সড়ক দুর্ঘটনার কারণে এখন তিনি ‘নোটবুক বয়’
সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাঁর মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশ৷ স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলা তাইওয়ানের এই যুবক খাতার পাতায় লিখে রাখেন তাঁর প্রতিদিনের বিবরণ৷ ছবিঘরে জানুন এই ‘নোটবুক বয়’-কে৷
খাতায় জীবন...
ছাব্বিশ বছর বয়সি চেন হোং-চি নয় বছর আগে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন৷ ডাক্তাররা বলেন, মস্তিষ্কের ‘হিপোকাম্পাস’ অংশ, যা স্মৃতিশক্তি তৈরি করে, তা দুর্ঘটনার ফলে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে চেন-এর৷ হারাতে বসা স্মৃতিকে তাই প্রতিদিন একটি খাতায় লিখে রাখেন চেন৷
কী লেখেন সেই খাতায়?
সারাদিন কী করলেন চেন, কেমন ছিল সেদিনের আবহাওয়া এমন সব তথ্যই তুলে ধরেন তিনি এই খাতায়৷ এছাড়া ক্ষেতে কাজ করেন প্রতিদিন৷ দিনের ফসলের খবরাখবরও লেখা থাকে ডায়রিতে৷
হারানো খাতা
একবার দুর্ভাগ্যবশত চেন তাঁর স্মৃতিসমৃদ্ধ খাতাটি হারিয়ে ফেলেন৷ পরে তাঁর বাবা খুঁজে দেন খাতাটি৷ কিছুদিন পর আবার লেখা শুরু করেন চেন৷
কীভাবে চলে দিন...
চার বছর আগে চেন-এর বাবা মারা যান৷ এরপর শুরু হয় তাঁদের অর্থাভাব৷ বর্তমানে সরকার চেন-কে প্রতিবন্ধী ভাতা দেয়৷ এছাড়া ক্ষেতে ফলানো ফল ও সবজি বেচেই দিন চলে চেন ও তাঁর পরিবারের৷
ডাক্তার কী বলছেন?
তাইওয়ানের রাজধানী তাইপের একটি হাসপাতালে চলছে তাঁর চিকিৎসা৷ সেখানের ডাক্তার লিন মিং-তেং জানান, মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কয়েক বছরের মধ্যে অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে তাঁর স্মৃতিশক্তির৷ এখন চেন-এর সুস্থতা নিয়ে তিনি আশাবাদী৷
পারিবারিক টানাপোড়েন
ছেলের ভোলামনের এই সমস্যাকে পুরোপুরি মেনে নিতে পারেননি তাঁর মা৷ ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত তাঁর মা ওয়াং বলেন, ‘‘আমি আগামীর কথা ভেবে ভয় পাই৷ যেদিন আমি থাকব না, ছেলের কী হবে তখন?’’
খাতায় নিয়ন্ত্রণ
প্রতিদিনের ঘটনাবলী খাতায় লেখার ফলে চেন আস্তে আস্তে ফিরে পাচ্ছেন জীবনের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ৷ খাতায় লিখে রাখার কারণেই হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনও খুঁজে পেয়েছিলেন তিনি৷ এভাবেই ভবিষ্যতে স্বাবলম্বী হবার স্বপ্ন দেখেন তাইওয়ানের আশ্চর্য যুবক চেন৷