স্পেনের ‘শতাব্দীর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিচার’
স্পেনে মঙ্গলবার কাতালুনিয়ার বিচ্ছিন্নতাকামীদের বিচার শুরু হয়েছে৷ একে দেশটির ‘শতাব্দীর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিচার’ বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে৷
কীসের বিচার?
২০১৭ সালে কাতালুনিয়ার রাজ্য সরকার রাজ্যের স্বাধীনতার লক্ষ্যে একটি গণভোট (ছবি) আয়োজন করেছিল৷ স্পেনের সাংবিধানিক আদালত অবশ্য সেই গণভোট আয়োজনকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছিল৷ গণভোটের ২৬ দিন পর কাতালুনিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়৷ এসব ঘটনায় স্পেনের তৎকালীন সরকার কাতালুনিয়ার সরকার ভেঙে রাজ্যের ক্ষমতা কেন্দ্রে নিয়ে যায়৷ এবং বিচ্ছিন্নতাকামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে৷
কাদের বিচার?
মোট বার জনের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ এর মধ্যে ১০ জন রাজনীতিবিদ, বাকি দুজন অ্যাক্টিভিস্ট৷ রাজনীতিবিদদের মধ্যে আছেন কাতালুনিয়ার সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ওরিয়ল শোঙকেরাস, রাজ্য সরকারের সাবেক স্পিকার এবং মন্ত্রিসভার কয়েকজন সাবেক সদস্য৷
অভিযোগ
কাতালুনিয়ার সাবেক ভাইস-প্রেসিডেন্ট শোঙকেরাসের (ছবি) বিরুদ্ধে বিদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে৷ আর জনগণের টাকা খরচ করে গণভোট আয়োজন করায় মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিরুদ্ধে অর্থ অপচয়ের অভিযোগ উঠেছে৷ এছাড়া রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও অবাধ্যতার অভিযোগ আনা হয়েছে৷
রায় কবে?
প্রায় ৫০০ জন প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য শোনা হবে৷ ফলে বিচার প্রক্রিয়া শেষ হতে অন্তত তিনমাস লাগবে৷ এরপর রায় হতে লাগবে আরো কয়েক মাস৷ বিচারকার্য টেলিভিশনে সরাসরি প্রচার করা হবে৷ ছবিতে স্পেনের সুপ্রিম কোর্ট দেখতে পাচ্ছেন যেখানে বিচার চলছে৷
সাজার মেয়াদ
বিদ্রোহের অভিযোগ প্রমাণিত হলে কাতালুনিয়ার সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট শোঙকেরাসের ২৫ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে৷ এছাড়া স্পিকার ও দুই অ্যাক্টিভিস্টের ১৭ বছরের জেল হতে পারে৷
আপিলের সুযোগ
রায় যা-ই হোক না কেন দুই পক্ষই আপিল করতে পারবে৷ এছাড়া অনুশোচনা প্রকাশ করে ক্ষমা চাইলে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমা করে দেয়ার সুযোগ থাকবে৷
পুজদেমন কোথায়?
গণভোট আয়োজনের সময় কাতালুনিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন কার্লেস পুজদেমন৷ গণভোটের পর তিনি পালিয়ে প্রথমে ব্রাসেলস চলে যান৷ এখন আছেন জার্মানিতে৷ এখানে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলে স্পেন তাঁকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছিল৷ কিন্তু জার্মানির এক আদালত বলেছে, বিদ্রোহের অভিযোগে বিচার জন্য পুজদেমনকে স্পেনে পাঠানো যাবে না৷ ফলে তিনি এখনো জার্মানিতেই আছেন৷
সংঘাতের শুরু
২০১৭ সালের গণভোট আয়োজনের প্রেক্ষাপট জানতে ২০১০ সালে ফিরে যেতে হবে৷ সেই সময় কাতালুনিয়ার আঞ্চলিক চার্টার বা সনদে কাতালুনিয়াকে ‘নেশন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল৷ কিন্তু স্পেনের সাংবিধানিক আদালত (ছবি) সেটি ফেলে দেন৷ ঐ ঘটনার পর কাতালুনিয়ায় বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন গতি পায়৷