সিরিয়ায় তুরস্কের হামলা, ইইউ-কে এর্দোয়ানের হুমকি
সিরিয়া সীমান্তে কুর্দি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় হামলা শুরু করেছে তুরস্ক৷ হামলার নিন্দা উপেক্ষা করে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান উলটো হুমকি দিয়েছেন ইইউকে৷ বলেছেন, ‘‘আমরা তাহলে ৩৬ লাখ অভিবাসীকে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেবো৷’’
প্রথমে বিমানহামলা
সিরিয়ার উত্তর-পূর্ব থেকে যুক্তরাষ্ট্র সৈন্য সরিয়ে নেয়ার পরই হামলার প্রস্তুতি শুরু করে তুরস্ক৷ রোববার ট্যাঙ্কসহ তুরস্কের সৈন্য বহরের সিরিয়া সীমান্তের দিকে রওনা হওয়ার খবর জানায় তুর্কি সংবাদ সংস্থা ডিএইচএ৷ তবে হামলা শুরু হয় বুধবার থেকে৷ পদাতিক বাহিনীর হামলার সুবিধার জন্য প্রথমে কুর্দিনিয়ন্ত্রিত সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে বিমান থেকে বোমাহামলা চালানো হয়৷
বহু মানুষ এলাকাছাড়া
তুরস্কের হামলা শুরুর আগে থেকেই শুরু হয় বেসামরিক কুর্দিদের এলাকা ছেড়ে যাওয়া৷ অনেক মানুষ ট্রাক বা অন্য গাড়িতে চড়ে, অনেকে আবার হেঁটেই শুরু করেন নিরাপদ স্থানের দিকে যাত্রা৷
পিছু হঠছে কুর্দি বাহিনী
বুধবার থেকে তুরস্কের পদাতিক বাহিনীও হামলা শুরু করে৷ বৃহস্পতিবার কয়েকটি স্থানে কুর্দিদের নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স (এসডিসি)-এর সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষ হয়৷ বার্তা সংস্থা এপির খবর অনুযায়ী, তুরস্কের পদাতিক বাহিনী এ পর্যন্ত কমপক্ষে একটি গ্রাম থেকে এসডিসি-কে সরে যেতে বাধ্য করেছে৷
বন্দি আইএস যোদ্ধাদের কী হবে?
এদিকে বাদ্রান জিয়া নামের এক কুর্দি নেতা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বন্দি আইএস যোদ্ধাদের নিয়ে তারা চিন্তিত৷ তিনি জানান, তুর্কি হামলার ফলে বন্দি আইএস যো্দ্ধাদের পাহারা দিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে৷ তার আশঙ্কা, এর ফলে আইএস যো্দ্ধারা ছাড়া পেয়ে যেতে পারে৷
হামলার নিন্দা
তুরস্কের এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে অনেক দেশ৷ জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী হাইকো মাস বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷ ইটালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইহি ডি মাইয়ো বলেছেন, ‘‘এ হামলা অগ্রহণযোগ্য৷’’ চীন হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ‘‘সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে৷’’ রাশিয়ার গণমাধ্যম জানাচ্ছে, পুটিন সরকার সিরিয়া ও তুরস্কের মধ্যে সংলাপ আয়োজনের পরিকল্পনা করছে৷
তুরস্ককে ইইউ-র বার্তা
এক সংবাদ সম্মেলনে ইইউ-র এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘ইইরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দিতে ইচ্ছুক সব প্রার্থীর ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে৷ তুরস্ক যদি সত্যিই (এই জোটে) যুক্ত হতে চায়, তাহলে তাদেরও সেই পথ অনুসরণ করতে হবে৷’’
এর্দোয়ানের পালটা হুমকি
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ান ইইউ-র বক্তব্যকে দৃশ্যত আমলেই নেননি৷ জাতীয় সংসদে দেয়া ভাষণে তিনি বলেছেন, ‘‘ওহে ইইউ, জেগে ওঠো৷আমি আবার বলছি, আমাদের এ অভিযানকে যদি তোমরা আগ্রাসন হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করো, আমরা তাহলে দরজা খুলে ৩৬ লাখ অভিবাসীকে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেবো৷’’