হাতে তৈরি ক্রিসমাস ডেকোরেশন
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮জার্মানির টুরিঙ্গিয়া রাজ্যের লাউশা শহরে এখনও এর চল আছে৷ আডভেন্টের প্রথম দুই সপ্তাহান্তে সেখানে একটি মেলা বসে৷ মেলায় হাতে তৈরি ডেকোরেশন পাওয়া যায়৷ শহরের বাইরে থেকেও অনেকে সেখানে যান কেনাকাটা করতে৷
কারখানায় উৎপাদিত ক্রিসমাস ডেকোরেশনের সঙ্গে হাতে তৈরি জিনিস এখনও পাল্লা দিয়ে চলছে৷ অলংকার নির্মাতা এগোন ম্যুলার-ব্লেশ বলেন, ‘‘প্রতিযোগিতা সত্ত্বেও এ সব জিনিসের জনপ্রিয়তা আছে৷ ক্রেতারা এখনও জানতে চান, এগুলো আসলেই লাউশায় তৈরি কিনা৷''
ডেকোরেশনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ক্রিসমাস বল৷ এরপর আছে কাচের তৈরি পাখি৷ ব্যবসায়ী ক্রিস্টিনা বক জানান, ‘‘এই পাখি, ট্রাম্পেট ঐতিহ্যের অংশ৷ যখন ছোট ছিলাম, তখন ক্রিসমাস ট্রি-র নীচে এসব রাখা থাকত৷ আরও থাকত বাদাম, পাইন ফল ইত্যাদি৷ ''
চারশ' বছরেরও বেশি সময় আগে লাউশায় কাচ দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরির চল শুরু হয়৷ কাচের কারিগরদের ঘিরেই গ্রামটি গড়ে উঠেছিল৷ তবে কাচ দিয়ে প্রথম ক্রিসমাসের অলংকার তৈরি শুরু হয় ১৮৪৭ সালে৷
লাউশার এক জাদুঘরে অতীতের বিভিন্ন জিনিস রাখা আছে৷ উনবিংশ শতাব্দীতে লাউশা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ায় কাচের সাজসরঞ্জাম রপ্তানি শুরু হয়েছিল৷ কিন্তু ক্রিসমাস ডেকোরেশন তৈরির চল শুরু হলো কীভাবে? জাদুঘরের প্রধান আনিয়া ফ্যোলশে জানান, ‘‘কথিত আছে, লাউশার একজন গরিব কারিগর প্রথম ক্রিসমাস ডেকোরেশন বানাতে শুরু করেছিলেন৷ তখনকার দিনে আপেল আর বাদাম দিয়ে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হতো৷ কিন্তু গরিব ঐ কারিগরের সেগুলো কেনার সামর্থ্য ছিল না৷ তাই কাচ দিয়ে তিনি সেগুলো বানানো শুরু করেছিলেন৷''
লাউশার কারিগরদের মধ্যে পাঁচজন ক্রিসমাস ট্রি সাজানোর সরঞ্জাম তৈরিতে পারদর্শী৷ তাঁদের মধ্যে একজন মিশায়েল হাবেরলান্ড৷ তিনি এখনও তাঁর দাদার ছাঁচ দিয়ে কাজ করেন৷ হাবেরলান্ড বলেন, ‘‘আমার নানা অনেক পাখি বানিয়েছেন৷ মা বলতেন, যদি সব পাখি উড়তে পারত তাহলে লাউশার আকাশ অন্ধকার হয়ে যেত!''
সিলভার ও অ্যামোনিয়ার মিশ্রণ দিয়ে কাচের ছাঁচ তৈরি হয়৷ এরপর সেটি শুকিয়ে তাতে রং করা হয়৷
সুজানে ডাউস/জেডএইচ