সেনা প্রত্যাহারের পরও বিদেশি সাহায্য চায় আফগানিস্তান
৩ ডিসেম্বর ২০১১গতমাসে বিশ্বব্যাংক এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানায়, বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পরও প্রতি বছর আফগানিস্তানের ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা প্রয়োজন৷ মূলত নিরাপত্তা বাহিনী'র পেছনে খরচ এবং বিভিন্ন বিল মেটাতে এই আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা প্রয়োজন সেদেশের৷
সোমবার জার্মানির বন শহরে অনুষ্ঠিত হবে আফগানিস্তান সম্মেলন৷ আফগান অর্থমন্ত্রী ওমর জাকিলভাল বিশ্বব্যাংকের গবেষণা প্রতিবেদনকে সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের এই গবেষণা আন্তর্জাতিক সহায়তা অব্যাহত রাখার দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে৷ বর্তমানে বন শহরে অবস্থানরত আফগান অর্থমন্ত্রী বলেন, বিদেশি সহায়তার ব্যাপারে আমাদের নিজস্ব বিশ্লেষণ রয়েছে৷ তবে সেই বিশ্লেষণের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের গবেষণালব্ধ ফলাফলের ব্যবধান খুব বেশি নয়৷
২০১৪ সালের পর কাবুলকে যদি নিরাপত্তা খাতে খরচ কমাতে বলা হয়, তাহলে তালেবান জঙ্গিরা আবারো মাথাচাড়া দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷ অন্যদিকে, আফগান সরকার যদি স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা খাতে খরচ কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করে, তবে তা পরোক্ষভাবে জঙ্গিবাদকে উস্কে দেবে৷
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ২০১৪ সালের পর বিদেশি সাহায্য ছাড়া আফগান সরকার সেদেশের সেনা এবং পুলিশ বাহিনীর খরচ মেটাতে সক্ষম হবে না৷ ন্যাটো নেতৃত্বাধীন আইসাফ বাহিনীর সেনারা সেদেশ ত্যাগের পর আফগান বাহিনীর সদস্য সংখ্যা হবে সাড়ে তিন লাখের মত৷
ওমর জাকিলভাল জানান, খরচের কারণেই ২০১৪ সালের পর আফগান বাহিনীকে বর্তমানের আকারে ধরে রাখা সম্ভব হবে না৷ ফলে দীর্ঘমেয়াদে এই বাহিনীর আকার ছোট হয়ে আসতে পারে৷
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০১১ সালে আফগানিস্তান প্রায় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আন্তর্জাতিক সহায়তা পেয়েছে৷ সেদেশ থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর আন্তর্জাতিক সমাজের খরচ কমতে পারে৷ তাসত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সেদেশের মিত্রদেরকে আরো কয়েক বছর আফগানিস্তানকে আর্থিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখতে হবে৷
এদিকে, কাবুলের সাধারণ বাসিন্দারা বন সম্মেলনে তাদের দাবি দাওয়া উত্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন৷ কাবুলবাসী মনে করেন, তাদের দেশ ব্যাপক বিদেশি সাহায্য পেলেও সাধারণ মানুষের অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে না৷ সহিংসতার কারণে বিভিন্ন প্রদেশ ছেড়ে রাজধানীতে আসা আফগানরা মানবেতর জীবনযাপন করছে৷ খাদ্য নেই, পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই৷ আফগানরা তাই চায়, তাদের সাধারণ চাহিদার বিষয়গুলো নিয়ে যেন বন সম্মেলনে আলোচনা হয়৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: জাহিদুল হক