বসেই ভাষণ দিলেন ম্যার্কেল
৩০ জানুয়ারি ২০১৪সম্প্রতি স্কি করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে আহত হয়েছিলেন ম্যার্কেল৷ এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন নি৷ অগত্যা বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা কঠিন কাজ৷ বিরোধী নেতা বামপন্থি দলের গ্রেগর গিসি ম্যার্কেলের ভাষণের জবাবে আক্রমণ শুরু করার আগে ঠাট্টা করে বললেন, ‘‘আমিও গত বছর স্কি করতে গিয়ে আহত হয়েছিলাম৷ এবার আমাদের বয়স অনুযায়ী খেলাধুলা করা উচিত, কী বলেন!''
এবারের বুন্ডেসটাগ-এ বিরোধী পক্ষ বড়ই ছোট৷ দুই বড় দলের মহাজোট সরকারের সাংসদদের পাল্লা এতটাই ভারি, যে বিরোধীদের কণ্ঠ বেশ ক্ষীণ হয়ে যায়৷ এমন পরিবেশে ম্যার্কেলের কথায় সায় দেয়ার মানুষই বেশি৷ তার উপর পরিবেশ সংরক্ষণ থেকে শুরু করে সামাজিক ন্যায়ের মতো সব বিষয়কে তিনি নিজেই এতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন, যে বাকি দলগুলির বহুকালের একচেটিয়া বিষয়গুলি কেমন যেন হাতছাড়া হয়ে গেছে৷
তৃতীয় বারের মতো চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পেয়ে নিজের সরকারের অতীত সাফল্যে সন্তুষ্ট ম্যার্কেল৷ তবে ঢিলেঢালা মনোভাবের বদলে আগামী কয়েক বছরে আরও সংস্কারে মনোযোগ দিতে চান তিনি৷ আত্মতুষ্টির কোনো জায়গা দেখছেন না ম্যার্কেল৷ ইউরোপে আর্থিক সংকট সত্ত্বেও জার্মানির অবস্থা বেশ ভালো৷ এই কৃতিত্বের বড় দাবিদার হতে পারেন ম্যার্কেল নিজেই৷ কিন্তু তাঁর মতে, বিপদ এখনো পুরোপুরি কাটেনি৷ ইউরোপীয় স্তরে আরও সমন্বয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যতে এমন সংকট এড়ানোর লক্ষ্যে অটল রয়েছে তাঁর সরকার৷ যারা মুনাফার মাত্রাতিরিক্ত লোভে বাজারে টাকা খাটিয়ে লোকসান করে, ভবিষ্যতে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে জনগণের অর্থে হাত দেয়া যাবে না, বলেন তিনি৷
ম্যার্কেল নিজে এনএসএ কেলেঙ্কারির শিকার হয়েছেন, তাঁর মোবাইল ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে৷ তাই অস্বাভাবিক কড়া ভাষায় এমন নীতির সমালোচনা করেন তিনি৷ আস্থাভঙ্গের ফলে ভবিষ্যতে নিরাপত্তা বাড়ার বদলে আরও কমে যেতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেন ম্যার্কেল৷
২০৫০ সালের মধ্যে জার্মানির প্রায় ৮০ শতাংশ চাহিদা মেটাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি৷ এমন অভিনব ও উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার উল্লেখ করে ম্যার্কেল এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরেন৷ তাঁর মতে, এই কাজের সাফল্যের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে জার্মানির ব্যবসায়িক সাফল্যও৷ তখন গোটা বিশ্বে এই প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে জার্মানির আরও বেশি ডাক পড়বে৷
অভ্যন্তরীণ নীতির ক্ষেত্রেও অবিচল রয়েছেন ম্যার্কেল৷ নতুন কর না চাপিয়ে রাজকোষের অর্থ দায়িত্বশীলভাবে ব্যয় করতে চান তিনি৷ অবসর ভাতা সহ জনকল্যাণমূলক সব ক্ষেত্রেই সরকারের শক্তিশালী ভূমিকা দেখছেন তিনি৷
এসবি / এসিবি (ডিপিএ)