হেগ শহরে মিয়ানমারের পক্ষে-বিপক্ষে প্রতিবাদ

মিয়ানমারের জনগণ এই বিচারকে দেখছে দেশটির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে৷ আদালতের বাইরে দেশটির সমর্থকরা তাই জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান৷ এক নারী তেমনই এক স্লোগান সম্বলিত স্টিকার লাগিয়েছেন তার গালে৷

আদালতের বাইরে মানববন্ধন করেছেন মিয়ানমারের সমর্থকরা৷ সুচির ছবিসহ বিশাল ব্যানার হাতে প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায় তাদের৷ যেখানে লেখা ছিল, ‘আমরা স্টেইট কাউন্সিলরকে সমর্থন করি’৷

মিয়ানমারের সমর্থকরা দেশটির নেত্রী অং সান সুচির পোস্টার নিয়ে হাজির হয়েছেন৷ সেখানে লেখা, ‘আমরা তোমার সাথে আছি’৷

সুচির সমর্থকদের মধ্যে খাবার বিতরণ করতে দেখা যায় কয়েকজনকে৷ সেখানে বসবাসরত একজন বার্মিজ এই খাবার সরবরাহ করেছেন বলে জানিয়েছেন তারা৷

রাখাইনে সহিংসতার কথা স্বীকার করলেও একে কোনোভাবেই গণহত্যা বলা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন সুচি৷ আদালতের বাইরে অবস্থান নেয়া মিয়ানমারের সমর্থকরাও তেমনটাই মনে করে৷

ট্রাকে বিশাল এক ব্যানার৷ তার বেশিরভাগটা জুড়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রধানের ছবি৷ এক পাশে লেখা, ‘রোহিঙ্গাদের গণহত্যার জন্য সন্ধান চাই’৷ ব্যানারের নীচে রয়েছে সেনাবাহিনীর অন্য উচ্চপদস্থদের নাম৷ এভাবেই প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউরোপীয় বসবাসরত রোহিঙ্গাদের সংগঠন দ্য ইউরোপিয়ান রোহিঙ্গা কাউন্সিল৷

মিয়ানমারের গণহত্যা থামানোর আহবান নিয়ে হাজির হয়েছেন ইউরোপে বসবাসরত এই রোহিঙ্গারা৷ আদালত ভবনের বাইরে তাদের স্লোগান দিতেও দেখা যায় ৷

এরা এসেছেন আরাকার রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন নামের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে৷ ‘যুদ্ধাপরাধীদের’ পক্ষে না দাড়াতে সুচির প্রতি আহবান জানিয়েছেন তারা৷ মামলা করার জন্য ধন্যবাদ জানান গাম্বিয়ার প্রতিও৷ দেশটির ৭০ বছরের সামরিক আগ্রাসন বন্ধেরও দাবি তুলে ধরেছেন একজন৷

মিয়ানমারে শুধু রোহিঙ্গা নয় নির্যাতিত হচ্ছে অন্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোও৷ তেমনই একটি কারেন৷ এই সম্প্রদায়ের মানুষেরাও দ্য হেগের আদালতের সামনে এসেছেন কারেনদের জন্য বিচার চাইতে৷

বাবা মায়ের সাথে এই দুই শিশুও এসেছে রোহিঙ্গাদের উপর চালানো নির্যাতনের ন্যয়বিচার চাইতে৷ তাদের একজনের পোস্টারে লেখা ‘বিচার অনিবার্য, এর বিকল্প নেই৷’ আরেক শিশুর হাতে ছিল মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের ছবি৷ যাতে লেখা, ‘ওয়ান্টেড’৷

ইউরোপের অনেক প্রবাসী বাংলাদেশিরাও হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের সামনে জড়ো হয়েছেন মিয়ানমারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে৷ তাদের সঙ্গে ছিল বাংলাদেশের পতাকা৷

এই তরুণীরা এসেছেন বিচার, জবাবদিহি, সাম্য আর শান্তির দাবি নিয়ে৷ তারা প্রদর্শন করেছেন আরাকান আর্মির পতাকা৷

শুনানিটি যেই ভবনে চলছে তার নাম পিস হাউস৷ মূল ফটকের বাইরে নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল পুলিশ বাহিনী৷