1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্বাধীনতার পথে ধাক্কা খেলো স্কটল্যান্ড

২৪ নভেম্বর ২০২২

বুধবার ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে স্কটল্যান্ডের সরকার আগামী বছর স্বাধীনতার পক্ষে গণভোট আয়োজন করতে পারবে না৷ বিচ্ছিন্নতাবাদী সরকার অবশ্য সেই লক্ষ্যে লন্ডনের উপর রাজনৈতিক চাপ বজায় রাখছে৷

https://p.dw.com/p/4Jzk3
ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতাপন্থিদের প্রতিবাদ
ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতাপন্থিদের প্রতিবাদছবি: PETER NICHOLLS/REUTERS

ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয় ও ফুটবল বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সাফল্য সত্ত্বেও ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের অগ্রণী সদস্য হিসেবে ইংল্যান্ডের অবস্থা ভালো যাচ্ছে না৷ রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি ব্রিটেনের ঐক্য ও অখণ্ডতা বার বার প্রশ্নের মুখে পড়ছে৷ বুধবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে স্কটল্যান্ড আপাতত স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোট আয়োজন করতে পারবে না বটে, কিন্তু স্কটিশ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আদালতের রায়ের পরেও হাল ছাড়তে প্রস্তুত নন৷ ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ডেও যুক্তরাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হবার এমন উদ্যোগের প্রতি সমর্থন বাড়ছে৷

বুধবারের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, নিজস্ব ক্ষমতা প্রয়োগ করে স্কটল্যান্ড নতুন করে স্বাধীনতা সংক্রান্ত গণভোট আয়োজন করতে পারে না৷ এর জন্য ব্রিটিশ সরকারের সম্মতির প্রয়োজন৷ অর্থাৎ স্কটল্যান্ডের পার্লামেন্ট সেই লক্ষ্যে যে প্রস্তাব অনুমোদন করেছে, সেটি অবৈধ৷ ফলে পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী বছর অক্টোবর মাসে গণভোট আয়োজন করা যাবে না৷ স্কটিশ আঞ্চলিক সরকারের প্রধান নিকোলা স্টার্জন সেই রায় মেনে নিলেও স্বাধীনতার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবার অঙ্গীকার করেন৷ ব্রিটিশ সরকারের যুক্তি, ২০১৪ সালের গণভোটেই বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়ে গেছে৷ সে যাত্রায় প্রায় ৫৫ শতাংশ মানুষ ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যে থাকার প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন, ৪৫ শতাংশ স্বাধীনতার পক্ষে রায় দিয়েছিলেন৷ তাছাড়া গোটা যুক্তরাজ্যের উপর স্কটল্যান্ডের গণভোটের গভীর প্রভাব রয়েছে বলেও বিষয়টি শুধু স্কটল্যান্ডের অভ্যন্তরীণ হতে পারে না৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বরং দেশের সংকট মেটাতে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন৷ উল্লেখ্য, জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী স্কটল্যান্ডের মানুষ বর্তমানে স্বাধীনতার প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত৷

স্কটিশ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা অবশ্য লন্ডনের এই যুক্তি মানতে রাজি নয়৷ তাদের মতে, ২০১৪ সালের পর ব্রিটেনের বাস্তবতা আমূল বদলে গেছে৷ ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করেছে৷ ব্রেক্সিটের প্রশ্নে সেই গণভোটে স্কটল্যান্ডের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইইউ-তে থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন৷ স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার স্টার্জেন বলেন, বর্তমানে স্কটিশ পার্লামান্টে স্বাধীনতাকামী দলগুলির সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে৷ ফলে তার হাতে নতুন করে গণভোট আয়োজনের গণতান্ত্রিক ম্যান্ডেট রয়েছে৷ সুপ্রিম কোর্টেও স্কটল্যান্ডের প্রতিনিধি বলেছিলেন, যে গত আঞ্চলিক নির্বাচনে ভোটাররা স্বাধীনতার সমর্থনকারী জনপ্রতিনিধিদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করেছেন৷ এমনকি আইনি বৈধতা ছাড়াই শুধু জনগণের মনোভাব জানতে গণভোট আয়োজনের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন তিনি৷

তর্কবিতর্কের পাশাপাশি আগামী পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে স্কটিশ বিচ্ছিন্নতাবাদী মহল৷ স্টার্জেন আগামী জাতীয় নির্বাচনে নিজের দলের জন্য ৫০ শতাংশেরও বেশি ভোট পাবার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন৷ সেটা সম্ভব হলে লন্ডনের উপর প্রবল রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে গণভোটের পক্ষে সম্মতি আদায় করতে চান তিনি৷ দুই বছরের পর সেই নির্বাচনে স্কটল্যান্ডের স্বাধিনতার পাশাপাশি নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও ফয়সালা চান তিনি৷ স্টার্জনের মতে, এতকাল দাবি করা হয়েছে যে চারটি রাষ্ট্র স্বেচ্ছায় ব্রিটিশ ইউনিয়নের মধ্যে রয়েছে৷ কোনো একটি রাষ্ট্রের জনগণের রায় না মানলে সেই দাবি নস্যাৎ হয়ে যাবে৷

এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)