1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সুমেরু অঞ্চলে বিশ্ব জলবায়ুর গতিপ্রকৃতি পরিমাপের বিশাল উদ্যোগ

৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ঠিক কীভাবে পৃথিবী বদলে দিচ্ছে, তা জানতে হলে বাতাসের স্রোতের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা প্রয়োজন৷ গবেষকরা নানা প্রবণতা পর্যবেক্ষণ করে এক দুষ্টচক্রের বর্ণনা দিচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/4GUP5

ওয়েদার বেলুনগুলি মারিয়ন মাটুরেলির বাতাসের গতিপথ পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক গবেষণার জন্য অত্যন্ত জরুরি৷ বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপট নথিভুক্ত করতে হলে তুলনামূলক তথ্যের প্রয়োজন৷ সে কারণে প্রকল্পের সব আন্তর্জাতিক সহযোগীরাই একেবারে এক ধরনের পরিমাপ যন্ত্র ব্যবহার করেন৷

প্রতিদিন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে হুবহু একই সময়ে ওয়েদার বেলুন আকাশে ওড়ানো হয়৷ বেতার সংকেতের মাধ্যমে যন্ত্রগুলি গ্রাউন্ড স্টেশনে তথ্য পাঠায়৷ মারিয়ন বলেন, ‘‘আমার পরিমাপের জন্য এগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ৩০ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছানোর পথে এই বেলুন সেকেন্ডে পাঁচ মিটার অতিক্রম করে এবং প্রতি সেকেন্ডে পরিমাপের তথ্য পাঠায়৷ অর্থাৎ প্রতি পাঁচ মিটার অন্তর আমরা তথ্য পাই, যা অন্য কোনো যন্ত্র দিতে পারে না৷ এই সব যন্ত্রের উচ্চ হাইট রেজোলিউশন থাকে৷’’

মাটুরেলির গবেষণা পোলার জেটস্ট্রিমের গতি হ্রাসের পরিণতি ব্যাখ্যা করেছে৷ গতি কমার সঙ্গে সঙ্গে সেই স্রোত তার ভৌগোলিক স্থিতিশীলতাও হারাচ্ছে এবং পৃথিবীর চারিদিকে আরও ছড়িয়ে পড়ছে৷ তার ফলে আবার অন্যান্য অঞ্চলেও উষ্ণ ও শীতল বায়ুর মধ্যে সীমানা সরে যাচ্ছে৷ সেই ‘লুপ' বা বক্ররেখা ছোট হলে পৃথিবীর চারিদিকে উচ্চ ও নিম্নচাপ এলাকা ছড়িয়ে দেয়৷

বেলুনে উড়িয়ে সুমেরু অঞ্চলের জলবায়ুর গতিপ্রকৃতি

কিন্তু ‘লুপ' যত বড় হয়, উচ্চ ও নিম্নচাপ এলাকা তত ধীর গতিতে এগোয়৷ তখন দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টিপাত ঘটে এবং সেইসঙ্গে প্রায়ই চরম আবহাওয়া পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়৷

দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চচাপের ফলে খরাও দেখা যায়৷ অন্যদিকে দীর্ঘ সময় ধরে নিম্নচাপ থাকলে চরম বৃষ্টিপাত ঘটে৷ আবহাওয়াবিদ হিসেবে মারিয়ন মাটুরেলি জানালেন, ‘‘জলবায়ু পরিবর্তন নিশ্চিতভাবে বাতাসেরও পরিবর্তন ঘটাচ্ছে৷ বাতাস চলাচলের গতিপ্রকৃতি বদলে যাচ্ছে, উচ্চ ও নিম্নচাপ এলাকা সরে যাচ্ছে৷ এমন উচ্চচাপ সৃষ্টি হচ্ছে, যা বাতাসের স্রোতের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷ উষ্ণ ও আর্দ্র বাতাসের স্রোত সুমেরু অঞ্চলে চলে যাচ্ছে এবং সেই অঞ্চলে সরাসরি উষ্ণায়ন ঘটাচ্ছে৷''

উষ্ণায়নের ফলে সুমেরু অঞ্চলের পারমাফ্রস্ট জমি আরও বেশি গলে যাচ্ছে এবং বাড়তি গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন ঘটাচ্ছে৷ জমির উপর কার্বন-ডাই-অক্সাইড পরিমাপ যন্ত্রেও সেই প্রবণতা ধরা পড়ছে৷ সমুদ্রে ভাসমান বরফ এবং মেরু অঞ্চলের হিমবাহ আরও দ্রুত গলে যাবার কারণে বিশ্ব জলবায়ু শীতল রাখার গুরুত্বপূর্ণ এক উপায়ও হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে৷

কারণ উজ্জ্বল জমাট বরফ এতকাল সূর্যের আলোর প্রতিফলন ঘটিয়ে এসেছে৷ বরফমুক্ত সমুদ্র এবার বাড়তি উত্তাপ ধারণ করবে৷ বাতাসের স্রোতে পরিবর্তন জলবায়ু পরিবর্তনের এক দুষ্ট চক্রে ইন্ধন জোগাচ্ছে৷

টর্স্টেন মেলট্রেটার/এসবি