1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘সুন্দরবন রক্ষায় লংমার্চ'

সমীর কুমার দে, ঢাকা২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩

সুন্দরবন ধ্বংস করে বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের প্রতিবাদে লংমার্চ শুরু করেছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি৷ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বাগেরহাটের রামপাল অভিমুখে লংমার্চ যাত্রা শুরু করে৷

https://p.dw.com/p/19n0L
Long March, Dhaka (Bangladesh); Copyright: DW/Samir Kumar Day
ছবি: DW/Samir Kumar Day

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লংমার্চের উদ্বোধন করেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ৷ এর আগে সকাল থেকেই লংমার্চের সমর্থনে সিপিবি, বাসদ, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল, গণফ্রন্ট, নয়া গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা, ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীসহ বিভিন্ন বাম ছাত্র-যুব সংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যানার-প্লাকার্ড হাতে মিছিল নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমবেত হন৷ উদ্বোধনের আগে সংক্ষিপ্ত এক সমাবেশে মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘এই লংমার্চ দেশ রক্ষার লংমার্চ৷ সুন্দরবন রক্ষার লংমার্চ৷ দেশপ্রেমিক জনতার আন্দোলন এটি৷ তাই দেশের মানুষই এই লংমার্চ সফল করবে৷ এই লংমার্চে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হলে তা প্রতিহত করা হবে৷ জনগণের শক্তি এই সকল দানবকে রুখে দেবে৷'

লংমার্চের উদ্বোধনের পর প্রেসক্লাব থেকে একটি মিছিল বের হয়৷ দুই থেকে তিন হাজার মানুষ এই লংমার্চে অংশ নেন৷ মিছিলটি প্রেসক্লাব থেকে মত্স্যভবন, শাহবাগ, আসাদগেট হয়ে শ্যামলীর উদ্দেশ্যে এগিয়ে যায়৷ সেখান থেকে বাসে উঠে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যায় লংমার্চকারীরা৷ এরপর সাভারের রানা প্লাজায় সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা৷ লংমার্চে অংশগ্রহণকারীদের মানিকগঞ্জে রাত কাটানোর কথা রয়েছে৷

Fotos: Louise Osborne Global Ideas
সুন্দরবন-এ বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ হলে বিস্তীর্ণ এলাকার গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হবেছবি: Louise Osborne

লংমার্চ শুরুর পর জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘যে কোন মূল্যে আমাদের সুন্দরবনকে রক্ষা করতে হবে৷ আর এর জন্য সর্বপ্রথম রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করতে হবে৷' তিনি বলেন, এই বিদ্যুৎ প্রকল্প হলে সুন্দরবনের ভয়াবহ ক্ষতি হবে৷ বিস্তীর্ণ এলাকার গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ এই সুন্দরবন উপকূলীয় মানুষদের ‘মায়ের মতো' ঝড় তুফান থেকে আগলে রাখে৷ তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবেই আমরা এই লংমার্চ শেষ করতে চায়৷ এই কর্মসূচিতে বাধা না দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি৷

লংমার্চে নেতৃত্বে আছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, শিক্ষাবিদ কলামিস্ট আবুল মকসুদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণ মঞ্চের মাসুদ খান, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক কমরেড জোনায়েদ সাকি, তরুণ সংগঠক কল্লোল মোস্তফা, রকিবুজ্জামান রতন, বজলুর রশিদ ফিরোজ প্রমুখ৷

আয়োজকরা জানিয়েছেন, সুন্দরবন রক্ষার স্লোগানে তারা অধিকাংশ পথ পায়ে হেঁটেই যাওয়ার চেষ্টা করবেন৷ মানিকগঞ্জ-ফরিদপুর-মাগুরা-যশোর-খুলনা-বাগেরহাট হয়ে ২৮শে সেপ্টেম্বর রামপাল দিঘরাজে গিয়ে শেষ হবে এই লংমার্চ৷ সেখানে এক সমাবেশের মাধ্যমে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে৷ প্রথম দিন সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে মানিকগঞ্জে রাত্রি যাপন করবেন লংমার্চকারীরা৷ দ্বিতীয় দিন ফরিদপুরে, তৃতীয় দিন যশোরে, চতুর্থ দিন খুলনায় যাত্রা বিরতির পর পঞ্চম দিন রামপালে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হবে৷

প্রসঙ্গত, গত ২০ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার ভারতের সাথে যৌথভাবে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করার চুক্তি করে৷ এই চুক্তি অনুসারে সরকার বাগেরহাটের রামপালে সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়৷ বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির এই চুক্তিকে অসম চুক্তি এবং এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে বলে বিরোধিতা করে আসছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি৷ পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই প্রকল্প বাতিলের দাবি জানিয়ে বেশ কিছু কর্মসূচিও পালন করেছে এই জাতীয় কমিটি৷ এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে এই লংমার্চ কর্মসূচি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য