1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বোকো হারাম দুর্বল হয়ে যায়নি

গ্রেহেম লুকাস/জেডএইচ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

জঙ্গি গোষ্ঠী বোকো হারামের হামলায় উত্তর নাইজেরিয়ার এক গ্রামে বেশ কয়েকজনের প্রাণ গেছে৷ এই গোষ্ঠীর দুর্বল হয়ে যাওয়ার যে খবর এতদিন শোনা গেছে সেটা যে ঠিক নয়, এই হামলা তার প্রমাণ বলে মনে করেন ডিডাব্লিউ-র গ্রেহেম লুকাস৷

https://p.dw.com/p/1Hmxa
Nigeria Boko Haram Anschlag
ছবি: picture alliance/AP Photo/J. Ola

নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চল ও প্রতিবেশী দেশগুলোতে বোকো হারামের হামলায় গত ছয় বছরে প্রায় ২০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে৷ নাইজেরিয়ার সবশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও দেশটির সেনাবাহিনীর কাছে বোকো হারামের কয়েকবার পরাজিত হওয়ার ঘটনায় মনে হয়েছিল যে, এই জঙ্গি গোষ্ঠীটি হয়ত দুর্বল হয়ে পড়েছে৷ এমনও ভাবা হয়েছিল যে দুই বছর আগে অপহরণ করা স্কুল ছাত্রীরা হয়ত শিগগিরই মুক্তি পাবে৷ কিন্তু ঐ ছাত্রীরা এখনও মুক্ত হয়নি, আর হামলাও চলছে৷ মনে হচ্ছে, প্রতিবেশী দেশ মালিতে সক্রিয় আল-কায়েদার সঙ্গে জড়িত জঙ্গি গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ড তাদের উৎসাহিত করছে৷ পশ্চিম আফ্রিকায় ইসলামি শরিয়া ভিত্তিক সমাজ গড়তে নেতৃত্ব দেয়া নিয়ে দুই জঙ্গি গোষ্ঠীর মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতা দেখা যাচ্ছে৷

সপ্তাহান্তে বোকো হারাম যেটা করছে সেটাকে সিরিয়া, ইরাক এবং সম্প্রতি লিবিয়াতে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে৷ পশ্চিম আফ্রিকায় আল-কায়েদা যা করতে পারে, বোকো হারামও তা পারে৷ এই দুই গোষ্ঠীই বর্বরতম হওয়ার চেষ্টা করছে৷ এটি এতটাই খারাপ ও বিকৃত এক বিষয়, যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না৷

বোকো হারামের সদস্য ও তিন নারী আত্মঘাতী হামলাকারীর হামলায় কমপক্ষে ৮৬ জন প্রাণ হারিয়েছে৷ এর মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে৷ অনেকের শরীর আগুনে পুড়ে গেছে৷ বোকো হারামের সৃষ্টি যে শহরে সেই মাইডুগুরি থেকে মাত্র তিন মাইল দূরে এই হামলা চালায় বোকো হারাম৷

হামলার পরপর নাইজেরীয় সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডে মনে হয়েছে যে তারা এ ধরণের জঙ্গি হামলা মোকাবিলায় সক্ষম নয়৷ হামলাস্থলের কাছেই সেনা ক্যাম্প থাকলেও হামলা শুরুর চার ঘণ্টা পর সেখানে সেনাসদস্যরা উপস্থিত হন৷ তবে প্রথমে যে সেনা সদস্যরা সেখানে পৌঁছেছিলেন তাদের চেয়ে অস্ত্রশস্ত্রে বেশি সজ্জিত ছিল হামলাকারী বোকো হারাম সদস্যরা৷ পরে আরও অস্ত্র নিয়ে অন্য সেনা সদস্যরা হাজির হলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব হয়৷ নাইজেরীয় সেনাবাহিনীর এই প্রতিক্রিয়া এটাই প্রমাণ করে যে দেশটিতে নতুন প্রেসিডেন্ট আসলেও বোকো হারামকে নিয়ন্ত্রণ করার নীতিতে খুব একটা পরিবর্তন হয়নি৷

গ্রেহেম লুকাস, ডিডাব্লিউ-র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিভাগের প্রধান
গ্রেহেম লুকাস, ডিডাব্লিউ-র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিভাগের প্রধান

সবশেষ হামলা এটাও প্রমাণ করে যে, ইসলামিক স্টেট ও আল-কায়েদার সঙ্গে মতাদর্শে ভিন্নতা থাকলেও বোকো হারাম এখন তথাকথিত ‘সফট টার্গেট'-এ হামলা করছে৷ অর্থাৎ যে সব শহর ও গ্রামে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ততটা শক্ত নয় এবং যে অঞ্চলগুলোতে বিদেশি অতিথিরা যান সে সব জায়গায় হামলার পরিকল্পনা করছে বোকো হারাম৷ অপহরণও তাদের পরিকল্পনার মধ্যে আছে৷ যারা তাদের মতাদর্শ সমর্থন করবে না তাদেরই হত্যা করা হবে৷ সরকারগুলো যদি এখনই তরুণদের এ ধরণের জঙ্গি মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হওয়া বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে না পারে তাহলে আফ্রিকা, এশিয়া সহ ইউরোপ হামলার হুমকির মুখে থাকবে৷ জঙ্গিরা যা করছে তার সঙ্গে তারা যে ধর্মের কথা বলে তার কোনো সংযোগ নেই৷

বন্ধু, আপনি কি গ্রেহেম লুকাসের সঙ্গে একমত? মন্তব্য করুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য