সপ্তাহব্যাপী করোনার বুস্টার ডোজ শুরু
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে দেশব্যাপী করোনার টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজের কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা চলবে ১০ জুন পর্যন্ত। এ কার্যক্রম বিভিন্ন টিকাকেন্দ্রে চলবে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২.৩০টা পর্যন্ত।
প্রথম দিনে ভিড় নেই
ঢাকার শ্যামলীর বেশ কয়েকটি সরকারি হাসপাতাল ও টিকাকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, কোনো টিকাকেন্দ্রেই তেমন ভিড় নেই। বুস্টার টিকা দিতে যারা আসছেন, রেজিস্ট্রেশন শেষ করে সাথে সাথেই টিকা দিয়ে চলে যেতে পারছেন। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন একাধিক টিকাগ্রহীতা।
ভিড় না থাকার কারণ
৪ জুন থেকে করোনা ভাইরাসের বুস্টার টিকা কার্যক্রমের সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির প্রথম দিনে টিকা কেন্দ্রগুলোতে তেমন ভিড় কেনো নেই জানতে চাইলে টিকা কেন্দ্রে একাধিক দায়িত্বরত ব্যক্তি জানান, প্রথম দিন হওয়ায় অনেকেই সময় মিলাতে পারেননি। তাছাড়া নিকটস্থ যে কোনো কেন্দ্রেই বুস্টার দেওয়ার সুবিধা থাকায় অনেকেই সুবিধামতো স্থায়ী বা অস্থায়ী কেন্দ্রে টিকা নিচ্ছেন।
স্থায়ী ও অস্থায়ী কেন্দ্র
করোনার বুস্টার টিকার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে স্থায়ী টিকাকেন্দ্রের পাশাপাশি অস্থায়ী টিকাকেন্দ্রগুলোও চালু করা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়। স্থায়ী টিকাকেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা হাসপাতাল। সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড, পৌরসভার ওয়ার্ড, ইউনিয়ন পর্যায়ের ওয়ার্ডগুলোতে অস্থায়ী কেন্দ্র পরিচালিত হবে।
যারা বুস্টার টিকার জন্য উপযুক্ত
১৮ বছর বা এর বেশি বয়সি, যাদের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ৪ মাস পূরণ হয়েছে এবং যাদের টিকা কার্ড আছে, কেবল তারাই করোনার বুস্টার ডোজ বা তৃতীয় ডোজের জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত হচ্ছেন। এক্ষেত্রে সুরক্ষা অ্যাপ থেকে টিকাকার্ডটি ডাউনলোড করে সেটি নিয়ে নিকটস্থ যেকোন টিকাকেন্দ্রে গেলেই বুস্টার টিকা দেওয়া যাচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
চার কোটি অপেক্ষমাণ
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকা কর্মসূচির পরিচালক ডাঃ শামসুল হক বলেন, আমরা এই এক সপ্তাহে ১ কোটির বেশি বুস্টার ডোজ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। ইতিমধ্যে প্রায় দেড় কোটি বুস্টার দেওয়া হয়েছে। বুস্টার ডোজ নেওয়ার উপযুক্ত প্রায় চার কোটি মানুষ আমাদের এখনো অপেক্ষমাণ।
স্বাভাবিক টিকাদান কার্যক্রম চলমান
ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বুস্টার ডোজ হিসেবে ফাইজারের টিকা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স বলেন, আমরা বুস্টারের পাশাপাশি করোনার ১ম ও ২য় ডোজ টিকাও দিচ্ছি। সরেজমিনে একাধিক টিকাকেন্দ্র পরিদর্শন করে প্রতিবেদক জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটসহ অন্যান্য মেডিকেল কলেজেও একই চিত্র দেখতে পান।
মোট টিকাকেন্দ্র
করোনা ভাইরাসের তৃতীয় বা বুস্টার ডোজের সপ্তাহব্যাপী চালানো কার্যক্রমে দেশব্যাপী স্থায়ী এবং অস্থায়ীসহ মোট ১৬ হাজার ১৮১টি টিকাকেন্দ্র থেকে টিকাদান কর্মসূচি চালু থাকবে। এর মধ্যে স্থায়ী কেন্দ্র ৬২৩টি ও অস্থায়ী কেন্দ্র ১৫ হাজার ৫৫৮টি। বুস্টার ডোজ সপ্তাহ চলাকালে একযোগে ৪৫ হাজার ৫৩৫ জন টিকাদান কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী টিকাদান কাজে নিয়োজিত থাকবেন বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে।
মাস্ক বাধ্যতামূলক
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে বুস্টার টিকাদান কার্যক্রমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেখানে টিকাগ্রহীতাদের মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা থাকলেও টিকা কেন্দ্রে আসা অনেককেই মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। কারণ জানতে চাইলে শফিকুর রহমান নামের একজন টিকাগ্রহীতা বলেন, এখন তো করোনার অতো প্রকোপ নেই, তাই মাস্ক এখন পরার দরকার হয় না।
টিকার সর্বশেষ আপডেট
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত দেশে করোনার ১ম ডোজ টিকা নিয়েছেন প্রায় ১২ কোটি ৮৭ লাখ মানুষ, ২য় ডোজ পেয়েছেন ১১ কোটি ৭৬ লাখ, ৩য় বা বুস্টার ডোজ পেয়েছেন প্রায় ১ কোটি ৫৫ লাখ মানুষ, অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯% মানুষ বুস্টার ডোজ পেয়েছেন বলে জানা যায়।
প্রচারণা
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে সপ্তাহব্যাপী বুস্টার ডোজের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের জ্ঞাতার্থে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে ব্যানার, এলাকাভিত্তিক মাইকিং, মসজিদের ইমাম কর্তৃক ঘোষণা এবং মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে মানুষদের জানানো হচ্ছে।
৩) ৪) ৫) ৬) ৭) ৮) ৯) ১০)