হিটলারের নকল ডায়েরি প্রকাশের ৩০ বছর
১৯৮৩ সালের ২৫ এপ্রিল জার্মানির হামবুর্গে এক সংবাদ সম্মেলনে হিটলারের ডায়েরি পাওয়া যাওয়ার খবর দেয়া হয়৷ পরে যেটা নকল বলে প্রমাণিত হয়৷
সংবাদ সম্মেলন ডেকে ডায়েরি প্রকাশ
১৯৮৩ সালের ২৫ এপ্রিল জার্মানির হামবুর্গে একটি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন সাংবাদিক গের্ড হাইডেমান৷ সেখানে সারা বিশ্ব থেকে যাওয়া সাংবাদিকদের সামনে তিনি হিটলারের হাতে লেখা একটি ডায়েরি উপস্থাপন করেন৷ পরবর্তীতে যেটা নকল বলে প্রমাণিত হয়৷
‘বড় গল্পের সন্ধান’
গের্ড হাইডেমান ছিলেন একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক৷ যখন তাঁর কাছে নকল ডায়েরিটা নিয়ে যাওয়া হয় তখন তিনি সেটা দিয়ে বড় ব্যবসা করার পরিকল্পনা করেন৷
সংবাদ সম্মেলনে বিশেষজ্ঞের উপস্থিতি
হিটলারের ডায়েরিকে আসল প্রমাণ করতে হামবুর্গের সংবাদ সম্মেলনে ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ ও হিটলার বিশেষজ্ঞ হিউ ট্রেভর-রোপার ও মার্কিন ইতিহাসবিদ গেরহার্ড লুডভিগ ভাইনবের্গকে হাজির করা হয়েছিল৷
নকল প্রমাণিত
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করার মাত্র ১১ দিনের মাথায় সেটা নকল বলে খবর প্রকাশ করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম৷ সরকারের দুটো মন্ত্রণালয় প্রমাণ করে দেখায় যে, ঐ ডায়েরি বাঁধাই করতে যে উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে সেটা তৈরিই হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর৷
যিনি নকল করেছেন
ইনি হলেন কনরাড কুয়াও৷ তাঁকে দিয়েই হিটলারের হাতের লেখা নকল করে ডায়েরিটা বানানো হয়েছিল৷ এ জন্য কুয়াওকে মোটা অংকের টাকা দেয়া হয়৷
কারাভোগ
ধরা পড়ার পর বিচার প্রক্রিয়া শেষে হাইডেমানকে চার বছর আট মাস আর কুয়াওকে চার বছর ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়৷
মঞ্চনাটক
এই ঘটনা নিয়ে ১৯৯২ সালে জার্মানিতে একটি হাস্যরসাত্মক মঞ্চনাটক হয়েছে৷ ছবিতে তার একটি দৃশ্য দেখা যাচ্ছে৷
‘জনপ্রিয়তা’ অর্জন
গলায় ক্যান্সারের কারণে কুয়াওকে মাত্র তিন বছর জেল খাটতে হয়েছে৷ হিটলারের ডায়েরি নকলের ঘটনায় পাওয়া ‘জনপ্রিয়তা’-কে কাজে লাগিয়ে পরবর্তীতে তিনি একটি দোকান খোলেন যেখানে তিনি ‘আসল কুয়াও-নকল’ ছবি বিক্রি করতেন৷ ২০০০ সালে তিনি মারা যান৷
হাইডেমানের করুণ দশা
নকল ডায়েরি ঘটনার কারণে হাইডেমানের সাংবাদিক জীবন শেষ হয়ে যায়৷ বর্তমানে ৮১ বছর বয়সি হাইডেমান হামবুর্গে অনেকটা দরিদ্র জীবনযাপন করছেন৷