1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হাইপারলুপ প্রযুক্তি নিখুঁত করতে চেষ্টা চলছে

২৪ জানুয়ারি ২০২২

ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০০ কিলোমিটার গতিতে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছে হাইপারলুপ প্রযুক্তি৷ ইতিমধ্যে অল্প পরিসরে একটি পরীক্ষামূলক যাত্রা সফলও হয়েছে৷ তবে এখনও পুরোপুরি নিখুঁত করা যায়নি এই প্রযুক্তি৷

https://p.dw.com/p/45zVS
ছবি: DW

ক্যালিফোর্নিয়ার হাইপারলুপ টিটি কোম্পানি সেই চেষ্টা চালাচ্ছে৷ সারা বিশ্বে তাদের প্রায় ৮০০ কর্মী আছে৷ টাকা আছে প্রায় ২৬৬ কোটি৷ তবে এই প্রযু্ক্তি মাঠে নামানোর আগে অনুমোদন পেতে হবে৷ তাই জার্মানির একটি পরিদর্শক সংস্থার সঙ্গে কাজ করছে হাইপারলুপ টিটি৷ কোম্পানির প্রধান নির্বাহী আন্দ্রেই ডে লেওন বলেন, ‘‘নিয়ম কানুনের বিষয়ে আমাদের এখনও সমস্যা আছে৷ কখনও কখনও নিয়মনীতির আগে প্রযুক্তি চলে আসে৷ আমরা খুব চেষ্টা করছি৷ টিইউভি স্যুদের সঙ্গে মিলে আমরা একটি নীতিমালা তৈরির কাজ করছি৷ কারণ নীতিমালা ছাড়া হাইপারলুপে করে আমরা মানুষ, এমনকি কার্গোও পরিবহন করতে পারব না৷’’

হাইপারলুপ টিউব তৈরি করা অনেক ব্যয়বহুল৷ এক কিলোমিটার তৈরিতে খরচ হবে প্রায় ৫১৫ কোটি টাকা৷ ভারতে পুনে ও মুম্বইয়ের মধ্যে পাতালপথে হাইপারলুপ বসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে, যেটা আরও ব্যয়বহুল হবে৷ তবে এটা সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা কমাবে৷ এই রুট তৈরিতে খরচ পড়বে প্রায় সাড়ে ৬৮ হাজার কোটি টাকা৷

আন্দ্রেই ডে লেওন বলেন, ‘‘আমরা বলেছি বেসরকারি বিনিয়োগের চেষ্টা করা যেতে পারে৷ পেব্যাক পিরিয়ড হতে পারে ২৫ বছর৷ তাহলে জনগণের করের টাকা আর ভর্তুকির উপর নির্ভর করতে হবে না৷ বর্তমানে ঐ রুটে চলাচলের যত উপায় আছে, তাতে যত টাকা খরচ হয়, তার ৭৫ শতাংশ অর্থ হাইপারলুপের টিকিটের মূল্য হিসেবে ধরে, এই হিসাব করা হয়েছে৷’’

পুনে ও মুম্বইয়ের মধ্যে হাইপারলুপের পরিকল্পনা

মহাকাশযাত্রার সঙ্গে হাইপারলুপ যোগাযোগের অনেক মিল রয়েছে৷ নভচারীরা একটি ভ্যাকুয়াম পরিবেশে থাকেন৷ হাইপারলুপ প্রযুক্তিতেও প্রায় ভ্যাকুয়াম পরিবেশ তৈরি করা হয়৷ আর সে কারণেই অনেক গতি তোলা সম্ভব হয়৷ কিন্তু পডে যদি কোনো ছিদ্র তৈরি হয় তাহলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সব যাত্রী মারা যাবেন৷

এই সমস্যার সমাধান এখনও পাওয়া যায়নি৷ এমনকি জার্মানির মিউনিখে যে প্রকল্প চলছে সেখানেও নয়৷ টিইউএম হাইপারলুপের প্রকল্প প্রধান গাব্রিয়েল সেমিনো বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতিতে খুব দ্রুত পড থামিয়ে যাত্রীদের জন্য অক্সিজেন মাস্কের ব্যবস্থা করতে হবে, যেমনটা বিমানে করা হয়৷ তবে এটা একটা সম্ভাবনা মাত্র, যেটা আমরা ভেবে দেখতে পারি৷ এটা যদি অনেক ব্যয়বহুল হয় তাহলে আর্থিকভাবে সফল হবে না৷ আবার, যদি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়া না যায়, কিংবা যদি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যয়বহুল প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হয়, তাহলেও লাভ হবে না৷’’

তাহলে কি হাইপারলুপ একটা স্বপ্ন হয়েই থাকবে? গবেষকরা অবশ্য সফলতার আশা করছেন৷

গাব্রিয়েল সেমিনো বলেন, ‘‘হাইপারলুপে করে মানুষের চেয়ে কার্গো পরিবহন সহজ হবে, কারণ সেক্ষেত্রে নিরাপত্তার শর্ত কম থাকবে৷’’

কনটেনার পরিবহনের নতুন উপায় বের করতে হাইপারলুপ টিটির সঙ্গে কাজ করছে জার্মানির হামবুর্গ বন্দর৷

হামবুর্গ বন্দরের হাইপারলুপ প্রকল্পের প্রধান গ্যারলিন্ডে জন জানান, ‘‘অল্প দূরত্বের জন্য হাইপারলুপ উপযোগী নয়৷ এটা মাঝারি বা দীর্ঘ পথের জন্য প্রযোজ্য৷ আমরা বন্দরের ভেতরে ৩০০ কিলোমিটার পথের একটি রুট চিন্তা করছি, যেটা বন্দরের দুটো বড় অংশকে সংযোগ করবে৷ বর্তমানে এই কাজে অনেক সময় লাগছে৷ এক্ষেত্রে হাইপারলুপ ব্যবহার করা যেতে পারে৷’’

ভবিষ্যতে আরও অনেক দূরের পথে এবং আরও ভালোভাবে পরীক্ষামূলক যাত্রা পরিচালনা করতে হবে৷ বিশেষ করে সফলভাবে বাঁক নেয়া যায় কিনা, দেখতে হবে৷ 

সেটা সম্ভব হলে দীর্ঘ পথে যাত্রার জন্য হাইপারলুপের উপযোগিতা এবং তাকে নিয়ে তৈরি হওয়া হাইপ সফল প্রমাণিত হবে৷

মিলটিয়াডস স্মিড্ট/জেডএইচ