1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লেজার তলোয়ার নিয়ে প্রতিযোগিতা

২২ আগস্ট ২০১৯

ডিজিটাল যুগ আসার আগেই চলচ্চিত্রের পর্দায় কল্পবিজ্ঞানকে কীভাবে প্রতিষ্ঠা ও তার বিপুল জনপ্রিয়তা নিশ্চিত করা যায়, তা দেখিয়ে দিয়েছিল স্টার ওয়ার্স সিরিজ৷ সেই ছবিরই একটি উপকরণ জনপ্রিয় ক্রীড়া হয়ে উঠছে৷

https://p.dw.com/p/3OJNM
DW Euromaxx,  Fit wie ein Jedi - Lichtschwerter
ছবি: DW

ফ্রান্সের এক ক্রীড়াকেন্দ্রে অঁতনি লোকোকো নিজেকে স্টার ওয়ার্স সিরিজের অশুভ ও অন্ধকার শিবিরের যোদ্ধায় রূপান্তরিত করেছেন৷ দেখলে ‘স্টার ওয়ার্স' চলচ্চিত্রের সেট মনে হলেও সেখানে সত্যি লেজার তলোয়ারের প্রতিযোগিতা চলছে৷ লোকোকো বলেন, ‘‘এখানে সবকিছুই স্টার ওয়ার্সকে কেন্দ্র করে চলছে৷ শিশু হিসেবেও আমি স্টার ওয়ার্সের স্বপ্ন দেখতাম৷ ছবির মতোই লেজার তলোয়ার নিয়ে খেলার স্বপ্ন ছিল৷ বয়স যতই হোক না কেন, ছবির মতোই এ সব নিয়ে মেতে থাকা যায়৷''

স্টার ওয়ার্স সিরিজ থেকে প্রেরণা নিয়ে ফ্রান্সে লেজার তলোয়ার নিয়ে ফেন্সিং-এর প্রবণতা বাড়ছে৷ মার্কিন পরিচালক জর্জ লুকাস এই জগত সৃষ্টি করেছিলেন৷ অতীত যুগের এক কাল্পনিক গ্যালাক্সি বা ছায়াপথই এই সিরিজের প্রেক্ষাপট৷ সেখানে জেডাই নাইটরা ক্ষমতার আলোকিত অর্থাৎ শুভ শক্তি এবং সিট নাইটরা অন্ধকার অর্থাৎ অশুভ প্রান্তের প্রতিনিধি৷ শুভ ও অশুভ শক্তির মধ্যে লাগাতার সংগ্রামের মূল হাতিয়ার এই লেজার তরবারি৷

যেমনটা এই মঞ্চেও ঘটছে৷ অঁতনি লোকোকো অশুভ শক্তি বেছে নিয়েছেন৷ চরিত্র হিসেবে তিনি সিথ লর্ড ডার্থ মল-কে বেছে নিয়েছেন৷ এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘‘এটি সত্যি এক অনন্য চরিত্র৷ স্টার ওয়ার্স কাহিনিতে একমাত্র তাঁরই দুমুখো লেজার তলোয়ার রয়েছে৷ আমি লাঠি নিয়ে অনেক প্রশিক্ষণ নিয়েছি৷ এটি চালানোর কায়দা অনেকটাই সেরকম৷ আমারও যেন ডার্থ মলের মতো দুমুখো তলোয়ার রয়েছে৷ এভাবেই সবকিছু এগোলো৷''

আপনিও খেলতে পারেন স্টার ওয়ার্স

তবে প্যারিসের উপকণ্ঠে এই প্রতিযোগিতায় দুমুখো তলোয়ার নিয়ে খেলার অনুমতি নেই৷ তা সত্ত্বেও অঁতনি এই প্রতিযোগিতার ফেভারিট হিসেবে পরিচিত৷ তিনি আগের দুটি প্রতিযোগিতায় জিতেছেন৷ এবার ফ্রান্সের প্রায় ৪০ জন প্রতিযোগীর সঙ্গে লড়াই করে তাঁকে সেই সম্মান ধরে রাখতে হবে৷

৩ মিনিট ধরে এগিয়ে থাকলে অথবা ১৫ পয়েন্ট পেলে ম্যাচ জেতা যায়৷ প্রতিপক্ষের মাথা ছুঁতে পারলে ৫ পয়েন্ট পাওয়া যায়, পা ছুঁলে ৩ পয়েন্ট৷ অঁতঁ অঁদ্রে-র কাছে এমন ফেন্সিং মূল ক্রীড়ার সমকক্ষ৷ তিনি বলেন, ‘‘স্টার ওয়ার্স ভালবাসেন বলে অনেকে এটা করেন৷ অন্যদের কাছে এর নন্দনতত্ত্ব বা খেলাটাই আকর্ষণীয়৷ আমি খেলা হিসেবেই এটি পছন্দ করি৷ স্টার ওয়ার্স পছন্দ করলেও ক্রীড়া ও শৃঙ্খলা আমার কাছে বেশি জরুরি৷''

পুরুষ-অধ্যুষিত এই জগতে আমঁদিন লকঁত হাতে গোনা কয়েকজন নারীদের একজন৷ তিনি বলেন, ‘‘বেশি নারী না থাকলেও যারা আছে, তারা নিজেদের উজাড় করে দেয়৷ আমরা আনন্দ নিতে চাই এবং দেখাতে চাই যে আমরাও পারি৷''

অঁতনি লোকোকো প্রায় ৩ বছর ধরে লেজার ফেন্সিং চর্চা করছেন৷ তিনিই এই ক্রীড়ার অন্যতম পথিকৃত৷ ফ্রান্সের ফেন্সিং সংগঠনের প্রধান স্যার্শ ওবেলি ২০১৮ সালের মে মাসে এই ক্রীড়াকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেন৷ বিশ্বের প্রথম এবং একমাত্র সংগঠন হিসেবে ফ্রান্সই এ ক্ষেত্রে নজর কেড়েছে৷ ওবেলি বলেন, ‘‘আমরা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে উৎসাহ জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছি৷ স্টার ওয়ার্সের জগত তাদের কাছে আকর্ষণীয়৷ আমাদের ক্রীড়ার মধ্যে সেই উৎসাহ টেনে আনার চেষ্টা করছি৷ লেজার ফেন্সিং সত্যিকারের এক ক্রীড়া৷ একবার পরখ করে দেখলে আপনি বুঝবেন, ৫ মিনিট পরেই ঘাম বেরিয়ে আসবে৷''

প্রচলিত ফেন্সিং-এর মতো লেজার ফেন্সিং-ও কোনো এক সময়ে অলিম্পিকে স্থান পাবে বলে এই প্রতিযোগিতায় সবার আশা৷ তবে এই ক্রীড়ার সঙ্গে যুক্ত মানুষ সবার আগে বাকিদেরও স্টার ওয়ার্স জ্বরে আক্রান্ত করতে চান, ঠিক চলচ্চিত্রকে ঘিরে যেমনটা হয়েছিল৷

মারিনা স্ট্রাউস/এসবি