হিরোশিমাকে স্মরণ করছে সারা বিশ্ব
৬ আগস্ট ২০১০না, ছোট কোন বাচ্চা ছেলে ছিল না সেটি৷ পৃথিবীর প্রথম আণবিক বোমা, যেটি আঘাত হেনেছিল কোন মানব বসতিতে৷ মাটিতে আঘাত হানার সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ৷ একের পর এক শক ওয়েভ বয়ে গেল গোটা হিরোশিমা নগরীতে৷ মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে গেল গোটা নগরীর বাড়ি ঘর, দালান কোঠা৷ আণবিক বোমার তেজস্ক্রিয়তায় সঙ্গে সঙ্গেই মারা পড়লো লাখ খানেক মানুষ৷ হিরোশিমার সাড়ে তিন লাখের মধ্যে এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ প্রাণ হারালো৷ এরপর এই বোমার তেজস্ক্রিয়তার শিকার হয়ে আরও মারা গেলো ৭০ হাজার মানুষ৷ বিকলাঙ্গ হয়ে পড়ে লক্ষাধিক৷
আণবিক বোমাটির তেজস্ক্রিয়তা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে বহু বছর পরও সেখানে গাছপালা উদ্ভিদ জন্মেনি৷ বোমার শিকার জাপানি নাগরিকদের সন্তান হতো বিকলাঙ্গ৷ হিরোশিমাতে আণবিক বোমা ফেলার তিন দিন পর নাগাসাকিতে আবারও আণবিক বোমা বর্ষণ করে যুক্তরাষ্ট্র৷ সেখানেও আরেক হিরোশিমার পুনরাবৃত্তি ঘটে৷ মানব ইতিহাসে এর চেয়ে নিষ্ঠুরতা আর কখনো হয়েছে কিনা বলা যায় না৷
এরপর থেকেই প্রতি বছর পালিত হয়ে আসছে হিরোশিমা দিবস৷ আজ ৬৫তম হিরোশিমা দিবস পালন করছে জাপান৷ তাদের সঙ্গে দিবসটি স্মরণ করছে গোটা বিশ্ববাসী৷ স্থানীয় সময় সকাল সোয়া আটটায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়৷ এরপর উড়িয়ে দেওয়া হয় শান্তির কপোত৷
তবে এবারের দিবসটি একটু ভিন্ন রকম৷ এতদিন ধরে এই দিবসে উপস্থিত থাকতো না যুক্তরাষ্ট্রসহ পারমাণবিক শক্তিধর কোন দেশের প্রতিনিধি৷ কিন্তু এই প্রথমবারের মত দিবসটির স্মরণ অনুষ্ঠানে প্রতিনিধি পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷ তাদের সঙ্গে রয়েছে ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের প্রতিনিধিও৷ সেই দিকেই ইঙ্গিত করে এক বক্তব্যে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বলেছেন, আমরা দেখছি শক্তিশালী দেশগুলোর পক্ষ থেকে প্রতিনিধি রয়েছেন৷ আমাদের অবশ্যই এই মুহূর্তটিকে ধরে রাখতে হবে৷ জাপানের প্রধানমন্ত্রী নাওতো কান বলেছেন, জাপান পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে চায়৷ উল্লেখ্য, জাপান পরমাণু অস্ত্র নিজের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই