সোভিয়েত ইউনিয়ন নেই, রয়ে গেছে অস্ত্র
স্নায়ুযুদ্ধের সময়কার অস্ত্র এখনও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সেনাবাহিনী ব্যবহার করছে৷ এমনকি এ সব অস্ত্র ছড়িয়ে গেছে বিভিন্ন এলাকার গেরিলা, জঙ্গি এবং সন্ত্রাসীদের কাছেও৷ এমন কিছু অস্ত্রের কথা নিয়েই এই ছবিঘর৷
কালাশনিকভের সাত দশক
একে-৪৭৷ এক নামে বিশ্বজুড়ে পরিচিত এই অস্ত্রে গুলি করা যায় ৩০টি৷ সোভিয়েত ইঞ্জিনিয়ার মিখাইল কালাশনিকভ (ছবিতে) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই স্বয়ংক্রিয় রাইফেল তৈরি করেন৷ সস্তা এবং নির্ভরযোগ্য হওয়ায় দ্রুতই খ্যাতি অর্জন করে এই অস্ত্র৷ এখনও স্বয়ংক্রিয় রাইফেলের জগতে সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম একে-৪৭৷
মাকারভের মহাকাশভ্রমণ
১৯৫১ সালে সোভিয়েত আর্মিতে নাইন এমএম মাকারভ পিস্তলের ব্যবহার চালু হয়৷ সোভিয়েত সৈনিকদের অন্যতম অস্ত্র ছিল এই মাকারভ৷ এমনকি বিশেষ সুরক্ষার অংশ হিসেবে সোভিয়েত মহাকাশচারীরা এই অস্ত্র নিয়ে মহাশূন্যেও গেছেন৷ পৃথিবীতে ফেরার পর শত্রু এলাকায় অবতরণ করলে যাতে বিপদে না পড়তে হয়, এ জন্যই এই ব্যবস্থা৷
এখনো সগর্বে মিগ-২৯
আশির দশকের শুরুর দিকে মিগ-২৯ এর উৎপাদন শুরু হয়৷ অসাধারণ নিয়ন্ত্রণ এবং আকাশে ব্যাপক তৎপরতার সাথে চলাচল করার ক্ষমতা শুরু থেকেই এই জঙ্গি বিমানকে এনে দেয় বিশ্বব্যাপী সুনাম৷ এখন ন্যাটো ফাইটার, সুখোইয়ের মতো বেশকিছু উন্নত জঙ্গি বিমান ব্যবহার হচ্ছে৷ কিন্তু মিগ-২৯ ঠিকই ধরে রেখেছে তার সুনাম৷ সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের মোকাবেলায় এ বিমান ব্যবহার করেছিল রাশিয়া৷
ভয়ংকর কাতিয়ুশা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বেশ সাফল্যের সাথেই কাতিয়ুশা ব্যবহার করেছিল সোভিয়েত রেড আর্মি৷ একসাথে অনেকগুলো কাতিয়ুশা রকেট লঞ্চার সহজেই সেনাবাহিনীর ট্রাকে করে পরিবহন করা যায়৷ ফলে একদিকে যেমন অর্থ ও সময় বাঁচে, তেমনি বিপক্ষকে মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংস করে দিতেও এর জুড়ি নেই৷
কার্যকরি এস-৩০০
২০১৬ সালে ইরানের কাছে অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিক্রি করে৷ প্রায় গোপনে সাক্ষরিত এই চুক্তির বিস্তারিত জানা যায়নি৷ এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্নায়ুযুদ্ধের সময় ব্যবহার করা এস-৩০০ অস্ত্রের উন্নততর সংস্করণ৷ ১৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যে আঘাত করতে পারত এস-৩০০৷ এর সর্বাধুনিক সংস্করণ – এন্টে ২৫০০৷ এটি ৪০০ কিলোমিটার দূরে আঘাত করতে পারে৷
দ্রাগুনভ স্নাইপার রাইফেল
রাইফেলের জগতে যেমন কালাশনিকভ, স্নাইপারের জগতে তেমনি দ্রাগুনভ৷ ১৯৬৩ সালে প্রথম এই অস্ত্র সোভিয়েত সেনাবাহিনীতে চালু করা হয়৷ তারপর এটি ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর আনাচেকানাচে৷ ধারণা করা হয়, মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে এই অস্ত্র ভিয়েতনাম যুদ্ধে ব্যবহার হয়েছিল৷ আইএস জঙ্গিরাও দ্রাগুনভ স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করছে বলে ২০১৫ সালে তথ্য দেয় সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ৷
যুগের প্রতীক টি-৩৪
নাৎসি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রেড আর্মির বেশিরভাগ জয়ের কৃতিত্বই দেয়া হয় এই ট্যাংককে৷ ১৯৪১ সালে প্রথম যুদ্ধে ব্যবহার হয় এই ট্যাংক৷ পুরো বিশ্বযুদ্ধই দাপিয়ে বেড়ায় এই ট্যাংক৷ কয়েক দশক নিজের প্রভাব ধরে রেখেছিল টি-৩৪৷ এখনও রাশিয়ার বিজয় দিবসের প্যারেডে এই ট্যাংককে দেয়া হয় বিশেষ সম্মান৷