হেরোইনের আগ্রাসন রুখতে মরিয়া মেক্সিকো
মেক্সিকোর পাহাড়ি এলাকার গভীর জঙ্গল ছেয়ে গেছে গোলাপি রঙের পপি গাছে৷ অবৈধ পপির চাষ এতটাই বেড়েছে, এখন আর আগের মতো লাভও করতে পারছেন না৷ বাধ্য হয়ে পপি উৎপাদন বন্ধে ব্যাপক অভিযানে নেমেছে দেশটির সেনাবাহিনী৷
দুর্গম পাহাড়, পপির অভয়ারণ্য
মেক্সিকোর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সিয়েরা অঞ্চল যেন পপিচাষীদের অভয়ারণ্য৷ দুর্গম পাহাড়ী এলাকা আর ঘন অরণ্য, অবৈধ পপির চাষের জন্য স্বর্গরাজ্য৷ মানুষের চোখের আড়ালে খুব সহজেই এখানে চাষ করা যায় পপি৷
অন্য শস্যের আড়াল
মাঝে মাঝে পপিক্ষেত লোকচক্ষুর আড়ালে রাখার জন্য অন্য নানারকম শস্য, যেমন ভুট্টার চাষ করা হয়৷ সরকারও পপি চাষীদের বৈধ শস্য চাষের জন্য নানা সহায়তা করে থাকে৷ কিন্তু পাহাড়ের পাথুরে ঢালে পাতলা মাটির আস্তরণে অন্য কোনো শস্যই তেমন ভালো হয় না৷
পপি চাষের কেন্দ্র
গুয়েরেরো রাজ্যের দরিদ্র পাহাড়ি জেলাগুলোতে অবৈধ পপির চাষ হয় সবচেয়ে বেশি৷ এর মধ্যে এগিয়ে আছে মার্কিন সীমান্ত থেকে ৮০০ মাইল দূরে অবস্থিত হুকিলা ইউকুচানি জেলা৷ দেশটিতে অপরাধের হারও সবচেয়ে বেশি গুয়েরেরো রাজ্যেই৷
পপি বীজে সয়লাব বাজার
চাষ, সরবরাহ, বাজারজাতকরণ, সবকিছুই আইনত দণ্ডণীয় হলেও অনেকটা প্রশাসনের নাকের ডগাতেই চলে পপি বীজের কেনাবেচা৷
বাড়িতেও পপি গাছ
এখন আর অনেক ক্ষেত্রে তেমন রাখঢাকেরও প্রয়োজন দেখছেন না পপি চাষীরা৷ কেউ কেউ কষ্ট করে পাহাড়ের ঢালে লুকিয়ে চাষ না করে নিজের বাড়ির উঠানেই বুনছেন গাছ৷
সেনা অভিযান
পপি এবং এ থেকে উৎপাদিত আফিম ও হেরোইনের দৌরাত্ম কমাতে এবার জোরেসোরে মাঠে নেমেছে মেক্সিকোর সেনাবাহিনী৷ দুর্গম পাহাড়ি এলাকাতেও চলছে বিশেষ অভিযান৷
গাছ কেটে সাফ
পাহাড়ে ভাঁজে ভাঁজে তল্লাশি চালিয়ে লুকিয়ে রাখা পপিক্ষেত খুঁজে বের করছেন সেনারা৷ তারপর সেগুলে কেটে কেটে এক জায়গায় জড়ো করা হচ্ছে৷
লক্ষ্য– চিরতরে নির্মূল
শুধু পপি গাছ কেটেই নিরস্ত হচ্ছেন না সৈনিকরা৷ পরবর্তীতে গাছের বীজ থেকে যাতে চাষীরা আবার বীজ উৎপাদন করতে না পারেন, সেজন্য জড়ো করা গেছে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে আগুন৷
অসহায় চাষীরাও
দুর্গম এ পাহাড়ি এলাকায় যারা থাকেন, তাঁদের জন্য নেই পর্যাপ্ত নাগরিক কোনো সুযোগ-সুবিধা৷ সবচেয়ে কাছের হাসপাতাল বা স্কুলও কয়েক ঘণ্টার পথ৷ ফলে, ভবিষ্যতের চিন্তায় উদ্বিগ্ন পপি চাষীদের অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও ভাবছেন সীমানা পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার কথা৷