1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইংরেজি বনাম মাতৃভাষা

অনিল চট্টোপাধ্যায় নতুন দিল্লি
১০ আগস্ট ২০১৪

সর্বভারতীয় পদে নিয়োগের জন্য পরীক্ষা নিয়ে থাকে ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন৷ পরীক্ষার্থীদের ধারণা, যাঁরা ইংরেজি ভাষায় উত্তর লেখেন তাঁরা বাড়তি সুবিধা পান৷ তাই মাতৃভাষায় পরীক্ষা দিতে দেবার সুযোগ দিতে হবে – এই দাবি উঠেছে৷

https://p.dw.com/p/1Crrd
Symbolbild Lebensentscheidungen englisch
প্রতীকী ছবিছবি: Fotolia

ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভেস কমিশন আইএএস, আইএফএস, আইপিএস এবং অন্যান্য সর্বভারতীয় পদে নিয়োগের জন্য সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা নিয়ে থাকে৷ কিন্তু সে পরীক্ষা শুধু ইংরাজিতে কেন? প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র হিন্দি বা মাতৃভাষায় নয় কেন? এই প্রশ্ন ও মাতৃভাষার পরীক্ষা দিতে দেওয়ার দাবিতে ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তায় নেমেছে৷ তার জেরে উত্তাল হয়ে উঠেছে সংসদ৷ এই দাবির সমর্থনে এগিয়ে এসেছে সব রাজনৈতিক দল৷ চেপে ধরেছে মোদী সরকারকে৷ দাবি তুলেছে সিভিল সার্ভিসেস অ্যাপটিটিউড টেস্ট সংক্ষেপে সি-স্যাট পরীক্ষা ব্যবস্থায় সংশোধন করার জন্য৷

বলা বাহুল্য, এই পরীক্ষায় যে ধরণের প্রশ্ন আসে তাতে যাঁরা ইংরেজি মিডিয়াম স্কুল থেকে আসা বা ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিকালের ছাত্র-ছাত্রীরা হিন্দি বা অন্য ভারতীয় ভাষার পরীক্ষার্থীদের চেয়ে বেশি সুবিধা পেয়ে থাকেন, এমনটাই অভিযোগ৷ কারণ সি-স্যাট পরীক্ষায় দুটি পেপারের মধ্যে একটা পেপার থাকে ‘ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ কম্প্রিহেনশন' উৎকর্ষের ওপর যার সোজা অর্থ পরীক্ষার্থীর ইংরেজি জ্ঞান কতটা যাচাই করা৷ এই অংশে প্রাপ্ত নম্বর সামগ্রিক নম্বরের সঙ্গে যোগ হয়৷ এর ফলে ইংরেজি এবং অ-ইংরেজি ভাষীদের মধ্যে একটা অসাম্য তৈরি হচ্ছে৷ এর প্রতিবিধানে সংসদের ভেতর ও বাইরে থেকে আসা চাপের মুখে বিড়ম্বনায় পড়েছে মোদী সরকার৷

সরকার যা বলছে

তড়িঘড়ি একটা সমাধানসূত্র হিসেবে সরকার আশ্বাস দিয়েছে যে, মেধা বা যোগ্যতা যাচাইয়ের সময় ইংলিশ কমপ্রিহেনশন স্কিলে পাওয়া নম্বর মোট নম্বরের সঙ্গে যুক্ত হবে না৷ শুধু তাই নয়, ২০১১ সালে যারা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ফেল করেছিল, তারা ১০২৫ সালে আবার পরীক্ষায় বসতে পারবে৷

উল্লেখ্য, ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন নতুন সিস্টেমে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা চালু করে ২০১১ সালে৷ নতুন সিস্টেমে ইংরেজি ভাষার দক্ষতা পরীক্ষা দিযে যারা পাস করতে পারেনি, তারা আবার পরীক্ষায় বসতে পারবে৷ তবে সিভিল সার্ভিসের পরীক্ষার নতুন সিস্টেম ঢেলে সাজানো সময়সাপেক্ষ ব্যাপার৷ এ জন্য সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা জরুরি৷ ইংরেজি বনাম মাতৃভাষার মধ্যে কোনো বৈষম্য করা হয় না৷ সংবিধানের অষ্টম তপশিলভুক্ত সবকটি ভারতীয় ভাষাকে এক চোখেই দেখা হয়৷

প্রসঙ্গত, ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক পরীক্ষায় থাকতো দুটি পেপার৷ একটি সাধারণ পেপার,বা জেনারেল স্টাডিজ, অন্যটি ঐচ্ছিক৷ ঐচ্ছিক পেপারে ২৩টি বিষয় থাকতো৷ তার মধ্যে যে কোনো একটি বেছে নেয়া যেত৷ নতুন ব্যবস্থায় ঐচ্ছিক পেপারের বদলে এসেছে নতুন পেপার, যার মধ্যে থাকছে বক্তব্য বোঝানোর ক্ষমতা, যোগাযোগ দক্ষতা, বক্তব্যকে যুক্তি দিয়ে বোঝানো, মানসিক যোগ্যতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, সমস্যা বিশ্লেষণ ও সমাধানের ক্ষমতা, সাধারণ গণিত জ্ঞান ইত্যাদি৷

শিক্ষা সমাজ যা বলছে

শিক্ষা মহল বলছে, প্রশাসনিক স্তরে কাজ করতে গেলে ইংরাজি বা হিন্দিতে দক্ষতা দরকার৷ বিশেষ করে ইংরেজি আজকাল ভারতে আর বিদেশি ভাষা হিসেবে গণ্য করা হয় না বললেই চলে৷ শুধু দেশের ভেতরেই নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও এটা একটা যোগাযোগের ভাষা৷ জার্মানি বা জাপানে অবশ্য ইংরাজি ভাষা না জানার জন্য প্রশাসনিক কাজে কোনো অসুবিধা হয় না৷ কারণ জার্মানি বা জাপান বহু-ভাষাভাষী নয় বা সেখানে সাংস্কৃতিক বিবিধতা নেই, যেটা ভারতে আছে৷ তবে হ্যাঁ, সমতা বজায় রাখতে ইংরাজি বা হিন্দি ভাষীদের জন্য লিঙ্ক ল্যাঙ্গুয়েজ হিসেবে একটি আঞ্চলিক ভাষা শেখাতে বাধা নেই৷ নাহলে মাতৃভাষার প্রতি যে অবিচার করা হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য