সিবিআই তদন্তের দাবি নিহত তৃণমূল কাউন্সিলারের পরিবারের
গত রোববার পানিহাটিতে খুন হয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলার অনুপম দত্ত। বুধবার ছিল তার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান।
এখানেই খুন হন তিনি
এই সেই জায়গা, যেখানে রোববার সন্ধ্যায় অনুপম একটি স্কুটিতে ওঠার পর আততায়ী এসে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন অনুপম। মৃত্যু হয় তার। পুর বোর্ড গঠনের কয়েকদিন আগে কেন মারা হলো তাকে? বুধবার কাউন্সিলারদের শপথের অনুষ্ঠানে ঘুরপাক খেয়েছে এই প্রশ্ন।
অভিযুক্ত ধৃত
এই সেই হোগলার জঙ্গল যেখান থেকে ধরা হয়েছিল অনুপম-হত্যার দায়ে মূল অভিযুক্ত অমিত পণ্ডিতকে। তাকে দীর্ঘ জেরা করে তার সম্পর্কিত ভাই সঞ্জীব পণ্ডিতকে ধরে পুলিশ। সঞ্জীবই অনুপকে হত্যার বরাত দিয়েছিল বলে পুলিশ সূত্র জানাচ্ছে। সঞ্জীব এর আগে একজন ভাড়াটে খুনিকেও এই কাজে লাগিয়েছিল। তবে সে টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
অনুপমের পরিচয়
ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসেছিলেন অনুপম। ২০১৩ সালে তিনি কাউন্সিলার হন। তিনি তারপর থেকে জোর করে জমি নিয়ে প্রমোটারচক্র এবং তোলাবাজির বিরোধিতা করে এসেছেন।
চার বছর আগেও
২০১৮ সালেও একবার একটি বন্ধ কারখানার সামনে তাকে পিটিয়ে মারার চক্রান্ত হয়েছিল। তিনি একটি ফোন পেয়ে সেখানে যান। কিন্তু এক সতীর্থ কাউন্সিলার সেখানে পৌঁছে যাওয়ায় সে যাত্রায় বেঁচে যান অনুপম।
পুর বোর্ড গঠনের আগে
পানিহাটি পুরসভা নির্বাচনে জিতেছিলেন অনুপম। বুধবার নির্বাচিত কাউন্সিলাররা শপথ নিলেন। অনুপম নিতে পারেননি। তার ছবি রাখা ছিল শপথের মঞ্চে। পুর বোর্ড গঠনের আগেই তাকে হত্যা করা হলো।
অনুপমের বাড়িতে
অনুপমের বাড়ি এখন শোকস্তব্ধ। বৃহস্পতিবার ছিল তার শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠান। তার মা বলেছেন, অনেক দুর্ভাগা হলে ছেলের শ্রাদ্ধ দেখতে হয়।
সিবিআই তদন্তের দাবি পরিবারের
অনুপমের স্ত্রী মীনাক্ষী দত্ত দাবি করেছেন, এই খুনের তদন্তের ভার সিবিআই-কে দিতে হবে। তাহলে কি রাজ্যের তদন্তের উপর ভরসা রখতে পারছেন না তিনি? রাজ্য সরকার অবশ্য সিআইডি-র হাতে এই তদন্তভার দিয়েছে। ছবিতে অনুপমের মা ও বাবা।
কেন খুন?
তদন্তে নেমে সিআইডি বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখছে। স্থানীয় মানুষের দাবি, অনুপম স্থানীয় প্রমোটাররাজের বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। অনুপম স্থানীয় দুষ্কৃতীদের বিরোধিতাও করেছিলেন। তিনি পুরসভায় কারো পথের কাঁটা হয়ে উঠেছিলেন কি না, সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। উপরে বন্ধ কারখানার ছবি। এই সব জমির উপর প্রমোটার-চক্রের নজর থাকে।
পুর নির্বাচনের পর
পুরসভা নির্বাচন শেষ হতেই পুরুলিয়ায় কংগ্রেস কাউন্সিলার তপন কান্দু এবং পানিহাটিতে তৃণমূল কাউন্সিলার অনুপম দত্তের হত্যা পশ্চিমবঙ্গে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। তারা দুইটি হত্যার ক্ষেত্রেই তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। তৃণমূল নেতৃত্ব আবার অভিযোগ করেছে, দুইটি ক্ষেত্রেই বিরোধীরা দায়ী।