1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

২০২২: আশাবাদী ইন্দোনেশীয়রা, নিরাশ আফগানেরা

৩১ ডিসেম্বর ২০২১

বিশ্বের ৩৮ শতাংশ মানুষ মনে করেন ২০২২ সাল বিদায়ী বছরের চেয়ে ভালো কাটবে৷ ২৮ শতাংশ আরো খারাপ একটি বছরের আশঙ্কা করছেন৷ বিশ্বখ্যাত জরিপ প্রতিষ্ঠান গ্যালাপ ইন্টারন্যাশনালের জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে৷ 

https://p.dw.com/p/451eT
Deutschland Emotion Glück l Symbolbild - Smiley
ছবি: picture alliance/dpa/M. Schutt

নতুন বছর কতটা ভালো কাটবে? কতটা আশাবাদী বিভিন্ন দেশের মানুষ? বিশ্বখ্যাত জরিপ প্রতিষ্ঠান গ্যালাপ ইন্টারন্যাশনাল প্রতিবছরই তা নিয়ে জরিপ করে৷

এবার জরিপে অংশ নিয়েছেন ৪৪টি দেশের মানুষ৷ তারমধ্যে ২০২২ সাল নিয়ে সবচেয়ে আশাবাদী ইন্দোনেশীয়ারা৷ দেশটির ৭৬ শতাংশ নাগরিকই বিগত বছরের চেয়ে নতুন বছর ভালো কাটবে বলে প্রত্যাশা করছেন৷ প্রথম পাঁচে ইন্দোনেশিয়ার পরে রয়েছে আলবেনিয়া (৭০%), নাইজেরিয়া (৬৮%), আজারবাইজান (৬২%) ও ভিয়েতনাম (৫৯%)৷

অন্যদিকে নতুন বছর নিয়ে সবচেয়ে নিরাশ আফগানরা৷ দেশটির ৫৬ শতাংশ মানুষই আরো একটি খারাপ বছরের আশঙ্কা করছেন৷ তাদের পরে রয়েছে তুরস্ক (৫৬%), বুলগেরিয়া (৪৮%), পোল্যান্ড (৪৭%), চেক রিপাবলিক (৪৫%) ও পাকিস্তান (৪১%)৷

গ্যালাপ তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরগুলোকে একত্রিত করে স্কোরের ভিত্তিতে হোপ ইনডেক্স বা আশা সূচকও তৈরি করেছে৷ তাতেও ইন্দোনেশিয়ানরাই (+৭২) বিশ্বের সবচেয়ে আশাবাদী মানুষ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন৷ তারপরে রয়েছেন আলবেনিয়া (৬৫+), আজারবাইজান (+৫৩), নাইজেরিয়া (+৫১), মেক্সিকো (+৪৭) ও ভিয়েতনামের (+৪৭) জনগণ৷

অন্যদিকে সবচেয়ে হতাশাগ্রস্ত তুরস্ক (-৩৪), বুলগেরিয়া (-৩৪), আফগানিস্তান (-৩২), পোল্যান্ড (-৩০) ও চেক রিপাবলিকের (-২৫) মানুষ৷

‘আমরা আমাদের ভবিষ্যত জানি না'

এই জরিপ নিয়ে ডয়চে ভেলেকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন গ্যালাপ ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট কানচো স্টয়চেভ৷ গ্যালাপ ভবিষ্যৎ নিয়ে জরিপ করলেও তার মতে, ‘‘আমরা শুধু একটা বিষয়ই নিশ্চিত করে বলতে পারি আর তা হলো আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ জানতে পারি না, যদিও আমরা অনেকসময় মনে করি যে আমরা সেটা পারি৷''

২০২১ সাল যে সংকটের মধ্য দিয়ে গেছে এবারে জরিপে তার ছাপ পড়েছে বলে মনে করেন তিনি৷ কানচো বলেন, ‘‘বৈশ্বিক জনমত অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও আরো ঘনীভূত সংকটের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন৷ এ বিষয়টি বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে ইউরোপে, বিশেষ করে পূর্ব ইউরোপে৷ সেখানে দুই তৃতীয়াংশ মানুষই খারাপ কিছুর আশঙ্কা করছেন৷ ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক পর্যায়ে অভূর্তপূর্ব অর্থনৈতিক প্রণোদনায় গত বছরটি তাদের জন্য ইতিবাচক ছিল, অন্য কথায় মানুষের নৈরাশ্যকে সীমিত পরিসরে আটকে রাখতে পেরেছিল৷ কিন্তু (জরিপের ফলাফলে) মনে হচ্ছে আরো খারাপ সময়ের এখনও বাকি আছে৷''

গ্যালাপ গত ৪০ বছর ধরে বিশ্বের সুখী দেশ নির্বাচন করে আসছে৷ সাধারণত সম্পদশালী দেশগুলোর মানুষকে সুখী মনে করা হলেও তাদের জরিপে ভিন্ন চিত্র উঠে আসে৷  কানচো বলেন, ‘‘ধনী বা সবচেয়ে উন্নত দেশের তালিকায় সুখী দেশ নেই৷ এই বছর যেমন কলম্বিয়া প্রথম হয়েছে৷ সাধারণত যেসব দেশে তরুণ জনগোষ্ঠী বেশি তারাই এই র্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকে৷ ধনী দেশগুলোতে সাধারত বয়স্ক আর অসুখী মানুষ বেশি৷'' তিনি মনে করেন মানুষ সুখী হবে কীনা সেটি কেবল সম্পদ দিয়ে বিবেচনা করা যায় না৷ দেশভেদে সংস্কৃতি, মানসিকতা এবং ঐতিহ্য ও সংস্কারের পার্থক্যের উপরও নির্ভর করে কারা বেশি আর কারা কম সুখী৷

গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার জার্মানরা নতুন বছর নিয়ে কম আশাবাদী৷ দেশটির মাত্র ৩২ শতাংশ মানুষ ২০২২ সাল নিয়ে ইতিবাচক৷ জনগণের ব্যক্তিগত সুখের দিক থেকে তাদের অবস্থান জাপান, যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশগুলোর নীচে৷ এ বিষয়ে কানচো বলেন, ‘‘জরিপ থেকে যা দেখা যাচ্ছে, জার্মানরা কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিরক্ত, ক্লান্ত এবং আত্মবিশ্বাসী নন৷ লকডাউন, টিকা, নতুন সরকারের গঠন প্রক্রিয়ার অনিশ্চয়তা, ইউরোপের ধীরগতি, রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে পশ্চিমের বিরোধ এর কারণ হতে পারে৷''

তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে জরিপ পরিচালনার মাধ্যমে গ্যালাপ মানুষের ব্যক্তিগত অভিব্যাক্তি বা পছন্দ-অপছন্দ জানার চেষ্টা করে না, বরং জনগণের ভাবনা তুলে আনার চেষ্টা করে৷

ক্রিস্টোফর নেহরিং/এফএস