1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হজ নিয়ে সৌদি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১১ জুন ২০২০

বাংলাদেশ থেকে যারা এবার হজে যেতে চান তাদের নিবন্ধন করা হয়েছে৷ কিন্তু বাকি কাজ স্থগিত আছে৷ এখন সৌদি আরব হজের ব্যাপারে পরবর্তী কি সিদ্ধান্ত জানায় তার অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশ৷

https://p.dw.com/p/3ddD2
ফাইল ছবিছবি: Getty Images/AFP/K. Sahib

এশিয়ার কয়েকটি দেশ এরইমধ্যে এবার হজযাত্রী না পাঠানোর কথা জানালেও বাংলাদেশ এব্যাপারে নিজে কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না৷ করোনা পরিস্থিতিতে যদি শেষ পর্যন্ত সীমিত আকারেও সৌদি আরব হজের সিদ্ধান্ত নেয় তাতে সমিল হবে বাংলাদেশ৷
তবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে কোটার শতকরা ২০ ভাগ নিয়ে হজের যে খবর দেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে বাংলাদেশ কিছু জানেনা৷ সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ জানিয়েছেন, ‘‘হজের ব্যাপারে আমাদের এখনো সৌদি কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি৷ আমরা নিয়মিত তাদের সাথে যোগাযোগ রাখছি৷ কোনো সিদ্ধান্ত জানা গেলে তাৎক্ষণিকভাবে তা ঢাকাকে জানানো হবে৷’’
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এবছর হজের সম্ভাব্য তারিখ ৩০ জুলাই৷ সাধারণত ৪৫ দিন আগে থেকে হজে যাওয়ার কার্যক্রম শুরু করতে হয়৷ এরইমধ্যে বাংলাদেশে সরকারি এবং বেসরকারি ভাবে যারা হজে যেতে চান তাদের নিবন্ধন করা হয়েছে৷ ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশনের (হাব) সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার ৬৪ হাজার ৬৯৯ জন হজে যাওয়ার জন্য  নিবন্ধন করেছেন৷ এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৫৫৭ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬১ হাজার ১৪২ জন৷ যদিও বাংলাদেশের কোটা এক লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জনের৷ করোনার কারণে এবার বাংলাদেশিদের হজে যাওয়ার আগ্রহ কম৷ এরকম আগে কখনো দেখা যায়নি৷নিবন্ধনের পর সৌদি আরবে তালিকা পাঠানো হয়৷ এরপর বাড়ি ও হোটেল ভাড়া, ক্যাটারিং সিলেকশন, ভিসা, টিকেট এই কাজগুলো করা হয়৷ স্বাভাবিক পরিস্থিতি থাকলে এবার বিমানের প্রথম ফ্লাইট হতো ২৩ জুন৷ মন্ত্রণালয় জানায়, কিন্তু শুধুমাত্র নিবন্ধন ছাড়া আর সব কাজ স্থগিত আছে সৌদি কর্র্তৃপক্ষের অনুরোধে৷
২৪ ফেব্রুয়ারি সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন ধরনের   হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়৷ তার খরচ যথাক্রমে চার লাখ ২৫ হাজার টাকা, তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং তিন লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ ধরা হয়৷ বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুইটি প্যাকেজে হজের খরচ ধরা হয় তিন লাখ ৬১ হাজার ৮০০ টাকা এবং তিন লাখ ১৭ হাজার টাকা৷  
যদি সৌদি আরব শেষ পর্যন্ত হজের অনুমতি দেয় তাহলে এই খরচ বেড়ে যেতে পারে বলে জানা গেছে৷ কারণ স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বিমান ভাড়া ও আবাসিক ভাড়াসহ আরো কিছু খরচ বেড়ে যাবে৷ আর অনুমতি দিলেও নতুন কোনো শর্ত জুড়ে দেয়া হলে বাংলাদেশিদের হজের আগ্রহ কমে যেতে পারে৷ হাব-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ‘‘যদি তারা শিশু ও পঞ্চাষোর্ধদের এবার হজে অনুমতি না দেয় তাহলে বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রী খুবই কম হবে৷ কারণ বাংলাদেশ থেকে যারা হজে যান তাদের ৮০ ভাগেরই বয়স পঞ্চাশের বেশি৷ আর অনেকে পরিবার নিয়ে হজে যান৷ সঙ্গে শিশুরাও থাকে৷’’ এছাড়া এখন করোনা পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশিদের হজে যাওয়ার আগ্রহ কতটা থাকে তাও দেখার বিষয় বলে মনে করেন তিনি৷

বাংলাদেশ থেকে যারা হজে যান তাদের ৮০ ভাগেরই বয়স পঞ্চাশের বেশি: হাব সভাপতি

হজের ব্যাপারে আমাদের এখনো সৌদি কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি: রাষ্ট্রদূত

সংশ্লিষ্ট কয়েকটি জায়গায় কথা বলে জানাগেছে, হজ না হওয়ার যেহেতু কেনো নজীর নেই তাই শেষ পর্যন্ত হজ হয়তো হবে৷ তবে তা প্রতীকী হতে পারে৷ হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা পাঁচ দিনের হলেও তা একদিনে নেমে আসতে পারে৷ কারণ ইসলামী বিধান অনুযায়ী আরাফাহর ময়দানে হাজির থাকলেই হজ হয়ে যায়৷
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে বিদেশিদের ওমরাহ পালন স্থগিত করে সৌদি আরব৷ আর দুই মাস বন্ধ থাকার পর বিধিনিষেধ শিথিল করে সৌদি আরবের মসজিদগুলো খুলে সীমিতভাবে খুলে দেয়া হয়েছে৷ তবে ৫ জুন থেকে  হজ ও ওমরাহর জন্য মক্কায় যাওয়ার প্রবেশপথ জেদ্দায় নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে৷
গোলাম মসিহ বলেন, ‘‘সৌদি আরবে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে৷ আক্রান্ত বাড়ছে৷ আর এখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিরাও সংকটে আছে৷ অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন৷ তাদের কোনো কাজকর্ম নাই৷ আমরা আমাদের সাধ্যমত বাংলাদেশিদের সহায়তার চেষ্টা করছি৷ তবে ২২ লাখ বাংলাদেশিকে সহায়তা করা সহজ নয়৷’’

গতবছর আগস্টের ছবিঘরটি দেখুন...