1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সিডর দুর্গতদের কান্না থামেনি

রিয়াজুল ইসলাম১৪ নভেম্বর ২০০৮

১৫ই নভেম্বর৷ গত বছর এদিন সিডর নামে এক ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ লন্ডভন্ড করে দিয়েছিলো বাংলাদেশের গোটা দক্ষিণাঞ্চল৷ ২৪০ কিলোমিটার বেগে আসা জলোচ্ছাসের তোড়ে ভেসে গিয়েছিলো বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা৷

https://p.dw.com/p/Fv7X
সিডর কেড়ে নিয়েছে সবকিছু, আর তাই রাস্তার পাশে অস্থায়ী নিবাসে..ছবি: DW

এক বছর পার হলেও সেখানকার লাখ লাখ দুর্গত মানুষ এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন সিডরের যাতনা৷

সিডর, যেন এক ভয়াবহ দুস্বপ্নের নাম৷ দক্ষিণাঞ্চলের হাজারো মানুষের ঘুম যেন কেড়ে নেয় সেদিনের ভয়াবহ সেই স্মৃতি৷ লাখো মানুষের জীবনে এখনও এক অভিশাপের নাম যেন সিডর৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র মিজানুর রহমান৷ সিডর কেড়ে নিয়েছিলো তার অতি প্রিয় বাবা মাকে৷ সাথে আরও কেড়ে নিয়েছে নিকটাত্মীয়দের অনেককে৷ ভয়াবহ সেই দিনটির পর এক বছর পার হলেও সে স্মৃতি কি কখনোই ভুলতে পারবে সে? এমনি আরও অনেকে রয়েছে যাদের জীবনে সিডর এখনও একটি দগদগে ঘা যা কখনোই শুকাবে না৷

Bildgalerie Zyklon Sidr in Bangladesch Bild 3
নামমাত্র সাহায্য মিললেও তাতে কোন পরিবর্তন হয়নিছবি: DW

তেমন আরেকজন হলেন ৪৫ বছরের মনোয়ারা বেগম৷ একসময় তার সবই ছিলো৷ ১৩টি দুধেল গাভীর মালিক ছিলো মনোয়ারার পরিবার৷ দুধ বিক্রি করেই বেশ স্বচ্ছলভাবে চলছিলো তার জীবন৷ কিন্তু ১৫ই নভেম্বরের সে ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাস ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে তার সবগুলো গাভী৷ জলোচ্ছ্বাসের সে তীব্র স্রোতে মনোয়ারার সুখও যেন ভেসে গেছে৷ এখন মনোয়ারা রাস্তার পাশে মাটি কাটেন৷ সারাদিনের পরিশ্রমের বিনিময়ে জোটে মাত্র তিন কেজি চাল৷ পরিবারের জায়গা হয়েছে ছোট্ট একটা ঝুপড়ি ঘরে৷

সিডরের পর সরকার ও বেসরকারী সংস্থাগুলো সাহায্যের কথা বলে মুখে ফেনা তুললেও বাস্তবতা কিন্তু ভিন্ন৷ দুর্গত মানুষগুলো এখনও লড়ে যাচ্ছে জীবনের সাথে৷ নামমাত্র সাহায্য মিললেও তাতে কোন পরিবর্তন হয়নি৷ সরকারের পক্ষ থেকে দুর্গতদের পুনর্বাসনের কথা বলা হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি৷ সাহায্য সংস্থা অক্সফামের তথ্য মতে সিডর আক্রান্ত এলাকাগুলোতে মনোয়ারার পরিবারের মত দুই লাখ ৭৬ হাজার পরিবার রয়েছে যাদের কাছে তেমন কোন সাহায্য আসেনি৷

Bildgalerie Zyklon Sidr in Bangladesch Bild 5
মনে হচ্ছে কোন ডাইনোসর মাড়িয়ে দিয়েছে গাছগুলোকে ...ছবি: DW

বরগুনা জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাফায়েত হোসেন বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন সিডর দুর্গতদের জন্য গত বছর ৬০টি নতুন আশ্রয় কেন্দ্র তৈরী করা হয়েছিলো৷ কিন্তু তা এতই স্বল্প সংখ্যক যে দুই তৃতীয়াংশ লোক এখনও আশ্রয়হীন অবস্থায় রয়েছে৷ তিনি বলেন, আমাদের যদি টাকা দেয়া হতো তাহলে আমরা এক মাসের মধ্যেই সব বাড়ী তৈরি করে দিতে পারতাম৷

সিডরের পর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ২২০ কোটি ডলার সাহায্য চাওয়া হয়েছিলো৷ সাহায্যের অনেক প্রতিশ্রুতিও মিলেছিলো৷ কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে সে প্রতিশ্রুত সাহায্যের মাত্র এক চতুর্থাংশ এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য