন মন্ত্রীরা, কিন্তু বিক্ষোভ চলছেই
২৯ জানুয়ারি ২০১১সর্বশেষ পরিস্থিতি
পুরো দেশ জুড়েই চলছে বিক্ষোভ৷ কায়রো, আলেক্সান্দ্রিয়া, ইসমাইলিয়া, সুয়েজ, রাফাহ সবখানেই বিক্ষোভ চলছে৷ কায়রোর বিক্ষোভস্থল তাহরির স্কোয়ারে হাজার হাজার আন্দোলনকারী জড়ো হয়েছেন৷ তারা মুবারক-বিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন৷ আর পাশেই ট্যাঙ্ক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন সেনা সদস্যরা৷ তবে আজ পুলিশের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে না৷ যদিও গতকাল শুক্রবার তারাই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিলেন৷ যে সংঘর্ষে শুধুমাত্র একদিনেই অর্থাৎ শুক্রবারেই নিহত হয়েছেন ৩৮ জন৷ সরকারিভাবেই জানানো হয়েছে এই তথ্য৷ বেসরকারি হিসেবে সেটা আরও বেশি৷ এ নিয়ে আন্দোলন শুরু হওয়ার পর মোট ৪৮ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি৷ তবে আল-জাজিরা’র হিসেবে নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে৷ নিহতদের মধ্যে সাধারণ জনগণ ছাড়াও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য রয়েছেন৷ যেমন আজ রাফাহ শহরে বিক্ষুব্ধ জনতা পিটিয়ে তিন পুলিশ সদস্যকে মেরে ফেলেছেন বলে জানা গেছে৷
সরকার ও বিশ্বের প্রতিক্রিয়া
প্রেসিডেন্ট মুবারকের ঘোষণা অনুযায়ী আজ মন্ত্রীরা পদত্যাগ করেছেন৷ এরপর নতুন সরকার গঠনের কথা রয়েছে৷ এদিকে বিক্ষোভ থামাতে রাত্রীকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে৷ যারা কারফিউ ভঙ্গ করবে, তারা বিপদে পড়বে বলে টেলিভিশনে ঘোষণা দেয়া হয়েছে৷ তবে মিশরের নোবেল জয়ী মহম্মদ এল বারাদেই, যিনি একসময় আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ’র প্রধান ছিলেন, তিনি বলছেন, মুবারককে অবশ্যই যেতে হবে৷ প্রয়োজনে মধ্যবর্তী সরকারের প্রধান হতে তিনি রাজি আছেন বলেও জানান৷ আফ্রিকান ইউনিয়ন মিশরের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷ আর যুক্তরাষ্ট্র শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ থামাতে মিশরকে পরামর্শ দিয়েছে৷ আর বলেছে, যদি বিক্ষোভ দমাতে সামরিক বাহিনী ব্যবহার করা হয় তাহলে মিশরকে দেয়া সাহায্য কমিয়ে দেয়া হতে পারে৷ উল্লেখ্য, মিশরের সামরিক বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রতি বছর প্রায় ১৩০ কোটি ডলার সাহায্য পেয়ে থাকে৷
ইন্টারনেট যোগাযোগ বন্ধ
দেখতে দেখতে বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার পেছনে ফেসবুক, টুইটারের মতো ওয়েবসাইট সহ মোবাইল নেটওয়ার্কের একটা বেশ বড় অবদান রয়েছে৷ তাই সরকার সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল৷ তবে আজ আংশিকভাবে দুটি মোবাইল ফোন অপারেটরের কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে৷ কিন্তু ইন্টারনেটের সংযোগ এখনো পাওয়া যাচ্ছে না৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন