বিলবোর্ড ব্যবসায়ীদের ঈদ মাটি
১০ আগস্ট ২০১৩বিজ্ঞাপন দাতারা বিল না দেয়ার পাশাপাশি তাদের অনেকে চুক্তি বাতিলের কথাও বলছেন৷ আর এই দখলদারিত্বের কারণে ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়ছেন৷
গত ৪ আগস্ট সকাল থেকেই ঢাকার চেহারা পাল্টে যায়৷ রাজধানীর বিলবোর্ডগুলোতে যেখানে বিভিন্ন পণ্য এবং প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন শোভা পেত সেখানে দেখা যায় সরকারের গত সাড়ে ৪ বছরের উন্নয়ন প্রচারণা৷ কিন্তু এই প্রচারণার জন্য সরকার বা আওয়ামী লীগ বিলবোর্ড বোর্ড ভাড়া নেয়নি বা মালিকদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি বলে ডয়চে ভেলেকে জানান বিলবোর্ড ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রাশেদ৷
তিনি জানান রাজধানীতে ছোট বড় মিলিয়ে এই বিলবোর্ড ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছে প্রায় ২৫০টি প্রতিষ্ঠান৷ সাধারণত যারা বিলবোর্ডে বিজ্ঞাপন দেন তারা বিলবোর্ডের মালিকদের বিল পরিশোধ করেন ঈদের আগে৷ এবার ঈদের আগেই বিলবোর্ড দখল হয়ে যাওয়ায় কোনো বিজ্ঞাপন দাতাই টাকা দেননি৷ ফলে এইসব প্রতিষ্ঠান এবং সেখানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চরম আর্থিক কষ্টে ঈদ কাটিয়েছেন৷ কারণ বিজ্ঞাপন দাতারা বিজ্ঞাপনের বিল না দেয়ায় বিলবোর্ড প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মচারীদের বেতন-বোনাস দিতে পারেনি৷ মোহাম্মদ রাশেদ জানান, শুধু তাই নয়, বিজ্ঞাপন দাতাদের কেউ কেউ চুক্তিও বাতিল করতে চাইছে৷
রাজধানীতে সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদন নেয়া এরকম বিলবোর্ড আছে চার হাজারের মতো৷ এর প্রায় সবই দখল হয়ে গেছে৷ মোহাম্মদ রাশেদ জানান ছোট বড় মিলিয়ে গড়ে একটি বিলবোর্ড থেকে তাদের বছরে আয় হয় ১২ লাখ টাকা৷ সেই হিসেবে ৪ হাজার বিলবোর্ড থেকে ব্যবসা হয় ২৪০ কোটি টাকা৷ আর তারা বিজ্ঞাপন দাতাদের সঙ্গে সাধারণত এক বছরের জন্য চুক্তি করেন৷ বিলবোর্ড দখল হয়ে যাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন বিজ্ঞাপন দাতারা৷ আর তারা পড়েছেন অসহায় অবস্থার মধ্যে, কাউকে কিছু বলতে পারছেন না৷ তাঁর মতে যদি বিলবোর্ডগুলো একমাসও এভাবে দখল করে রাখা হয় তাহলে সাধারণ হিসেবেই তারা ২০ কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়বেন৷ আর বিজ্ঞাপন দাতারা যদি চুক্তি বাতিল করেন তাহলেতো আর কথাই নেই৷
মোহাম্মদ রাশেদ বলেন সরকারের কোনোপক্ষই স্পষ্ট করে বলছেন না ঠিক কারা এই উন্নয়নের বিলবোর্ড লাগিয়েছে৷ তবে লাগানোর সময় তারা বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছেন, কাজ হয়নি৷ উল্টো তাদের কর্মচারীরা মার খেয়েছেন৷ তিনি বলেন তারা নিজেরা এসব ডিজিটাল ব্যানার সরাতে যাবেননা৷ তাতে সংঘাতের আশঙ্কা আছে৷ তবে সিটি কর্পোরেশনকে তারা বিলবোর্ড দখলের কথা জানিয়েছেন৷ সিটি কর্পোরশেনকে নির্ধারিত ফি দিয়েই তারা এসব বিলবোর্ড তৈরি করেছেন৷ আর তারা শীঘ্রই সংবাদ সম্মেলন করে দেশবাসীকে পরিস্থিতি জানাবেন৷
এদিকে আাওয়ামী লীগের তথ্য এবং গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেনের কাছে কবে বিলবোর্ড দখলমুক্ত হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা সরকারের উন্নয়ন প্রচারণা৷ আওয়ামী লীগের কোনো বিষয় নয়৷ সরকারই এ ব্যাপারে ভাল বলতে পারবে৷ তবে সরকারের কোন কর্তৃপক্ষ এই দায়িত্বে নিয়োজিত তা তিনি জানাতে পারেননি৷