1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হাসপাতালে শ্বাসকষ্টের শিশু রোগী বাড়ছে

২৬ ডিসেম্বর ২০২০

শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে হাসপাতালে শ্বাসকষ্টে ভোগা শিশু রোগী বাড়ছে৷ তারা সবাই করোনা আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত নয়৷ তবে এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হওয়ার আহবান জানিয়েছেন চিকিৎসকরা৷

https://p.dw.com/p/3nEpX
সাম্প্রতিক ছবিছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images

বিশেষায়িত হাসপাতাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন হাসপাতালের শিশু ইউনিটগুলোতে রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে৷ কোভিড পরবর্তী মারাত্মক জটিলতা নিয়েও ভর্তি হচ্ছে শিশুরা৷ এরমধ্যে অনেকে করোনার নতুন ধরনে (স্ট্রেইন) আক্রান্ত হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন কোন কোন চিকিৎসক৷

ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ শফি আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের বর্হিবিভাগে এখন প্রচুর শ্বাসকষ্টের শিশু রোগী আসছে৷ তাদের সবাইকে আমরা পরীক্ষার আওতায় আনতে পারছি না৷ আমাদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে৷ তবে আমরা যাদের মনে করছি পরীক্ষা করা দরকার তাদের পরীক্ষা করছি৷ সেখানেও অনেক করোনা রোগী ধরা পড়ছে৷ অধিকাংশই শিশুদের পরীক্ষা না করে নিয়ে যাচ্ছেন৷ শ্বাসকষ্টের সাধারণ চিকিৎসায় এসব শিশু সুস্থ্য হয়ে ওঠায় তাদের আর পরীক্ষা করা লাগছে না৷’’

ডা. ইফফাত আরা শামসাদ

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে, এখন পর্যন্ত করোনাতে ১০ বছরের কম বয়সী শিশু মারা গেছে ৩৪ জন৷ আর ১১ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে মারা গেছে ৫৭ জন৷ করোনাতে আক্রান্ত শিশুদের জন্য প্রথম করোনা ইউনিট করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল৷ সেখানে এখন ২৪ জন রোগী আছে৷ শিশু হাসপাতালের করোনা ইউনিটেও তিন শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে৷ তবে এ মাসের শুরুতে সেখানে ১৮ শিশু চিকিৎসাধীন ছিল৷

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের অধ্যাপক ডা. ইফফাত আরা শামসাদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এখন নানা ধরনের সমস্যা নিয়ে অনেক শিশু হাসপাতালে আসছে৷ এদের অনেকের সমস্যা এতটাই গুরুতর যে, করোনা পরীক্ষা করার সময়ই পাওয়া যায় না৷ একটা শিশু হাসপাতালে এলে আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তার প্রাণ বাঁচানো৷ ফলে আমরা আগে তার চিকিৎসা শুরু করি৷ এরপর প্রয়োজন মনে করলে করোনা পরীক্ষা করাই৷ সেখানে পজিটিভ এলে করোনা ইউনিটে তাকে স্থানান্তর করা হয়৷ তবে শিশু রোগীর হার এখনো কমেনি৷ এখন নতুন করে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে পোস্ট কোভিড জটিলতা-মাল্টিসিস্টেম ইনফেমেটরি সিন্ড্রোম ইন চিলড্রেন-এ (এমআইএস-সি)৷ এটা শিশুদের জন্য খুবই মারাত্মক৷’’

চিকিৎসকরা বলছেন, নয় থেকে ১২ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে আতঙ্কের খবর হচ্ছে, এ বয়সের শিশুরা আক্রান্ত হলে তাদের ফুসফুসও সংক্রমিত হচ্ছে৷ তাই বাবা-মায়েদের জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে নিতান্তই প্রয়োজন না হলে সন্তানকে বাইরে বের না করা, জনসমাগমে না নেওয়া আর অবশ্যই মাস্ক পরানো৷ তবে শ্বাসকষ্টে ভোগা এবং শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের মাস্ক না পরানোর পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ এসব সন্তানের প্রতি নিতে হবে বাড়তি যত্ন৷ তারা বাইরে গেলেও জনসমাগমে যেতে পারবে না৷

ডা. নওশাদ উদ্দিন আহমেদ

ঢাকা শিশু হাসপাতালের করোনা ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক ডা. নওশাদ উদ্দিন আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের হাসপাতালে এ পর্যন্ত করোনা ইউনিটে ১৯০ থেকে ২০০ জনের মতো শিশুর চিকিৎসা দিয়েছি৷ এর মধ্যে মৃত্যুও হয়েছে৷ তবে তাদের করোনার আগে থেকেই অন্য রোগ ছিল৷ বিশেষ করে ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশু করোনা হলে বাঁচানো কঠিন৷ গত বছরের এই সময় আমরা প্রতিদিন শ্বাসকষ্টের রোগী পেয়েছি ১৩০ থেকে ১৪০ জন৷ এবার সেখানে আড়াইশ রোগী পার হয়ে গেছে৷ সবার পরীক্ষা করতে না পারার কারণে বোঝা যাচ্ছে না, এরা কোভিড না নন-কোভিড৷ তবে অভিভাবকদের এক্ষুনি সতর্ক হতে হবে৷’’

বাংলাদেশ শিশু চিকিৎসক সমিতির সভাপতি প্রবীণ অধ্যাপক ডা. মনজুর হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এখন কিন্তু করোনার নতুন ধরনে (নিউ স্ট্রেইন) আমাদের শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে৷ অন্যদিকে শিশুদের জন্য কোন ধরনের ভ্যাকসিনের ট্রায়েলের কথা আমরা শুনিনি৷ তার অর্থ হল শিশুদের জন্য ভ্যাকসিন কবে আসবে কেউ জানে না৷ যে ভ্যাকসিন আসছে সেটা বড়দের জন্য৷ ফলে সামনের দিনে শিশুরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়তে যাচ্ছে৷ ফলে শিশুদের সুরক্ষা ছাড়া অন্য কোন বিকল্প আমাদের হাতে নেই৷ আবার শিশুরা যেহেতু খুব বেশি ঘর থেকে বের হচ্ছে না, ফলে তাদের বাইরে থেকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম৷ পরিবারের বয়স্কদের কাছ থেকেই তারা আক্রান্ত হচ্ছে৷ তারপরও যদি কোন শিশু বাইরে যায় তাহলে মাস্ক পরা, ভিড়ে না যাওয়া, হাত ধোয়ার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে৷ বড়দেরও সতর্ক হতে হবে৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য