সমুদ্রে টিনের খোঁজ
স্থলে টিনের রসদ ক্রমশ কমতে থাকায় ইন্দোনেশিয়ায় অনেকে সাগরের নীচে টিনের খোঁজ করছেন। দেখুন ছবিঘরে...
ইন্দোনেশিয়ায় টিন
ইন্দোনেশিয়া থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি টিন রপ্তানি করা হয়। এই টিন না থাকলে অকেজো হয়ে পড়তে পারে বিশ্বের ইলেক্ট্রনিক্স, খাবারের প্যাকেজিংসহ আরো বহু শিল্পক্ষেত্র।
নৌকায় চেপে টিনের খোঁজে
ইন্দোনেশিয়ার বাংকা দ্বীপ থেকে ছোট ছোট কাঠের নৌকায় চেপে টিন খোঁজায় পটু শ্রমিকরা কাজে যান প্রতিদিন। এই বিশেষ নৌকা বা পন্টুনের সাথেই লাগানো থাকে নানা ধরনের যন্ত্র, যা সাগরের গর্ভ থেকে কাঁচা টিন তুলতে পারে।
টিন শিল্পের বাস্তবতা
বাংকা দ্বীপ সংলগ্ন অঞ্চলের মাটিও টিনে ভরা। কিন্তু সেই টিনের রসদ প্রায় তলানিতে গিয়ে পৌঁছানোয় এখন সাগরের নিচের টিনের দিকে এগোচ্ছেন শ্রমিকেরা। ৫১ বিছর বয়সি হেন্ড্রা বলেন, “আমাদের জমি থেকে আয় কমছে। সেখানের রসদ ফুরিয়ে এসেছে। সাগরের তলায় এখনো অনেক টিনের রসদ রয়েছে।”
বোবা হয়ে কাজ করতে হয়
একসাথে অনেকগুলি পন্টুন নৌকায় চেপে শ্রমিকরা পৌঁছান টিনের রসদের কাছে। নানা ধরনের যন্ত্রের সাহায্যে টিন তোলার কাজে এত জোরে শব্দ হয় যে শ্রমিকেরা একে অন্যের কথা শুনতে পান না। কাজ চালাতে হয় নানা অঙ্গভঙ্গি করেই।
যেভাবে তোলা হয় টিন
হেন্ড্রার রয়েছে এমন ছয়টি পন্টুন নৌকা, নৌকাপিছু তিন থেকে চারজন সহকারি। প্রায় ৬৬ ফুট লম্বা মোটা পাইপের সাহায্যে সাগরপৃষ্ঠের বালু থেকে টেনে বের করা হয় কাঁচা টিন। এই কাঁচা মিশ্রণকে বহুবার চালানো হয় প্লাস্টিকের জালের মধ্য দিয়ে, যার শেষে হাতে আসে চকচকে টিন।
টিন থেকে আয়
টিনমিশ্রিত বালুর কেজিপ্রতি শ্রমিকেরা পায় সত্তর থেকে আশি হাজার ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়াহ (বাংলাদেশি টাকায় ৫০০ টাকার কাছাকাছি)। গড়ে একদিনে একটি পন্টুন নৌকায় মোট ৫০ কেজি টিন মেশানো বালু ওঠে। টিন খনন সংস্থা পি টি টিমাহ জানাচ্ছে যে গত বছর এই অঞ্চল থেকে মোট ১৬ হাজার ৩৯৯ টন টিন তোলা সম্ভব হয়। কিন্তু শ্রমিক পরিবারের অনেকের মতে, এর থেকে সংসার চালানো দুষ্কর।
টিন খননের যা বিপদ
টিনের নতুন রসদের খোঁজ মেলার পর থেকে এই অঞ্চলে বাড়ছে অবৈধ খননের চক্র। শুধু তাই নয়, খননের ভারি যন্ত্রপাতির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্থানীয় মৎস্যজীবীদেরও। ইন্দোনেশিয়ার প্রকৃতিপ্রেমীদের সংগঠন ওয়ালহি বলছে যে, এই বাংকা অঞ্চলে টিন খননের ফলে বিপন্ন হচ্ছে স্থানীয় প্রবাল, মাছ ও ম্যানগ্রোভ প্রজাতি।