1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সমুদ্রে মারাত্মক দূষণ বাড়ছে

১০ মে ২০১৩

প্রশান্ত মহাসাগরে অভিযান চালিয়ে একদল বিজ্ঞানী আবর্জনার কুপ্রভাবের যে পরিচয় পেয়েছেন, তা দুশ্চিন্তার বড়ো কারণ৷ প্রানিজগতের উপর এর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে৷

https://p.dw.com/p/18Vrj
ছবি: ZHdK

প্রশান্ত মহাসাগরের ঠিক মাঝখানে এক অভিযানে উত্তর অ্যামেরিকা আর জাপানের মাঝামাঝি সাগরের পানি থেকে মাছ নয়, প্লাস্টিকের আবর্জনা টেনে বার করেছেন বিজ্ঞানীরা৷ তাঁদেরই একজন নিকোল আর্জিরোপুলোস৷ তিনি জানেন, মানুষের তৈরি আবর্জনা বাতাসে উড়ে, নদীর পানি বেয়ে সাগরে এসে পড়ে৷ তেমনই একটা বোতলের অংশ পেয়েছেন, যার ভিতরে কয়েকটা কাঁকড়াও বাসা বেঁধেছে৷

সাগরের স্রোতে এই প্লাস্টিক আবর্জনা প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝখানে এই সুবিশাল আবর্তে এসে জমা হয়৷ যেন জলের তলায় আবর্জনা ফেলার জায়গা! যেমন পুরনো মাছ ধরার জালগুলো জড়িয়ে-পাকিয়ে আছে৷ অভিযানের নেত্রী মেরি ক্রাউলি বলেন, ‘‘আমরা এখনও বুঝে উঠতে পারি না, এ সব জিনিস এখানে জমা হলো কি করে৷ দেশে কি বাড়িতে আমরা প্লাস্টিকের যা কিছু ব্যবহার করি, সবই সাগরের জলে পাওয়া গেছে: বিয়ারের কেস, নানা ধরনের বোতল, সেফটি রেজর, জুতো, টুথব্রাশ৷ প্লাস্টিকের যা কিছু আমরা ব্যবহার করে থাকি, তার সবই পাচ্ছি সাগরে৷''

Pazifischer Ozean Umweltverschmutzung Müll im Meer
সমুদ্র থেকে আজর্জনা তুলছেন বিজ্ঞানীরাছবি: AP

সহকর্মীদের সঙ্গে নিকোল এক দীর্ঘ যাত্রায় এসেছেন৷ ক্যালিফোর্নিয়া থেকে প্রায় বারো'শ মাইল দূরে আবর্জনার আবর্ত থেকে প্রায় ২০০ মাইল দূরে অবস্থাটা কেমন, তিনি তা পরীক্ষা করে দেখছেন৷

ছাঁকনি দিয়ে গবেষকরা সমুদ্রের পানি ছেঁকে দেখছেন৷ এখানে যা পাওয়া যাচ্ছে, তার নব্বই শতাংশই প্লাস্টিক – সাগরের ঢেউ'এ আর অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে অতি ছোট কণায় পরিণত হয়েছে৷ অ্যান্ড্রিয়া নিল আর তাঁর সতীর্থরা দেখছেন, জেলিফিশ কীভাবে প্লাস্টিক খায়৷

আরেক গবেষক আন্দ্রেয়া নিল বললেন, ‘‘এখানে আমরা প্রায় কোনো জীবন্ত প্রাণী বা উদ্ভিদ দেখছি না, দেখছি শুধু আবর্জনা৷ আবর্জনা পরিবেশের উপর কীরকম মারাত্মক প্রভাব ফেলে, সেটাই দেখছি আমরা৷''

জাহাজের ল্যাবোরেটরিতে বিশ্লেষণ করে এটাই প্রমাণিত হয় যে, এই আবর্জনা জীবজন্তু ও উদ্ভিদের ক্ষতি করে৷ প্লাস্টিকের অংশ ও কণাগুলিতে কীটনাশক কিংবা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ক্লোরাইড লেগে থাকে৷ সাগরে প্লাস্টিক আবর্জনার ফলে পরিবেশ তার ভারসাম্য হারাচ্ছে৷ অথচ সময় ফুরিয়ে আসছে৷

সাগরের ছোট ছোট প্রাণীরা যখন এই বিষাক্ত পদার্থ খায়, তখন ফুড চেইনের পথ ধরে সেটা শেষমেষ মানুষের খাদ্যেও দেখা দেয়৷ অভিযানের নেত্রী মেরি ক্লাউলি মনে করেন, সারা বিশ্বের মানুষকে সচেতন করে তুলতে না পারলে এই কাজ বৃথা৷ আর শুধু বসে বসে দেখা সম্ভব নয়৷

মার্কিন গবেষক দল আবার ক্যালিফোর্নিয়ার দিকে যাত্রা করেছেন৷ সেখানে তাদের কাজ হবে, সাগরে প্লাস্টিক আবর্জনা সমস্যার একটা সমাধান খোঁজা৷

এসি/এসবি