১৩০ বছরে আইফেল টাওয়ার
১৩০ বছর আগে যখন নির্মাণ করা হয় তখন এর বিরুদ্ধে ফরাসি মানুষ বিক্ষোভও করেছিলেন৷ কিন্তু সেই কাঠামোই পরিণত হয়েছে প্যারিসের আইকনে৷
পর্যটকদের চুম্বকাকর্ষণ
৩১ মার্চ, ১৮৮৯ সাল থেকে প্যারিসের শঁ দ্য মার-এর উত্তর পশ্চিমে দাঁড়িয়ে গগনচুম্বী স্থাপনাটি৷ বছরে ৭০ লাখ দর্শনার্থীকে নিজের কাছে টেনে আনে আইফেল টাওয়ার, যা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পর্যটকদের পাড়ি জমানো গন্তব্য৷
কুড়ি বছরের জন্য
যখন উদ্বোধন করা হয় তখন ৩০০ মিটার উচ্চতার আইফেল টাওয়ারই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু স্থাপনা৷ ১৮৮৯ সালে প্যারিসে আয়োজিত বিশ্ব বাণিজ্য মেলার প্রবেশদ্বার হিসেবে এটি তৈরি করা হয়েছিল৷ কথা ছিল ২০ বছর পর তা ভেঙে ফেলা হবে৷ কিন্তু চূড়ায় সামরিক বেতার যন্ত্র আর একটি আবহাওয়া স্টেশন স্থাপন করায় সেই পরিকল্পনা বাদ যায়৷
নকশাকারের গাঁটের পয়সায়
আইফেল টাওয়ারের নামকরণ হয়েছে এর নকশাকার ও প্রকৌশলী গুস্তাভ আইফেলের নামে৷ এটি বানানোর মোট ৭৮ লাখ ফ্রাঙ্ক খরচের বড় অংশটাই তিনি নিজের পকেট থেকে দিয়েছেন৷ এমনকি সময়মত কাজ শেষ করার জন্য নিজের সম্পত্তি বন্ধকও রেখেছিলেন তিনি৷ যদিও পর্যটকের ঢলে বছরের মাথায়ই তাঁর টাকা উঠে আসে৷
গোলকধাঁধা
১৮ হাজার লৌহ খণ্ড, ২৫ লাখ গজাল দিয়ে ১০ হাজার ১০ টন ওজনের এই কাঠামো তৈরি৷ প্রতি সাত বছরের মাথায় এটিকে একবার রং করতে হয়৷ এই কাজে প্রায় দেড় বছর সময় লাগে৷ ২ লাখ ৫০ হাজার বর্গমিটারের পৃষ্ঠতলটি হাতে ধরে রং করা কম কথা তো নয়!
শিল্পীদের চক্ষুশূল
আইফেল টাওয়ার নির্মাণে দুই বছর দুই মাস সময় লাগে৷ নির্মাণের পর এর আকৃতি নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন ফ্রান্সের শিল্পীরা৷ তাঁদের মতে এটি দেখতে প্যারিসের উপর জেঁকে থাকা কারখানার দানবাকৃতির এক চিমনির মতো৷ এ নিয়ে বিক্ষোভও হয়েছিল৷ তবে উদ্বোধনের পরই তা থেমে যায়৷
পরিণত হলো আইকনে
২০ হাজার বাতিতে প্রতি রাতে জ্বলে ওঠে জগদ্বিখ্যাত টাওয়ারটি৷ জাতীয় দিবস, ফরাসি গায়ক জুনি আলিডে’র মৃত্যুবার্ষিকীসহ বিশেষ দিনগুলোতে আলোর তীব্রতাও বাড়ে৷ এটি এখন ফ্রান্সেরই জাতীয় আইকন৷
আইফেল টাওয়ার জয়
ফরাসি ইউগে রিসার মতো বাইকার, পর্বতারোহী, মোটরসাইক্লিস্টসহ রোমাঞ্চপ্রিয় মানুষেরা আইফেল টাওয়ারকে বেছে নিয়েছিলেন রেকর্ড গড়া চ্যালেঞ্জ হিসেবে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীতে ১৯৪৮ সালে ৮৫ বছরের এক হাতিও চড়েছে আইফেল টাওয়ারে৷
প্যারিসের রূপ
আইফেল টাওয়ারের চূড়া থেকে পাখির চোখে প্যারিসের দেখা মেলে৷ সেই সৌন্দর্য্য উপভোগের জন্য সিঁড়ির ১,৭০০ ধাপ পেরিয়ে শীর্ষে পৌঁছান পর্যটকরা৷ অবশ্য ৫টি এলিভেটরে চড়তেও ভিড় করেন অনেকে৷
আইফেল টাওয়ার ছাড়া প্যারিস!
সূর্যাস্তের সময় ফ্রান্সের ডিপার্টমেন্ট স্টোর প্র্যাঁতঁ থেকে আইফেল টাওয়ারের যে অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায় তা তুলনাহীন৷ এই টাওয়ারটি ছাড়া প্যারিসের কথা ভাবুনতো একবার৷ ১৩০ বছর পর তা কী করে সম্ভব!