স্যান্ডেলের সঙ্গে মোজা, জার্মান ‘ফ্যাশন’

শীতকালে জুতা-মোজায় কোনো সমস্যা নেই, আবার গ্রীষ্মকালে স্যান্ডেল পরতেও সমস্যা হয় না৷ কিন্তু মাঝামাঝি আবহাওয়ায় কী করবেন? জার্মানদের অনেকে এমন হালকা শীত, হালকা গরমে মোজার সঙ্গে স্যান্ডেল পরতেই স্বাচ্ছন্দ্য় বোধ করেন৷ এ নিয়ে অবশ্য প্রায়ই জার্মানদের হাসি-তামাশার শিকার হতে হয়৷ কিন্তু তাতে জার্মানদের কী!

জার্মানির এই ট্রেন্ড অবশ্য এখন বিশ্বজুড়েই ছড়িয়ে পড়েছে৷ বিশেষ করে বয়স্ক নাগরিক, যাদের চলতি ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মেলানোর তেমন একটা আগ্রহ দেখা যায় না, তারাই জনপ্রিয় করে তুলেছেন এই ফ্যাশন৷ কিন্তু তারপরও এই ফ্যাশনকে জার্মান স্টেরিওটাইপ বলেই ধরে নেয়া হয়৷ এমনকি খোদ জার্মানিতেই এ নিয়ে নানা কৌতুক প্রচলিত আছে৷

পর্যটকেরা এই ট্রেন্ড ছড়়িয়ে দেয়ার মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন৷ দীর্ঘদিন ধরে দেশ হিসেবে পর্যটনে যাওয়া নাগরিকদের পরিসংখ্যানে জার্মানিই এগিয়ে৷ আর জার্মানরা বিদেশে গেলেও নিজেদের দেশের মতো করেই থাকতে চান৷ এ কারণে বিভিন্ন দেশে জার্মান নাগরিকদের সন্তুষ্ট করার জন্য জার্মান রেস্টুরেন্টও গড়ে উঠছে৷ ফলে অন্য সব দেশের পর্যটক হাঁ করে তাকিয়ে থাকলেও জার্মানরা স্যান্ডেল আর মোজা পরেই পাহাড়ে উঠতে দ্বিধা বোধ করেন না৷

ঠিক কবে থেকে জার্মানদের এ ফ্যাশন চালু হয়, তা বলা মুশকিল৷ কিন্তু এরই মধ্য়ে নানাভাবে গবেষণার মাধ্যমে স্যান্ডেলকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে বিভিন্ন ব্র্যান্ড৷ ১৭৭৪ সালে ইয়োহান আডাম বির্কেনস্টক নামের এক জুতা প্রস্তুতকারক নিজের ব্যবসা শুরু করেন৷ ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি চালু করে কর্কের তলদেশসহ স্যান্ডেল৷ এখন বিশ্বের নানা প্রান্তে এই বির্কেনস্টক স্যান্ডেল আরামের প্রতীক হয়ে উঠেছে৷

একসময় বৃদ্ধরা এ ফ্যাশন ধরে রাখলেও এখন তা তরুণদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে৷ বিশেষ করে শরৎকাল ও বসন্তে বার্লিনের রাস্তাঘাটে অদভুত সব ডিজাইন ও রঙের মোজা এবং স্যান্ডেল পরা তরুণদের ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়৷ একসময় কেবল পর্যটকদের পছন্দের পোশাক হলেও এখন তা ধীরে ধীরে মূলধারার জার্মান ফ্যাশনে পরিণত হচ্ছে৷ এ সঙ্গে হাফপ্যান্ট আর মাছ ধরার টুপিও তাদের পছন্দ৷