1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সেনা নামিয়ে বিক্ষোভ দমনের চিন্তা ট্রাম্পের

২ জুন ২০২০

অ্যামেরিকায় বিক্ষোভ থামাতে চরম পন্থাই নিতে চান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে অটোপ্সি রিপোর্ট বলছে, কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

https://p.dw.com/p/3d7mC
ছবি: picture-alliance/AP Photo/P. Semansky

বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে অ্যামেরিকা জুড়ে বিক্ষোভ থামাতে শেষ অস্ত্র ব্যবহার করতে চান ডনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রসিডেন্ট বলেছেন, ''প্রতিটি স্টেটের গভর্নরকে বলছি, আপনারা রাস্তায় বিপুল পরিমাণে ন্যাশনাল গার্ড নামান। আপনারা যদি তা না করেন, তা হলে আমি  সশস্ত্র সেনা ও আইনরক্ষকদের রাস্তায় নামাতে বাধ্য হব। তাঁরা এই দাঙ্গা, লুঠতরাজ, হিংসা, সম্পত্তি নষ্ট বন্ধ করবেন।''

বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ ট্রাম্পের কাছে 'ঘরোয়া সন্ত্রাসবাদ' ছাড়া আর কিছুই নয়। তাঁর হুমকি,  ''যাঁরা এই বিক্ষোভের পিছনে আছেন, তাঁদের কড়া শাস্তি হবে এবং দীর্ঘদিন জেল খাটতে হবে।'' ট্রাম্প যখন এই কথা বলছেন, তখনও হোয়াইট হাউসেরবাইরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটাচ্ছে।

একাধিক গভর্নর ট্রাম্পের এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন। ওয়াশিংটন ডিসির গভর্নর জে ইন্সলি বলেছেন, ''বারবার প্রমাণিত হয়েছে, ট্রাম্প শাসন করতে পারেন না। তিনি অযোগ্য। তিনি কেবল মিথ্যা বীরত্ব দেখাতে পারেন। নিজের ভীরুতা ও অযোগ্যতা ঢাকার জন্য তিনি চরম ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন।''

ওরেগনের গভর্নর কেট ব্রাউন বলেছেন, ''আমি বিক্ষোভ থামাতে ন্যাশনাল গার্ড নামাবো না। রাস্তায় সেনা নামিয়ে হিংসা থামানো উচিত নয়।''

রোববার রাত থেকেই বিক্ষোভ পৌঁছে যায় হোয়াইট হাউসের সামনে। রাস্তায় কাঠ, প্লাস্টিকের ডিভাইডার, রোড সাইন নিয়ে এসে আগুন লাগানো হয়। হোয়াইট হাউসের গেটেও পাথর ও মলোটভ ককটেল ছোঁড়া হয়।  অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্টরা যে চার্চে যান, সেটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ট্রাম্পসেই চার্চেও গিয়েছিলেন। ডিডাব্লিউর প্রতিনিধি আলেকজান্দ্রা ফন নামেন তখন সেখানে ছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, ট্রাম্প যাতে সেখানে যেতে পারেন, তার জন্য পুলিশ সমানে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়ে ও গ্রেনেড ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়।

আলেকজান্দ্রা জানিয়েছেন, ''ট্রাম্প ঠিকভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারছেন না বলে প্রশাসনের অনেকে মনে করছেন। এর ফলে তাঁর জনপ্রিয়তা কমবে। তিনি নিজেকে 'ল অ্যান্ড অর্ডার' প্রেসিডেন্ট বলে দাবি করলেও লোকে অন্য কথা ভাবছে। এর ফলে তিনি দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।''

ডি ডাব্লিউ এর আরেক রিপোর্টায় কার্লা ব্লেকার জানিয়েছেন, ''বিক্ষোভকারীদের শ্লোগান ছিলো, 'বিচার না পেলে শান্তি নয়' এবং ফ্লয়েডের বলা শেষ কথা, 'আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না'।''

USA Boston Proteste nach dem Tod von George Floyd | Plakate I Can't Breathe
ছবি: Imago Images/AFLO/K. Hiromi

ফ্লয়েডের পরিবারের অনুরোধে একটি অটোপসি করেছিলেন মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ। তাঁর করা অটপ্সি রিপোর্টে বলা হয়েছে, ফ্লয়েডকে শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি অটোপসি রিপোর্টও একই কথা বলেছে।

ফ্লয়েডের শেষকৃত্য হবে  ৯ জুন, তাঁর শহর হিউস্টনে। সাবেক বক্সিং চ্যাম্পিয়ন ফ্লয়েড মেওয়েদার তাঁর শেষকৃত্যের খরচ দিতে চেয়েছিলেন। ফ্লয়েডের পরিবার তা গ্রহণ করেছেন।

ফ্লয়েডের হত্যার প্রতিবাদে পুরো অ্যামেরিকা জুড়ে বিক্ষোভ চলছে। বেশ কয়েক দশক পরে বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে পুরো অ্যামেরিকা। আর তা থামাতে পুলিশি বাড়াবাড়িও চলছে। গত দুই দিন ধরে ডিডাব্লিউর সাংবাদিকেরাসহ অন্য সংবাদ সংগ্রাহকেরা আক্রান্ত হচ্ছেন।  

মিনিয়াপোলিসে ডিডাব্লিউর সাংবাদিক ও ক্যামেরা অপারেটর পুলিশের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁরা প্রেস জ্যাকেট পরা সত্ত্বেও পুলিশ তাঁদের টার্গেট করে। এই নিয়ে পরপর দুই দিন ডিডাব্লিউর সাংবাদিকরা পুলিশের হাতে আক্রান্ত হলেন।  

শুধু অ্যামেরিকা নয় জার্মানি ও ব্রিটেনেও বিক্ষোভ হচ্ছে। লোকে রাস্তায় নেমে অ্যামেরিকায় বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

জিএইচ/ কেএম (এপি, রয়টার্স, এএফপি)