‘স্টাড্ট রয়মে’ এনে দিল সমান্তরাল জীবনের খোঁজ
৩ জানুয়ারি ২০১৩যে শহরে আমরা থাকি, চেনা-পরিচিত সেই শহরের একটা অজানা দিক থাকে, যার আমরা খোঁজ পাই না৷ যেমন কোনও বহুতল বাড়ির ছাদ থেকে বহু নীচে সচল শহরটাকে কেমন লাগে? বিশেষ করে, একজন দৃষ্টিহীন কিশোরীর কাছে, যার কাছে শুধু শব্দ, গন্ধ আর স্পর্শই সম্বল?
অথবা নিত্যদিন যে পরিষেবা আমরা ভোগ করে থাকি, ধরা যাক কোনও অভিজাত পাঁচ তারা হোটেলের রুম সার্ভিস, যারা আমাদের অবর্তমানে এসে আমাদের হোটেলের ঘর গুছিয়ে দিয়ে যায়, তার পিছনে যে মানুষগুলো আছে, তাদেরকে আমরা ক'জন চিনি?
এমনই কিছু অদেখা, অজানা দৃশ্য, শ্রাব্য এবং অনুভবের জগৎ উপস্থিত করলেন জার্মানির থিয়েটার কর্মী স্টেফান কেগি এবং আর্জেন্টিনার লেখিকা লোলা এরিয়াস৷ তবে কলকাতা প্রথম নয়, লোলা জানালেন, এর আগে এই ‘স্টাড্ট রয়মে' বা ‘সিটি স্পেসেস' নিয়ে ওরা ইউরোপ এবং দক্ষিণ অ্যামেরিকার নানা শহরে গিয়েছিলেন৷
কী বিশেষত্ব এই থিয়েটারের? লোলা জানাচ্ছেন, বাইরে থেকে কিছু তৈরি করে সেটা দেখানো নয়, ওরা এই শহরকেই প্রেক্ষাপট করে, এখানকার লোকজনকে দিয়েই গোটা বিষয়টা উপস্থাপন করেন৷
বড় অন্যরকম প্রেক্ষাপট ওরা বেছে নিয়েছিলেন এই জীবনরঙ্গের জন্য৷ কলকাতার অদূরে এক রুটি কারখানা, চৌরঙ্গির এক বহুতল বাড়ির ছাদ, একটি পাঁচতারা হোটেলের কয়েকটি ঘর, একটি শপিং মল এবং একটি মেট্রো রেল স্টেশন৷ এই স্টেশনের বিষয়টি যেমন বহু লোকের নজর কেড়েছে৷ চারজন লেখক চারটি ল্যাপটপ নিয়ে বসেছিলেন চার জায়গায়, এবং ওরা যা দেখছিলেন, তা-ই লিখছিলেন ল্যাপটপে, যে লেখা ফুটে উঠছিল চারটি ‘জায়ান্ট স্ক্রিন'-এ৷ এভাবেই নিজেদের চেনাজানা শহরকে এক অন্য চোখে দেখার স্বাদ পাওয়া গেল, বললেন কলকাতায় গ্যোয়েটে ইনস্টিটিউটের নির্দেশক, ডঃ মার্টিন ভেলডে৷
আর কলকাতা কেমন লাগল? কতটা নাটকীয়? না, কলকাতার পাগলামিও নজর এড়ায়নি লোলার৷ বললেন, ‘‘এখানকার জীবনও কম নাটকীয় নয়!''