নোয়াখালীর জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে বিবস্ত্র করে নারীকে নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করে তা ইন্টারনেটে আপলোড করার পেছনে ‘ষড়যন্ত্র থাকতে পারে’ বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মন্তব্য প্রসঙ্গে পাঠক রায়ান রশিদ খান বলেছেন, ‘‘সরকার তো সবকিছুতেই ষড়যন্ত্রের গন্ধ পায়৷’’ তার সঙ্গে একমত পাঠক নাজিম মুহাম্মদও৷
মোশারফ হোসেন লিখেছেন, ‘‘ষড়যন্ত্র হোক আর যা-ই হোক নির্যাতন তো করা হয়েছে৷ সুতরাং এটা একটা অপরাধ৷ সবচেয়ে বড় অপরাধ সবকিছুকেই রাজনৈতিক রং দেওয়া৷’’
শাহ জামাল হায়দার ধর্ষকের বিচার দাবি করেছেন৷ পাঠক অপু ভৌমিকসহ অনেকেরই এই দাবি৷
-
ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি
হাতাহাতি
ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে পুলিশের মুখোমুখি ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীরা৷ ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে মঙ্গলবার ১২টার দিকে শাহবাগে জাদুঘরের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা৷ এরপর তাদের সঙ্গে যোগ দেন প্রগতিশীল বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মী, লেখক, কবি, শিল্পী, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও নারী অধিকারকর্মীরা৷
-
ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি
পুলিশের ব্যারিকেড
বেলা সোয়া ১টার দিকে বিক্ষোভকারীরা শাহবাগ মোড় থেকে কালো পতাকা মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা ঘুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা করলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে পুলিশ তাদের আটকে দেয়৷ এ সময় পুলিশের সাথে মিছিলকারীদের হাতাহাতি হয়৷ পরে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করলে ছাত্র ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হন৷
-
ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি
মঙ্গলবারের বিক্ষোভ থেকে ধর্ষক ও নিপীড়কদের শাস্তির পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের পদত্যাগও দাবি করা হয়৷
-
ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি
স্লোগান
‘ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘ধর্ষকের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘যে রাষ্ট্র ধর্ষণ পোষে, সেই রাষ্ট্র চাই না’, ‘আমার বোনকে ধর্ষণ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘নিপীড়ক যেখানে, লড়াই হবে সেখানে’- ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছিল শাহবাগ ও তার আশেপাশের এলাকা৷
-
ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি
সঙ্গীকে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে
ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য মাহমুদা দীপা বিক্ষোভ মিছিলের এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন৷ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন সঙ্গীরা৷
-
ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি
সোমবার থেকে বিক্ষোভ
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও রবিবার সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে সোমবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণ ও নিপীড়ন বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়৷ ঢাকায় এমন এক বিক্ষোভে অংশ নেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর৷ এই সময় তিনি বলেন, ‘‘এই গণধর্ষণের ঘটনা দেশের আইনি ব্যবস্থার মুখোশ খুলে দিচ্ছে৷ আজকে এই আওয়ামী লীগ দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্রের সব বিভাগে দুর্বৃত্তায়ন করেছে৷’’
-
ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি
মশাল মিছিল
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণবিরোধী মশাল মিছিল বের করে ছাত্র ফেডারেশন৷
-
ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি
অবস্থান কর্মসূচি
ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সোমবার রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন৷ মঙ্গলবারও তাদের দেখা গেছে৷
-
ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি
উত্তরায় অবরোধ
উত্তরার হাউজ বিল্ডিং এলাকায় মঙ্গলবার অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা৷
-
ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি
হাতে হাত
উত্তরায় গণজমায়েতে হাতে হাত রেখে আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেন অনেকে।
-
ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি
যানজট
আন্দোলনের কারণে উত্তরায় যানজট দেখা দেয়৷
-
ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি
একাত্মতা প্রকাশ
ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী তাবারক হোসেন ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিতে মোহাম্মদপুর থেকে শাহবাগ গিয়েছিলেন৷
-
ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি
শিশুসহ অংশগ্রহণ
এক শিক্ষার্থী শিশুসহ ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন৷
লেখক: সাজ্জাদ হোসেন (ঢাকা)
তবে পাঠক মুশফিকুর রহমান মনে করেন, সরকার চাইলে ধর্ষণ বন্ধ করতে পারে৷ উদাহরণ হিসেবে তিনি অ্যাসিড নিক্ষেপের প্রসঙ্গ তুলে ধরে লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশে অ্যাসিড নিক্ষেপ যখন অনেক বেড়ে গিয়েছিল, সে সময়ের (এরশাদ) সরকার তা কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে৷’’
এদিকে পাঠক শাহ আনিস সংবাদ মাধ্যম ও জনগণের প্রশংসা করে লিখেছেন, ‘‘ধর্ষণের এত ঘটনা সামনে আসার পর বোঝা গেল বাংলাদেশে মিডিয়া স্ট্রং হচ্ছে আর জনগণ ভয়, লজ্জা না পেয়ে রিপোর্ট করছে৷’’ পাঠক আনিসের মন্তব্যের নীচে আহমেদ জুয়েল অবশ্য লিখেছেন, ‘‘ধর্ষণের খবর যাতে প্রচার না হয় সেজন্য সংবাদ মাধ্যমের উপর কড়াকড়ি শুরু হয়ে যাবে৷’’
পাঠক মনিরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘ধর্ষকের বিচারের কাঠগড়ায় এই নরপশুদের পক্ষেও যুক্তি আসবে৷ ভিক্টিমকে কটুভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করবে ধর্ষকের আইনজীবী৷ মেয়েটাও বর্ণনা দেবে লজ্জায় মরতে মরতে৷ দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, এমনকি বছর গড়িয়ে গেলেও বিচার কার্যকর হবে না৷ এখন পর্যন্ত একটা বিচারও কর্যকর হয়নি৷’’
মাহমুদুল হাসান আলম মনে করেন, ‘‘পুলিশ যদি এভাবে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকে বাধা দিতে থাকে, তাহলে বাংলাদেশে পুলিশ ধর্ষকদের পক্ষে- এ কথাটাই সুপ্রতিষ্ঠিত হবে৷’’
‘‘ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন যখন সরকারবিরোধী রূপ নেয় তখন তো পুলিশ বাধা দিবেই,’’ এই মন্তব্য সাগর সরদারের৷
সৈয়দ আবুবকরের প্রশ্ন, ‘‘সারাদেশ আজ ধর্ষকের বিরুদ্ধে সরব, প্রধানমন্ত্রী নীরব কেন?’’
তবে শাহনেওয়াজ সমালোচনামূলক মন্তব্য না করে দেখিয়েছেন ধর্ষণ এবং নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করার উপায়৷ তার মতে, ‘‘পাড়াভিত্তিক সাংস্কৃতিক চর্চা, লাইব্রেরি সংস্কৃতির জাগরণ, খেলাধুলা, সিনেমা, চিত্তবিনোদনের মাধ্যমে সুস্থ সামাজিক বিকাশের পরিকল্পিত বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে ধর্ষণ বন্ধ করা সম্ভব৷’’
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী