1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সমুদ্রের মাঝে মঠের মধ্যে আধুনিক মনোরঞ্জন

২৬ নভেম্বর ২০২১

সমুদ্রের মাঝে এক টিলার উপর মনাস্ট্রি৷ জোয়ার-ভাঁটার খেলার মাঝে গোটা এলাকার রূপ বদলে যায়৷ এমন অসাধারণ স্থাপনাকে প্রেক্ষাপট হিসেবে ব্যবহার করে চোখ ধাঁধানো শোয়ের আয়োজন করেছেন এক ফরাসি ডিজে৷

https://p.dw.com/p/43Wz7
সমুদ্রের মাঝে এক টিলার উপর মনাস্ট্রি৷ জোয়ার-ভাঁটার খেলার মাঝে গোটা এলাকার রূপ বদলে যায়৷ এমন অসাধারণ স্থাপনাকে প্রেক্ষাপট হিসেবে ব্যবহার করে চোখ ধাঁধানো শোয়ের আয়োজন করেছেন এক ফরাসি ডিজে৷
ছবি: DW

মঁ স্যাঁ মিশেল এমন রূপে এর আগে কখনো দেখা যায় নি৷ ফ্রান্সের উত্তর-পশ্চিমের বিখ্যাত মঠ-টিলা ১৯৭৯ সাল থেকে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় স্থান পেয়েছে৷

এমন জায়গায় পারফর্ম করা প্যারিসের ডিজে মিকায়েল কানিত্রোর জন্য অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা৷ সেই সুযোগের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘মঁ স্যাঁ মিশেল এক ঐতিহাসিক ও প্রতীকী স্থান৷ অসাধারণ দৃশ্যের পাশাপাশি আধ্যাত্মিক পরিবেশও রয়েছে৷ এই জায়গা আমাকে অনেক প্রেরণা দেয়৷ শিশু বয়সে বাবা-মার সঙ্গে দর্শনীয় স্থান হিসেবে সবার আগে এখানেই এসেছিলাম৷ এমনকি আমার প্রপিতামহীও সঙ্গে ছিলেন৷''

প্যারিসের এই ডিজে ও তাঁর টিম প্রায় ছয় মাস ধরে প্রস্তুতি চালিয়েছিলেন৷ এমন দুরূহ কাজ সম্পর্কে কানিত্রো বলেন, ‘‘এই জায়গাটি অত্যন্ত জটিল৷ সমুদ্রের মাঝে তৈরি এই কেল্লা অবশ্যই প্রযুক্তিগত ও শৈল্পিক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে৷ এমন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সত্যি কঠিন৷’’

১৫৭ মিটার উঁচু এই মনাস্ট্রি এক হাজার বছরেরও আগে অ্যাটলান্টিক মহাসাগরের এক টিলার উপর নির্মিত হয়েছিল৷ স্থাপত্য জগতের এক মাস্টারপিস হিসেবে সেটি পরিচিত৷

ভিন্ন রূপে মঁ স্যাঁ মিশেল

সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা হিসেবে ফ্রঁসোয়া স্যাঁ জাম এই মঠের প্রতিটি কোণ চেনেন৷ ১৮৭৪ সালে এই স্থাপনাকে জাতীয় সৌধের মর্যাদা দেওয়া হয়৷ জায়গাটি ঘিরে মানুষের মুগ্ধতা কখনোই কাটে না৷ ফ্রঁসোয়া বলেন, ‘‘আমার মতে, এখানে প্রবেশ করলেই আমরা যেন আবার শিশু হয়ে উঠি বলেই এত আবেগ জেগে ওঠে৷ ছোট ছেলেদের জন্য এটা যেন তাদের কাঙ্খিত খেলনার দুর্গ৷ ছোট মেয়েদের জন্য সিন্ডারেলার রূপকথার দুর্গ৷’’

আইফেল টাওয়ার ও ভার্সাই প্রাসাদের পর মঁ স্যাঁ মিশেল দর্শনীয় স্থান হিসেবে সবচেয়ে বেশি পর্যটক আকর্ষণ করে৷ সেই মধ্যযুগেও শিল্পীদের জন্য জায়গাটির জাদুময় আকর্ষণ ছিল৷ তীর্থস্থান হিসেবেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল৷ ফ্রঁসোয়া স্যাঁ জাম মনে করিয়ে দেন, ‘‘গোটা ইউরোপ থেকে হাজার হাজার তীর্থযাত্রী সে সময়ে এখানে আসতেন৷ মোট জনসংখ্যার বিচারে সেই সংখ্যা সত্যি বিস্ময়কর৷ আজ গোটা বিশ্ব থেকে বছরে ২৫ থেকে ৩০ লাখ মানুষ আসেন৷ মধ্যযুগের তীর্থযাত্রীদের পদচিহ্ন বরাবর তাঁরা এগিয়ে চলেন৷’’

চোখ ধাঁধানো লাইট শো ইভেন্টের আওতায় ডিজে মিকায়েল কানিত্রো এমনকি মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবিও দেখাচ্ছেন৷ বিভিন্ন ঐতিহাসিক শোধের উপর তিনি এমন ছবি নিক্ষেপ করেন৷ এভাবে তিনি বিভিন্ন প্রজন্মের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটাতে চান৷ মিকায়েল বলেন, ‘‘আমার মনুমেন্টাল ট্যুরের মাধ্যমে এমন অনন্য ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলিকে আমি ভিন্ন স্বাদে তরুণ প্রজন্মের কাছে নিয়ে আসতে চাইছি৷ তারা ইলেকট্রনিক মিউজিক শোনে৷ অন্যদিকে অপেক্ষাকৃত বয়স্ক মানুষ ক্লাবে না গিয়েও আমার সংগীতের স্বাদ পাচ্ছেন৷’’

ইউরোপীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য দিবস উপলক্ষ্যে প্যারিসের এই ডিজে মনাস্ট্রি টিলায় পার্টির আবহ সৃষ্টি করেছেন৷ এক রাতের জন্য এই মঠ লাইট শো-র উজ্জ্বল মঞ্চ হয়ে উঠেছে৷ ইলেকট্রো বিটের তালে প্রাচীন প্রাচীর কেঁপে উঠছে৷

ফ্রঁসোয়া স্যাঁ জাম অবশ্য তাঁর প্রিয় মঁ স্যাঁ মিশেলে নীরবতাই পছন্দ করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রতি সন্ধ্যায় এখানে অসাধারণ এক প্রাকৃতিক ঘটনা ঘটে৷ সেটা হলো সূর্যাস্ত৷ সূর্যাস্তের এমন অভিজ্ঞতা অন্য কোথাও সম্ভব নয়৷''

পরিবর্তনশীল বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে মঁ স্যাঁ মিশেল অতীতের মতো বর্তমানেও মানুষকে মন্ত্রমুগ্ধ করে চলেছে৷

কাটিয়া লিয়র্শ/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান