‘স্বাগতম' বলছে না জার্মানি
২৯ আগস্ট ২০১৯জার্মানিতে শুধু ২০১৮ সালেই ঘটেছে অন্তত দুই হাজার অভিবাসীবিদ্বেষী, বিশেষ করে শরণার্থীবিদ্বেষী, অপরাধ৷ একই সাথে বেড়েছে উগ্রডানপন্থি শক্তিদের আস্ফালন৷কিন্তু তিন বছর আগে, ২০১৫ সালে এই চিত্র ছিল ভিন্ন৷ বিশ্বের প্রায় সমস্ত সংবাদমাধ্যমে জার্মানির খবরের সাথে ছাপা হতো অভিবাসন বিষয়ে বেশ কিছু আশা জাগানো ছবি৷ ‘জার্মানিতে সবাইকে স্বাগতম'- এমন বার্তা থাকতো সেই খবরগুলিতে৷
বেরটেলসমান ফাউন্ডেশনের সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, জার্মানির এই ইতিবাচক আচরণ বদলে যাবার পেছনে রয়েছে বর্তমান সমাজের সংশয়বাদী ও বাস্তববাদী চরিত্র৷ একটি সমীক্ষা থেকে উঠে এসেছে এমন তথ্য৷
চালকের আসনে অর্থনীতিই
সিদ্ধান্তে পৌঁছতে মোট ২ হাজার ২৫জনের মতামত গ্রহণ করা হয়৷ সেখানে দেখা যায় ৭৯ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন, জার্মান কর্তৃপক্ষের প্রথম পছন্দ দক্ষ অভিবাসী৷ ৭১ শতাংশ মনে করেন যে শরণার্থী গ্রহণের ক্ষেত্রেও তাদের কর্মদক্ষতা বিবেচনা করে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ৷
বিদেশ থেকে দক্ষ কর্মচারী আনার পক্ষে মত দিয়েছেন মোট ৪১ শতাংশ উত্তরদাতা৷ জার্মানিতে বিদেশি সংস্থা ও বিদেশি কর্মচারীদের আগমনকে দুই তৃতীয়াংশ মানুষ দেখছেন দেশের অর্থনীতিতর ইতিবাচক সংযোজন হিসাবে৷
এই সমীক্ষা জানাচ্ছে, দেশের ভেতর অভিবাসীদের ভাবমূর্তি কেমন, সেটাই নির্ধারণ করছে সার্বিক অভিবাসন প্রক্রিয়ার প্রতি নাগরিকদের অভিমত৷ অন্যদিকে, মাত্র ৪১ শতাংশ মনে করেন যে, ২০১২ সালের পর থেকে তেমনভাবেঅভিবাসীদেরঅর্থনৈতিক অবদান স্বীকার করা হচ্ছে না৷ ফলে, বাইরে থেকে আসা মানুষদের মনে জমছে ক্ষোভ৷ জার্মান নাগরিকদের মধ্যেও কাজ করছে একরকমের অভিবাসন-অনীহা৷
গবেষণার পরিসংখ্যান বলছে, ৫২ শতাংশ মানুষ মনে করেন, প্রয়োজনের চাইতে মাত্রাতিরিক্ত অভিবাসী এসেছেন দেশে৷
এই প্রবণতারই রাজনৈতিক বহিপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে বাড়ন্ত উগ্রডানপন্থি, অভিবাসনবিরোধী রাজনীতির উত্থানে৷ যার ফলে, বাড়ছে বিদেশিদের ওপর অন্যায়৷
অরহান ক্যোজেমান, বেরটেলসমান ফাউন্ডেশনের গবেষক মনে করেন, জার্মানির মতো দেশ যেখানে বহু দশক ধরে রয়েছে অভিবাসনের ইতিহাস, সেখানে আজও ‘ওয়েলকাম কালচার' বা বিদেশিদের আহ্বান জানানোর সংস্কৃতি অনুন্নত৷ এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মের মধ্যে চিন্তা ও জীবনযাত্রার ব্যাপক ফারাক এই প্রবণতার অন্যতম কারণ, মনে করেন তিনি৷
ডায়ানা হোডালি/এসএস