1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সেকেলে পোশাক পরে সাইকেলের মিছিল

৪ জুলাই ২০১৯

আধুনিক ডিজিটাল যুগে সাবেকী প্রথা ও আচার-আচরণ হারিয়ে যাচ্ছে৷ ব্রিটেনে একদল মানুষ ঐতিহ্য ধরে রাখতে অভিনব এক প্রতিযোগিতায় অংশ নেন৷ বিশ্বের অন্য কিছু শহরেও এমন টুইড রান চালু হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/3LYcx
DW euromaxx plus 10.05.2019 Tweed Run
ছবি: DW/J. Günther

এই সব ‘লেডিজ অ্যান্ড জেন্টেলমেন' লন্ডন শহরে টুইড রান প্রতিযোগিতার জন্য সেজেগুজে প্রস্তুত৷ সম্ভবত বিশ্বের কোথাও এমন অদ্ভুত সাইকেল রেস আর দেখা যায় না৷

এই নিয়ে ১১ বার এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ টম ক্যারাডাইন ও তাঁর ছেলে আন্দ্রে তিন বছর ধরে এই রেসে অংশ নিচ্ছেন৷ পিয়ানোবাদক ও গায়ক হিসেবে টম গত শতাব্দীর বিশ ও ত্রিশের দশকের সময়কাল নিয়ে অত্যন্ত উৎসাহী৷ টুইড রান প্রতিযোগিতায় সেই যুগ আবার ফিরিয়ে আনা হয়৷ টম বলেন, ‘‘অনেক বছর ধরে এই ইচ্ছা ছিল৷ ভিন্টেজ বা সনাতনী সংগীতের ক্ষেত্রে আমার অনেক বন্ধু বহু বছর ধরে এটা করে আসছেন৷ আর আমি সব সময় ব্যস্ত থাকায় করতে পারি নি৷ তিন বছর আগে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, যেভাবেই হোক আমি করবই৷ তখন সময় নষ্ট না করে টিকিট জোগাড় করলাম, কারণ টিকিট দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়৷ তারপর ডায়রিতে তারিখ লিখে রেখে সেখানে পৌঁছানোর অঙ্গীকার করলাম৷''

অংশগ্রহণকারীরা পুরানো আমলের সাইকেল ও টুইড-এর প্রতি ভালবাসা অথবা নির্ভেজাল আনন্দের কারণেই এই প্রতিযোগিতায় যোগ দেন৷ অনেকে আবার নিজেদের পোশাক নিজেরাই তৈরি করেন অথবা নিখুঁতভাবে তার বিন্যাস করেন৷ টম ক্যারাডাইন মনে করেন, ‘‘মনে হয় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে৷ আসলে আমার কাছে আলাদা করে সবই ছিল৷ সবাই রংয়ের এক নির্দিষ্ট বিন্যাস মেনে চলছে, যা মানানসইও হচ্ছে৷''

ঐতিহ্য রক্ষায় সাইকেল মিছিল

এ বছর সাজসজ্জার ক্ষেত্রে কিছু প্রবণতা দেখা যাচ্ছে৷ বিশেষ করে টুপি ও জুতোর বাহার নজর কাড়ার মতো৷ পোশাকের কাপড় অবশ্যই টুইড হতে হবে৷ স্কটল্যান্ডের এই কাপড় যথেষ্ট মজবুত৷ ব্রিটিশ ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে সেটি৷ টম ক্যারাডাইন বলেন, ‘‘এর চেয়ে বেশি ব্রিটিশ হওয়া সম্ভব নয়৷ এটাই ব্রিটিশদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য৷ ব্রিটেনে আমাদের একটা বড় গুণ হলো খামখেয়ালীপনা৷ আমরা সামান্য ছিটগ্রস্ত হতে পারি৷ টুইড প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা কিছুটা পাগলামির সুযোগ পাই৷ কারণ লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে সাধারণত এমন পোশাক পরা সাইকেলের আরোহী দেখা যায় না৷ তাই আমরা একটা অজুহাত পেয়ে যাই৷''

প্রায় ১,০০০ মানুষ ১৯ কিলোমিটার পথে সাইকেল চালান৷ শহরের বিখ্যাত স্মারকগুলি সেই পথে পড়ে৷ যেমন ওয়স্টমিনস্টার সেতু অথবা বাকিংহ্যাম প্রাসাদ৷ ইতোমধ্যে নিউ ইয়র্ক, টোকিও বা সেন্ট পিটার্সবার্গের মতো বিশ্বের বিভিন্ন শহরে টুইড রান চালু হয়ে গেছে৷ অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে৷

বেশ ঘটা করে ও জাঁকজমকের মাধ্যমে সেকেলে পোশাকপরা মানুষগুলি আধুনিক যুগের স্রোতের বিরুদ্ধে সাইকেল চালান৷ প্রথম পর্যায়ের পর বড় আকারের পিকনিক ও চায়ের এলাহি ব্যবস্থা থাকে৷ এই সব রীতিনীতির ব্যাখ্যা করে টম ক্যারাডাইন বলেন, ‘‘চিরায়ত ইংলিশ আফটারনুন টি-র আওতায় ধার বাদ দেওয়া স্যান্ডউইচ থাকতে হবে, তারপর অর্ধেক করে কাটা এবং ক্রিম ও জ্যাম দেওয়া স্কোন আসবে৷ নানা রকমের কেক থাকবে৷ শ্যাম্পেন ও চায়ের পট তো রয়েছেই৷''

একটু চাঙ্গা হয়ে নিয়ে ফিনিশিং লাইনের দিকে যাত্রা শুরু৷ প্রায় ৬ ঘণ্টা পর প্রতি বছরের মতো এক সমাপ্তি উৎসবের মাধ্যমে টুইড রান শেষ হয়৷ সবচেয়ে সুন্দর পোশাক ও সেরা হেলমেটের জন্যও পুরস্কার দেওয়া হয়৷ তবে পুরস্কারের তুলনায় অংশগ্রহণই আসল বিষয়৷

ইয়োসেফিন গ্যুন্টার/এসবি