সহজ জীবনযাপনের শিল্প
প্রতি বছরের মতো এবারও জার্মানির কোলন শহরে বসেছে ইন্টারনাৎসোনালে ম্যোবেল মেসে (আইএমএম) বা আন্তর্জাতিক ফার্নিচার মেলা৷ ছবিঘরে দেখে নিন এই মেলায় প্রদর্শিত কিছু অভিনব ডিজাইন৷
গল্প বলা তাঁবু
দূরের কোনো দেশের কথা মনে করিয়ে দেয়া, কোনো ইচ্ছে পূরণের প্রতীক, কোনো স্বপ্ন, কোনো সংস্কৃতিকে তুলে ধরে – এমন তাঁবুতে বাস করা মন্দ কী! আলেকসান্ডার সাইফ্রাইড অসম্ভব সুন্দর এই ‘কারগাহ তাঁবু’ তৈরি করেছেন উত্তর আফগানিস্তানের এক ধরণের ঘরের আদলে৷ জার্মান কোম্পানি রিচার্ড লাম্প্যার্টের জন্য নির্মাণ করা এই অভিনব ঘরটির পেছনের ভাবনাটা হলো, যেখানে তাঁবু ফেলা যায়, সেখানেই বাস করতে পারেন আপনি৷
যেন স্বপ্ন দেখছি...
জেন ভরথিংটন ডাচ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান লেওলুক্সের জন্য তৈরি করেছেন সোফার মতো এই দোলনাটি৷ তাঁর এই ডিজাইন কোলনের আন্তর্জাতিক ফার্নিচার মেলায় ‘ইন্টেরিয়র ইনোভেশন’ অ্যাওয়ার্ড জিতেছে৷ মেলায় পুরো জানুয়ারি মাস জেনের এই স্বপ্নের ঘোর লাগানো সোফা প্রদর্শিত হবে৷
সময় পেরিয়ে...
এমন চেয়ারের আদি ডিজাইনার চার্লস এমেস এবং তাঁর স্ত্রী রে৷ ডিজাইন কবে করা হয়েছিল ৬০ বছরেরও বেশি আগে! পরবর্তীতে অন্য ডিজাইনাররা নিজেদের কল্পনার তুলির আঁচড়ে চার্লস আর রে দম্পতির সৃষ্টিকে নতুন জীবন দিয়েছেন বহুবার৷ তার দিয়ে তৈরি ছবির এই চেয়ারগুলোও চার্লস-রে দম্পতির কাজ থেকে প্রেরণা নিয়েই করা৷ ফার্নিচার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ভিত্রা-র জন্য দেখতে সহজ অথচ চমৎকার ডিজাইনটি করেছেন ডিটার থীল৷
ডেনিশ আকর্ষণ
মেলার গত আসরে তাঁরা ছিলেন না৷ সবাই খুব মিস করেছেন তাঁদের৷ তবে এবার স্ক্যান্ডিনেভিয়ান ডিজাইন নিয়ে পূর্ণ মহিমায় ফিরে এসেছেন গুবি, মুটো, নরমান কোপেনহাগেনের মতো অনেকে৷ ওসব দেশের ফার্নিচারের বিশেষ একটা বিশেষত্ত হলো, সাধারণভাবে খুব সুন্দর আসবাবগুলো ছোট কোনো ঘরেও ব্যবহার করা যায়৷ এই সোফাগুলোই দেখুন, কাঠ আর অন্য কিছু প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি করা সোফাগুলোকে আকারে একেবারেই বড় বলা যাবে না৷
আলোর মজা
ঘটনাক্রমে এই আসবাবপত্রের ডিজাইনারও ডেনিশ এবং এটিও খুব পুরোনো৷ ডিজাইনারের নাম ভ্যার্নার পান্টন৷ গত প্রায় ৫০ বছর ধরে কোলন আন্তর্জাতিক ফার্নিচার মেলায় বেশ নাম করেছেন তিনি৷ তাঁর ডিজাইন করা ‘ফান’ বা ‘মজা’ নামের ল্যাম্পটি আজও ‘বেস্ট সেলার’৷
সবুজ বাস
লতানো গাছের আদলে বাতি৷ সবুজ লতা-পাতার পাশে সাদা ফুল, ফল হয়ে জ্বলন্ত এই বাতি এবারের আন্তর্জাতিক ফার্নিচার মেলার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে৷ আলোর সঙ্গে ক্যানাডিয়ান নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বোচির নামও ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র৷
সবুজ নিদ্রা
ইটালিয়ান ডিজাইনার কাপো ডি’অপেরার ডিজাইন করা এই বিছানা দেখলে কি মনে হয়, প্রচুর টাকা খরচ করে চোখধাঁধানো কোনো শয্যা তৈরির কোনো মানে আছে? কাপো আসলে বুনো পরিবেশের ছিমছাম একটা শয্যাও যে মুগ্ধ করতে পারে, তা-ই দেখাতে চেয়েছেন৷ বিছানার চাদর এলোমেলো৷ দেখে মনে হয় এই বুঝি কেউ কয়েক মুহূর্তের জন্য বিছানা ছেড়ে গেলেন, এক্ষুনি আবার ফিরে আসবেন৷
একই উৎস থেকে
সার্বিয়ার ডিজাইনাররা এলইডি প্রযুক্তিকে আরেকটু এগিয়ে নিয়ে এমন এক লাইট তৈরি করেছেন যার অভাব মেটাতে গেলে হয়ত একই ঘরে অনেকগুলো লাইট ব্যবহার করতে হবে৷ এই বাতির উৎস একটাই৷ এক জায়গা থেকেই বেরিয়েছে অনেকগুলো বাতি৷ দামও কিন্তু অনেক৷ ৫০ হাজার ইউরো!
ভবিষ্যতে এমন হবে?
এবারও মেলায় এক তরুণ ডিজাইনারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল৷ তাঁর কাজ ছিল একটি পূর্ণাঙ্গ ঘরের ইন্টেরিয়র ডিজাইন করে দেখানো৷ ডেনিশ-ইংলিশ ডিজাইনার লুইস ক্যাম্পবেল দারুণ কাজ দেখিয়েছেন৷ আইডিয়াটা চমৎকার৷ একটই বিশাল ঘর৷ এক ঘরেই শোবার ঘর, খাবার ঘর, রান্নাঘর – সব৷ একেক ঘরের ডিজাইন এমনভাবে করা যাতে একই ঘর অন্য ঘরের মতোও ব্যবহার করা যায়৷ এই রান্নাঘরটাই দেখুন৷ দেখে কেমন ওয়ার্কশপ ওয়ার্কশপ মনে হয় না!