1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সামনে ভোট, কেজরিওয়ালের 'ফ্রি' রাজনীতি

স্যমন্তক ঘোষ নতুন দিল্লি
২০ জানুয়ারি ২০২০

মাস ঘুরলেই দিল্লিতে ভোট। তার আগে বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় সিদ্ধান্তের কথা জানালেন রাজধানীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্কও।

https://p.dw.com/p/3WT3V
ছবি: Getty Images/AFP/S. Hussain

এত দিন মহিলাদের ভাড়া গুনতে হত না বাসে। সমস্ত সরকারি বাসে মেয়েদের বিনামূল্যে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তিনি। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নতুন প্রতিশ্রুতি-- দ্বিতীয়বার তাঁর নেতৃত্বে সরকার তৈরি হলে ছাত্রছাত্রীদের বাস ভাড়া দিতে হবে না। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সাধারণ মানুষ একে স্বাগত জানালেও, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের বক্তব্য, এ সমস্ত করে সস্তা জনপ্রিয়তা পাওয়ার চেষ্টা করছেন কেজরিওয়াল।

২০১৫ সালে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে মেয়েদের জন্য বিনা পয়সায় বাস ভ্রমণের সুযোগ করে দিয়েছিলেন কেজরিওয়াল। একই সঙ্গে ঘোষণা করেছিলেন ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের বিল দিতে হবে না। তার উপরে বিদ্যুৎ খরচ করলে টাকা দিতে হবে। জলের ক্ষেত্রেও একই কাজ করেছেন তিনি। মাসে বাড়ি পিছু ২০ হাজার লিটার জল বিনামূল্যে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। তার বেশি জল খরচ করলে কর দিতে হয়। এ বার সেই তালিকাতেই যুক্ত হল ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে বাস ভ্রমণ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দিল্লির এক বিজেপি নেতার মন্তব্য, কেজরিওয়াল যে ভাবে একের পর এক জনপ্রিয় নীতি নিয়ে চলেছেন, তাতে এই মুহূর্তে ভোট হলে বিজেপি ১৫টি আসনও জিততে পারবে না। কারণ কেজরিওয়ালের জনপ্রিয় পদক্ষেপগুলিকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কোনও নেতা আপাতত দিল্লিতে নেই। কেবল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখ দেখিয়ে এর সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব হবে না।

দিল্লি বিজেপির আর এক নেতা সলিল নন্দি অবশ্য বলেন, ''একেই বলে সস্তা ভোটের রাজনীতি। এ ভাবে অর্থনীতিকে ধ্বংস করার অধিকার কেজরিওয়ালকে কে দিয়েছে?''

দিল্লির আপ নেতৃত্ব অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর নতুন ঘোষণায় খুশি। আপ নেতা অনুপ ঠাকুরের বক্তব্য, ''কেন্দ্রে মোদী সরকার বড়লোকদের কথা ভেবে নীতি প্রনয়ণ করে। কেজরিওয়াল ঠিক তার উল্টো কাজ করেন। দিল্লিতে যে মহিলারা বাসে চড়েন, তাঁরা নিম্ন এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের। বাস ভাড়া বাঁচলে তাঁদের প্রভূত উপকার হয়। এ বার আমাদের লক্ষ্য স্কুল কলেজের সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা। তাদের টিকিটের দাম মকুব করলে সরকারের ব্যাপক কোনও ক্ষতি হবে না। কিন্তু সাধারণ মানুষের সুবিধা হবে।'' আপের বক্তব্য, শুধু বাস ভাড়াই নয়, আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছেন, দিল্লির মহিলাদের আরও বেশি সুরক্ষা দিতে, প্রতিটি মহল্লায় একজন করে মার্শাল রাখা হবে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এই প্রস্তাবটিও বিপুল সাড়া ফেলেছে।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বাস ভাড়া মকুবের মতো সস্তা রাজনৈতিক লোভ না দেখালেও কেজরিওয়াল এ বারের ভোটে ভালই ফলাফল করবেন। সরকারি স্কুলগুলিকে তিনি যে জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন এবং প্রতিটি এলাকায় যে ভাবে মহল্লা ক্লিনিকের ব্যবস্থা করেছেন, তাতে এমনিই দিল্লিবাসী খুশি। এগুলি জরুরি কাজ। বাস ভাড়া মকুবের মতো রাজনীতি না করলেও কোনও ক্ষতি ছিল না। রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুগত হাজরার বক্তব্য, ''এ ধরনের সস্তা রাজনীতি একেবারেই অভিপ্রেত নয়। এই ফ্রি রাজনীতির কোনও শেষ নেই। দরকার পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতি। যাদের দরকার তাদের দেওয়া হোক, সকলকে এ ধরনের সুযোগ দেওয়ার কারণ নেই, প্রয়োজনও নেই। মনে রাখা দরকার, সরকার মানুষের করের টাকা এ ভাবে নষ্ট করতে পারে না।''

ডয়চে ভেলের দিল্লি প্রতিনিধি স্যমন্তক ঘোষ
স্যমন্তক ঘোষ ডয়চে ভেলে, দিল্লি ব্যুরো