‘সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে খালেদার বৈঠক’ নিয়ে উত্তপ্ত রাজনীতি
৭ ডিসেম্বর ২০১৪বিএনপি'র পক্ষ থেকে বৈঠকের কথা অস্বীকার করা হয়েছে৷ তবে এই নিয়েই বাংলাদশের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ সৃষ্টি হয়েছে৷ চলছে বিবৃতি, পাল্টা বিবৃতি৷
সংবাদ মাধ্যম বলছে, খালেদা জিয়া বৃহস্পতিবার রাত নয়টার পরে তাঁর গুলশানের অফিসে কয়েকজন বর্তমান এবং সাবেক কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন৷ গণমাধ্যমে কর্মকর্তাদের নাম পরিচয় এবং ভিডিও ফুটেজ প্রকাশিত হলেও বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা জানাতে পারেনি৷
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে পূর্বনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওই বৈঠক নিয়ে কথা বলেন৷ তিনি জানান, ‘‘খালেদা জিয়ার সঙ্গে ওই বৈঠকে অংশ্রগহণকারীদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে৷'' তিনি খালেদা জিয়াকে ‘গভীর রাতের ষড়যন্ত্র' ত্যাগের পরামর্শ দেন৷
এরইমধ্যে ওই বৈঠক নিয়ে তদন্ত শুরু হয়ে গেছে৷ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল শনিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, ‘‘বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী গোপন বৈঠক করেছেন তাঁদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সরকারের কাছে রয়েছে৷ তদন্ত চলছে৷ তদন্ত শেষে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে৷'' তিনি বলেন, ‘‘গোপন বৈঠক সম্বন্ধে গোয়েন্দারা আগেই জানত৷'' এক্ষেত্রে গোয়েন্দাদের কোনো ব্যর্থতা ছিল না বলে দাবি করেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী৷
সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘‘সরকার উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রে উসকানি দেয়ার মামলায় খালেদা জিয়াই হবেন প্রধান আসামি৷'' তিনি দাবি করেন, ‘‘বিএনপির এই ষড়যন্ত্র নতুন কিছু নয়৷ উত্তরায় মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বে ২০০৬ সালেও এমন বৈঠক হয়েছে৷'' প্রশাসনের কাছে জনগণ নিরপেক্ষ আচরণ আশা করে উল্লেখ করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘‘তাঁদেরকে তাঁদের কাজই করতে হবে৷ গভীর রাতে বৈধ সরকারকে উৎখাতে ষড়যন্ত্র করা তাঁদের কাজ নয়৷ এটি অপরাধ৷ এই অপরাধ কেবল তাঁরাই করেননি৷ সরকার উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে এই মামলায় প্রধান আসামি হবেন খালেদা জিয়াই৷''
অন্যদিকে শনিবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, ‘‘খালেদা জিয়ার সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের কোনো বৈঠক হয়নি৷ ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যাওয়ার নজির বিএনপি-র নয়, বরং তা আওয়ামী লীগের৷''
বৃহস্পতিবারের বৈঠক নিয়ে গণমাধ্যমের খবরের কোনো ভিত্তি নেই দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘‘গুলশানের কার্যালয়ে সব সময় মিটিং হয়৷ প্রতিদিন দলের উপদেষ্টারা আসেন৷ কিন্তু বৃহস্পতিবারের মিটিং নিয়ে পত্র-পত্রিকা ও গণমাধ্যমে যেসব সংবাদ বেরিয়েছে, এর কোনো সত্যতা নেই৷''
তিনি বলেন, ‘‘দেশের রাষ্ট্র্র ক্ষমতায় বসতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ষড়যন্ত্রের দরকার হয় না৷ তিনি রাজনীতিতে উড়ে এসে জুড়ে বসেননি৷ ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত বরাবরই আওয়ামী লীগ করে আসছে৷''
আর বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন৷ তিনি দাবি করেছেন, ‘‘সরকার যেভাবে ছক তৈরি করছে তাতে যে-কোনো মুহূর্তে দেশনেত্রীকে (খালেদা জিয়া) আটক করতে পারে৷'' নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘যে যেখানে আছেন সেখান থেকেই প্রস্তুতি নিন৷ যাতে সময় হলেই বেরিয়ে পড়তে পারেন৷ নেত্রীর নির্দেশের অপেক্ষায় বসে থাকবেন না৷''