হামলার স্মৃতি নিয়ে দেশে ফিরল শ্রীলংকার খেলোয়াড়রা
৪ মার্চ ২০০৯দেশে ফিরেই মুরালীধরণ বললেন, আমার চোখে এখনো সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্যটি ভাসছে৷ রাশি রাশি গুলি আমাদের দিকে ছুটে আসছে৷ ভাবছিলাম এটা কি হচ্ছে? এখন কেবল একটিই আনন্দ যে দেশে ফিরে আসতে পেরেছি৷ অধিনায়ক মহেলা জয়াবর্ধনে বললেন, সে সময় ভাবতেই পারিনি আমরা আবার দেশে ফিরে আসতে পারবো৷
কলম্বো বিমান বন্দরে খেলোয়াড়দের স্বাগত জানান সে দেশের ক্রীড়া মন্ত্রী৷ ২৫ সদস্যের দলটির সঙ্গে আছেন গুরুতর আহত দুই খেলোয়াড় থিলান সামারাভিরা এবং থারাঙ্গা প্রানাভিতানা৷ বিমান বন্দরে পৌঁছানোর পরই এই দুইজনকে সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় একটি বেসরকারী হাসপাতালে৷ গত মঙ্গলবারের লাহোরের হামলায় শ্রীলংকার সাত খেলোয়াড় এবং এক সহকারী কোচ আহত হন৷ ঘটনাস্থলেই ছয় পাকিস্তানী পুলিশসহ মারা যায় আটজন৷ কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারে এমন অভিযোগে অন্তত ২৪ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে৷
এদিকে, এই ঘটনার চুলচেরা বিশ্লেষণে বিশেষজ্ঞরা বলেই দিলেন লাহোরে শ্রীলংকান ক্রিকেট টিমের উপর হামলা ইসলামী জঙ্গীদের হুমকি৷ আর এটি পাকিস্তান সরকারের দূর্বলতাকেই প্রকাশ করে৷ দিনেদুপুরে লাহোরের মত ব্যস্ততম এক শহরে সংঘবদ্ধভাবে বিদেশী খেলোয়াড়দের উপর হামলা প্রমাণ করে দেশের কোথাও কেউ নিরাপদ নয়৷ এইচ নাইয়ার, যিনি ইসলামাবাদের সাসটেনেবল ডেভলপমেন্ট পলিসি নামের একটি প্রধানের একজন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তিনি আরও বললেন, নিরাপত্তা সংস্থাগুলো নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে৷ ইসলামী জঙ্গী এবং উগ্রপন্থিরা এখন রাষ্ট্রের জন্য হুমকি৷ আমাদের জন্য এই পরিস্থিতি খুবই ভয়ঙ্কর৷এই ঘটনার জন্য তালেবান জঙ্গীদেরই দায়ী করা হচ্ছে৷
গত মাসে পাকিস্তান সরকার সোয়াত উপত্যকা এবং এর আশেপাশের এলাকায় ইসলামী গোষ্ঠির সঙ্গে আলোচনা করে সেখানে শারিয়া আইন চালু করার ঘোষনা দেয় এবং সেনাবাহিনী তাদের সঙ্গে অস্ত্র বিরতি করে৷ কিন্তু এই সময়ের মধ্যে ঘটে যাওয়া লাহোর হামলা পুরো বিষয়টিকে আবারো ভাবিয়ে তুলেছে৷ বিশেষ করে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা যখন এই কথা বলছেন, তখন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি জানিয়ে দিলেন, সরকার তালেবান জঙ্গীদের সঙ্গে আলোচনায় যাবে না৷ শ্রীলংকান ক্রিকেট দলের ওপর হামলাই প্রমাণ করেছে যে তার দেশ অশুভ শক্তির মুখে আছে৷
এদিকে, শ্রীলংকার ক্রিকেট দলের উপর হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, তিনি এই ঘটনায় ভিষণভাবে উদ্বিগ্ন৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবামা এই কথা বললেন৷ ওবামা বলেন, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পর্যালোচনা করা হচ্ছে৷ আগামী মাসে ন্যাটো সম্মেলনে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভাবিষ্যত কর্মপন্থা সম্পর্কে বলা হবে৷