সোশ্যাল নেটওয়ার্ক নিয়ে মোদীর নয়া চমক
৩ মার্চ ২০২০আচমকাই একটা টুইট। আর তা থেকেই শুরু হয়ে যায় ব্যাপক জল্পনা। টুইটটি করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ‘‘আগামী রোববার থেকে আমি ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউবের মতো সব সামাজিক মাধ্যম ছেড়ে দেব বলে ভাবছি। আমি আপনাদের জানাব।’’ টুইটারে তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা ৫ কোটি ৩৩ লক্ষ। ডনাল্ড ট্রাম্পের পর বিশ্বে সব চেয়ে বেশি ফলোয়ার তাঁরই। মোদীর ফেসবুক পেজ লাইক করেছেন ৪ কোটি ৪০ লক্ষ লোক। সামাজিক মাধ্যমে এ হেন জনপ্রিয় মোদী হঠাৎ এই কথা বললেন কেন?
জবাব কেবল মোদীর কছেই ছিল। বাকিরা অবশ্য অনুমান করার চেষ্টা করতে থাকেন। রাহুল গান্ধীর মতো অনেকে মোদীর এই টুইট দেখে পাল্টা আক্রমণ করেছেন। রাহুল বলেছেন, ''সামাজিক মাধ্যম ছাড়ার দরকার নেই, ঘৃণা ছাড়ুন।'' কংগ্রেস আরও একটু এগিয়ে গিয়ে বলেছে, ‘‘আপনাকে সামাজিক মাধ্যম ছাড়তে হবে না। বরং বিজেপির ট্রোল বাহিনীকে বলুন, তারা যেন ট্রোল করা ছাড়ে।’’
প্রয়াত অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি প্রায়ই মোদী সম্পর্কে একটা কথা বলতেন। তা হল, গুজরাট দাঙ্গার পর দেশের প্রায় সব মিডিয়া যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীকে ভিলেন বানিয়ে একের পর এক খবর করছে, সেই সময়, মিডিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক কমিয়ে সরাসরি লোকের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের পথ বেছে নিয়েছিলেন মোদী। পরে সামাজিক মাধ্যম জনপ্রিয় হলে মোদী তাতে সক্রিয় হন। প্রশ্ন হল, এত জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও তিনি কেন সেই মাধ্যম ছাড়বেন?
এমনকী বিজেপি নেতারা বলতে থাকেন, ''আমি যতদূর মোদীজিকে জানি, তিনি অনেক দিন আগে থেকে সব কিছু পরিকল্পনা করে রাখেন। এমন হতে পারে, তাঁর নির্দেশে ভারতেই এই ধরনের সামাজিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়ে গিয়েছে। সেই ঘোষণা রবিবার করে দেবেন।’’
লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘দিল্লির দাঙ্গা নিয়ে মোদী ও কেন্দ্রীয় সরকার বিপাকে পড়েছে। তাই সে সব থেকে নজর সরানোর জন্য মোদী এই সব কথা বলছেন। মানুষের চোখ অন্য দিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছেন।'' কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের আশঙ্কা, ''তবে কি এই সব সামাজিক মাধ্যমের ওপর ব্যাপক কড়াকড়ি করতে চায় সরকার? নাকি ভারতে সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছেন মোদী? সে জন্যই আগেভাগে নিজেকে এই সব জায়গা থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন।’’
এই ধরনের জল্পনা যখন তুঙ্গে, তখন মোদী নিজেই রহস্য ফাঁস করে দেন। তিনি আরেকটি টুইট করে বলেন, ''আন্তর্জাতিক মহিলা দিবসের দিন আমি আমার সব সামাজিক মাধ্যমের দায়িত্ব এমন সব কৃতী মহিলাদের হাতে ছেড়ে দেব, যাঁদের জীবন ও কাজ আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। এর ফলে কোটি কোটি লোকও উদ্বুদ্ধ হবেন।।
সামাজিক মাধ্যমে জনপ্রিয় তৃণমূল কংগ্রেসের এক সাংসদ আগেই ডয়েচে ভেলেকে আগেই বলেছিলেন, ‘‘এটা মোদীর আরেকটি চমক ছাড়া আর কিছুই নয়। খুব সম্ভবত মহিলা দিবসে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সামাজিক মাধ্যম কিছু মহিলার হাতে তুলে দেবেন। তারপর আবার তা নিজের হাতে নিয়ে নেবেন। এই ধরনের চমক দিতে মোদী ভালোবাসেন।’’
তিনিই ঠিক। মহিলা দিবসকে সামনে রেখে চমক দিলেন মোদী।
জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এএনআই)