1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘সেনাবাহিনী নিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদন মিথ্যা’

১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

সেনা সদর আল জাজিরায় প্রকাশিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে৷ তারা বলেছে বাংলাদেশ সরকার ও সেনাবাহিনীকে ‘হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে' উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ‘মিথ্যা তথ্য’ প্রকাশ করা হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/3pQis
আইএসপিআর
ছবি: https://www.ispr.gov.bd

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)-এর প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, পেশাগতভাবে অত্যন্ত দক্ষ, সকলের কাছে অতি গ্রহণযোগ্য সেনাবাহিনী প্রধানকে কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়া আল জাজিরা কর্তৃক অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভিত্তিহীন এবং কাল্পনিকভাবে দুর্নীতির সাথে জড়িত করার অপপ্রয়াস সেনাবাহিনী ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে৷ ১ ফেব্রুয়ারি ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামে আল-জাজিরার ওই প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ার পরের দিনও ওই প্রতিবেদনটি ‘সাজানো এবং দুরভিসন্ধিমূলক’ হিসেবে বর্ণনা করে সেনা সদর থেকে একটি প্রতিবাদলিপি দেওয়া হয়েছিল৷ আইএসপিআরের পাঠানো এবারের প্রতিবাদলিপিটি ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম থেকে প্রকাশ করা হলো৷

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নিয়ে আল জাজিরার ‘মিথ্যা প্রতিবেদন’

সম্প্রতি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার'স মেন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি সেনাসদরের দৃষ্টিগোচর হয়েছে৷ তথ্যচিত্র আকারে পরিবেশিত প্রতিবেদনটিতে আল জাজিরা কর্তৃক বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে অসংখ্য ভুল তথ্য পরিবেশন করায় জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে৷ প্রতিবেদনটিতে স্পষ্টতই বোঝা যায় যে, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, তথা সেনাবাহিনী প্রধানকে বাংলাদেশের জনগণ ও বিশ্বের দরবারে বিতর্কিত, অগ্রহণযোগ্য ও হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার সাথে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অন্যান্য অসত্য, বানোয়াট, মনগড়া, অনুমাননির্ভর ও অসমর্থিত তথ্য সংযুক্ত করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে৷

তথ্যচিত্রে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক ইসরায়েল থেকে স্পাইওয়্যার ক্রয় এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ক্রয় প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সেনাবাহিনী প্রধানের ভাইকে সম্পৃক্ত করার কিছু মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে৷

আল জাজিরার রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্নের মুখে সরকারের সততা

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ১৯৮৮ সাল থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সফলভাবে অংশগ্রহণ করে আসছে৷ বিভিন্ন সময়ে এবং বর্তমানে (৩১ অআস্ট ২০২০ হতে অদ্যাবধি) ১২০টি দেশের মধ্যে জাতিসংঘে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হওয়ার গৌরব অর্জন করে৷ এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১২৪ জন সেনাসদস্য আত্মোৎসর্গ করেন এবং ২২২ জন সেনাসদস্য আহত হন৷ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অর্জিত সুনাম, পারদর্শিতা, সক্ষমতা এবং অভিজ্ঞতার আলোকে জাতিসংঘের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের শান্তিরক্ষী দল প্রেরণের জন্য সদা প্রস্তুত৷ ইউনাইটেড নেশনস পিসকিপিং ক্যাপাবিলিটি রেডিনেস সিস্টেম (ইউএনপিসিআরএস)-এর আওতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬টি কন্টিনজেন্ট পর্যায়ক্রমে পুরাতন ইউনিটসমুহের প্রতিস্থাপক এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে নতুনভাবে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত যা শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশসমুহের মধ্যে সর্বোচ্চ৷

২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ইউএনডিপিও কর্তৃক বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো ‘সিগন্যাল ইউনিটের পরিবর্তে একটি সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট' ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে মোতায়েন করার কথা জানতে চাওয়া হয়৷ এবং ইউনিটের প্রয়োজনীয় জনবল ও সরঞ্জামাদির তালিকা জাতিসংঘ কর্তৃক পাঠানো হয়৷ ওই তালিকা অনুযায়ী সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সেসময় সব সরঞ্জামাদি মজুদ না থাকায় সেগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করা হয় এবং বাংলাদেশ কর্তৃক সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটটি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের পরে প্রেরণ করা সম্ভব বলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি জাতিসংঘকে জানায়৷

এই ধারাবাহিকতা বাজায় রেখে বাংলাদেশ কর্তৃক যথাযথ সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করে হাঙ্গেরি থেকে ডিসেম্বর ২০১৭-তে একটি প্যাসিভ সিগন্যাল ইন্টারসেপ্টর ক্রয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে ২০১৮ সালের জুন মাসে সম্পন্ন হয়৷ সরঞ্জামটি জাতিসংঘের চাহিদা অনুযায়ী কেনা হয়৷ এবং পরবর্তীতে জাতিসংঘ তাঞ্জানিয়ার একটি সিগন্যাল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে মোতায়েন করায় উক্ত সরঞ্জামটি অদ্যাবধি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছেই অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে৷ আগামীতে জাতিসংঘের চাহিদা অনুযায়ী দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে৷

আল জাজিরার প্রতিবেদন সত্য, আংশিক সত্য, নাকি মিথ্যা?

উল্লেখ্য যে, আল জাজিরা কর্তৃক ওই সিগন্যাল সরঞ্জামটি ইসরায়েলের তৈরি বলে যে তথ্য প্রচার করা হয় তা আদৌ সত্য নয় এবং সরঞ্জামটির কোথাও ইসরায়েলের নাম লেখা নেই৷ সেনাবাহিনীতে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আওতায় এবং অনেকগুলো পর্যায় অনুসরণ করে এসব সরঞ্জামা ক্রয় করা হয়৷ দুর্নীতি করার কোনো সুযোগ নেই এখানে৷

বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের দায়িত্ব গ্রহণের অনেক আগেই এই সিগন্যাল সরঞ্জামটির ক্রয় প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ ২০১৭ সাল থেকে শুরু করে পূর্বতন সেনাবাহিনী প্রধানের সময়কালে সেনাসদরের ক্রয় প্রক্রিয়া অনুসরণ এবং সরকারের অনুমোদন গ্রহণপূর্বক প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তর (ডিজিডিপি) সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে জুন ২০১৮-তে চুক্তি হয়৷ অতএব উক্ত সিগন্যাল সরঞ্জামটির ক্রয় নিয়ে বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধান বা হাঙ্গেরিতে বসবাসকারী তার ভাইয়ের কোনো যোগসূত্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা যে সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, তাতে কোনো সন্দেহ নেই৷ শুধুমাত্র সেনাবাহিনী প্রধানের ভাইয়ের দীর্ঘ সময় ধরে হাঙ্গেরিতে বসবাসের বিষয়টিকে পুঁজি করে এই তথ্যচিত্র নির্মাণ করা হয়েছে ৷ এখানে বলা আবশ্যক যে, সেনাবাহিনী প্রধানের কোনো ভাই বা আত্মীয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কোনো ধরনের অস্ত্র, গোলাবারুদ বা সরঞ্জামাদি সরবরাহ অথবা ক্রয় প্রক্রিয়ার সাথে কখনোই সম্পৃক্ত ছিলেন না৷ এই তথ্যচিত্রটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মতো একটি স্বনামধন্য এবং সুশৃঙ্খল প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং তার পরিবারের উপর কালিমা লেপনের মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর মতো একটি স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানকে আক্রমণ করে দেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির অপপ্রয়াস মাত্র৷

২০১৯ সালের  ২৯ মার্চ সেনাবাহিনী প্রধানের ছেলের বিবাহোত্তর সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন৷ অথচ তার আগেই সেনাবাহিনী প্রধানের ভাই (আনিস এবং হাসান) তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে ষড়যন্ত্রমূলক, পরিকল্পিতভাবে দায়েরকৃত সাজানো ও বানোয়াট মামলা হতে যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই অব্যাহতি পান৷ ফলে ২৯ মার্চ ২০১৯ তারিখে সেনাবাহিনী প্রধানের ছেলের বিবাহোত্তর অনুষ্ঠানে তার কোনো ভাই কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত বা পলাতক আসামি অবস্থায় ছিলেন না, বরং সম্পূর্ণ অব্যাহতিপ্রাপ্ত হিসেবেই তারা ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন এবং উক্ত সময়ে তাদের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা ছিল না৷

এরপর সেনাবাহিনী প্রধান এপ্রিল ২০১৯ এ সরকারি সফরে সিঙ্গাপুর ভ্রমণ শেষে ব্যক্তিগত সফরে মালয়েশিয়া গমন করেন এবং বড় ভাইয়ের বাসায় অবস্থান করেন। অতএব বিষয়টি স্পষ্ট যে, প্রতিবেদনে দেখানো সেনাবাহিনী প্রধানের তার প্রবাসী ভাইয়ের সাথে বিবাহ অনুষ্ঠানে এবং মালয়েশিয়াতে সাক্ষাত এর ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পলাতক আসামির সাথে সাক্ষাত হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে যা একটি নির্লজ্জ অপপ্রচার মাত্র।

এখানে উল্লেখ্য যে, আল জাজিরার প্রতিবেদনটিতে সামি নামের যে ব্যক্তির বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে, তার প্রকৃত নাম সামিউল আহমেদ খান, পিতা: লে. কর্নেল মরহুম আব্দুল বাসিত খান (অব.)। উক্ত সামিকে ইতিপূর্বে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং মিলিটারি পুলিশ কর্তৃক চুরি, সেনাবাহিনীর অফিসারের পোশাক এবং ভুয়া পরিচয়পত্র ব্যবহার করে প্রতারণার অপরাধে বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সকল অপরাধের দায়ে ২০০৬ সালে তাকে বাংলাদেশের সকল সেনানিবাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। উল্লেখিত সামিউল আহমেদ খান বর্তমানে ‘জুলকারনাইন সায়ের খান’ নাম ধারণ করে এবং তার পিতার নাম ‘কর্নেল ওয়াসিত খান’ ব্যবহার করে ভুয়া পরিচয়ে পলাতক অবস্থায় হাঙ্গেরিতে বসবাস করছে। উল্লেখ্য যে, এই প্রতারক, অর্থলোভী এবং জালিয়াত সামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণার অভিযোগে রমনা মডেল থানায় গত ৫ মে ২০২০ তারিখে একটি মামলা (নম্বর ২/৫/২০২০) দায়ের করা হয়, যা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।

মূলত, এই প্রতিবেদন দৃষ্টে দেখা যায় বিভিন্ন সময়ের কিছু খণ্ড খণ্ড ছবি বা দৃশ্য সংযোজন করে একটি অনুমাননির্ভর, অগ্রহণযোগ্য ও প্রমাণবিহীন তথ্য দিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে একটি তথ্যচিত্র সম্পাদনার কাজ করা হয়েছে। উক্ত প্রতিবেদনের প্রায় সম্পূর্ণ বিষয় অসমর্থিত শোনা কথা (হিয়ার সে) নির্ভর এবং তথ্য প্রদানকারীকে অপরপক্ষ কর্তৃক কোনো প্রশ্ন বা জেরার মুখোমুখিও করা হয়নি। এছাড়া সামির মতো একজন প্রতারক ও পলাতক ব্যক্তির নিকট হতে একতরফাভাবে প্রাপ্ত ও সাক্ষ্য হিসেবে অনির্ভরযোগ্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে ভিত্তিহীন তথ্যচিত্র তৈরি করার কারণে এই প্রতিবেদন যে গ্রহণযোগ্যতা, প্রাসঙ্গিকতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখানে আরো উল্লেখ্য যে, উক্ত প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান ও তার পরিবারকে সরাসরি ‘মাফিয়া পরিবার' হিসেবে উল্লেখ ও উপস্থাপনের প্রয়াস নেয়া হয়েছে। একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশের সরকার কর্তৃক আইন অনুযায়ী নিযুক্ত সেনাবাহিনী প্রধান সম্পর্কে সাংবাদিকতার রীতি ও নীতি গর্হিতভাবে এরূপ অপবাদ ও মিথ্যাচার চূড়ান্তভাবে অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত এবং আল জাজিরার মতো একটি সংবাদ মাধ্যমের নিকট হতে যা আদৌ কাম্য নয়।

পেশাগতভাবে অত্যন্ত দক্ষ, সকলের কাছে অতি গ্রহণযোগ্য সেনাবাহিনী প্রধানকে কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়া আল জাজিরা কর্তৃক অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভিত্তিহীন এবং কাল্পনিকভাবে দুর্নীতির সাথে জড়িত করার অপপ্রয়াস যা সেনাবাহিনী ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে।

যা ছিল সেই প্রতিবেদনে

‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার'স মেন’ নামের ঐ প্রতিবেদনে আল জাজিরা সামি (ছদ্মনাম) নামের হাঙ্গেরিতে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তির সহায়তায় হারিস আহমেদ নামের এক ‘আসামী'র পরিচয় উন্মোচন করে৷ হারিস বুদাপেস্টে ‘মোহাম্মদ হাসান' নামে বসবাস করছিলেন৷ গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত সেই ব্যক্তির কথার ওপর ভিত্তি করে তারা ঘুস ও অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে বাংলাদেশে সরকারি ও রাজনৈতিক পদপদবী, কেনাকাটায় দুর্নীতির যোগসাজশের ইঙ্গিত দেয়৷

একইসঙ্গে সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের সহোদর হওয়ায় ঐ ব্যক্তি তার উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগকে ‘কাজে লাগিয়ে' এসব অর্থ উপার্জন করেন বলে অভিযোগ তোলা হয়৷ আহমেদ পরিবারের বাকি সদস্যরাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক আশীর্বাদপুষ্ট, এমন যোগসূত্র তৈরির চেষ্টা করা হয় প্রতিবেদনে৷

প্রতিবেদনে তৃতীয় যে বিষয়টি তুলে ধরা হয়, তা হলো, ইসরায়েলের একটি কোম্পানির কাছ থেকে ফোনের নজরদারির প্রযুক্তি কিনছে বাংলাদেশ৷ ‘পিকসিক্স' নামের ঐ কোম্পানির সঙ্গে ২০১৮ সালে একটি চুক্তির দলিল হাজির করেছে আল জাজিরা৷ হাঙ্গেরিতে একজন আইরিশ মধ্যস্থতাকারীর সহযোগিতায় দুই ইসরায়েলির সঙ্গে একটি বৈঠকের কিছু অংশও তুলে ধরা হয়৷ পিকসিক্স প্রতিষ্ঠা করেছিল ইসরায়েলের কয়েকজন সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা৷ তবে ক্রয় চুক্তিতে সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী দেশের নাম বদলে হাঙ্গেরি উল্লেখ করা হয়েছে৷

এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান