1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণ

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২

গানে ইন্দ্রধনু ছড়িয়েছিলেন তিনি৷ ‘এ শুধু গানের দিন, এ লগন গান শোনাবার’- এ কথা শুধু তার কণ্ঠেই বারবার শুনেছেন সংগীতপ্রেমীরা৷ বাংলা গানের স্বর্ণযুগের তারকার জীবনাবসান হলো৷ 

https://p.dw.com/p/47448
Sandhya Mukherjee
ছবি: Satyajit Shaw/DW

৯০ বছর বয়সে প্রয়াত সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়৷ ২৬ জানুয়ারি বুধবার সন্ধ্যায় অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রবাদপ্রতিম সংগীতশিল্পী৷

সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়েন গীতশ্রী৷ শিল্পীর বাড়ির লোকজন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চাইলেও, শিল্পীর যেহেতু হৃদযন্ত্রের সমস্যা রয়েছে, তাই কোনো ঝুঁকি নিতে চাননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এসএসকেএম থেকে শিল্পীকে কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি৷ ঘটনাচক্রে ভারত সরকারের দেওয়া পদ্ম সম্মান কিছুদিন আগেই প্রত্যাখ্যান করেন শিল্পী৷

২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি প্রয়াত হন সুচিত্রা সেন৷ নিজেকে একেবারে আড়ালে রাখলেও রোমান্টিক বাঙালির কাছে সুচিত্রা ছিলেন অন্যতম আইডল৷ আর সুচিত্রা সেনের গান মানেই ছিল যেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়৷ স্বর্ণকণ্ঠী শিল্পী এবং সুচিত্রা আসলে ছিলেন যুগলবন্দি৷ সন্ধ্যার কণ্ঠ, সুচিত্রার কণ্ঠ মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল৷ বাঙালি আসলে জানে না, সে কার প্রেমে পড়েছিল সুচিত্রা, নাকি সন্ধ্যার৷

‘জানি না ফুরাবে কবে এই পথ চাওয়া’, গেয়েছিলেন শিল্পী৷  তার জীবনাবসানের সঙ্গে সঙ্গে বাংলা গানের একটা অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটলো৷ এই পথ চাওয়া বোধ হয় সত্যি আর ফুরাবে না৷
কিছুদিন আগেই প্রয়াত হয়েছেন লতা মঙ্গেশকর৷ এবার সুরলোকে পাড়ি দিলেন তার বন্ধু সন্ধ্যা৷ বুধবার পূর্ণ মর্যাদায় কলকাতার কেওড়াতলা মহাশ্মশানে গীতশ্রীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে৷ রাজনৈতিক সফরসূচি বদলে সে কারণে কলকাতায় ফিরছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

‘মধু মালতী ডাকে আজ’, ‘চন্দন পালঙ্কে শুয়ে’, ‘ঘুম ঘুম চাঁদ ঝিকিমিকি তারা’, ‘তুমি না হয় রহিলে’, ‘কী মিষ্টি দেখো মিষ্টি’, ‘আজ কৃষ্ণচূড়ার আবির’ কিংবা ‘মায়াবতী মেঘে এলো তন্দ্রা’র মতো বাংলা গান যেমন গেয়েছেন শিল্পী, তেমনি হিন্দিতে ‘কৌন তেরাসে তুম খেলো ,খেলো তো হোলি’-র মতো মারাত্মক কঠিন গানও অনায়াসেই গেয়েছেন তিনি৷  শাস্ত্রীয়সংগীত, লঘু শাস্ত্রীয় সংগীত, আধুনিক গান, নজরুলগীতি, রবীন্দ্রসংগীত এবং সেই সঙ্গে মুম্বইয়ে হিন্দি চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক-সবেতেই সন্ধ্যা নিজের ছাপ রেখেছেন৷ ভারতীয় মার্গসংগীতে ছিল তার অনায়াস বিচরণ৷ তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া শিল্পীমহলে৷ সংগীত জগত অভিভাবকহারা হয়ে পড়লো এমনটাই মনে করছেন তারা৷

গায়ক শ্রীকান্ত আচার্য এই প্রসঙ্গে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমার দিদি বলে ডাকতাম ঠিকই৷ কিন্তু উনি আমার মাতৃসমা ছিলেন৷ আমাদের মাথার উপর থেকে ছাদটা সরে গেল৷’’

গীতশ্রীর প্রয়াণ কিছুতেই মানতে পারছেন না গায়ক, গীতিকার অনুপম রায়৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘গত ২৬ জানুয়ারিও বোধ হয় কথা হয়েছে৷ আমার সঙ্গে গান নিয়ে কত কথা বলেছেন৷ এমন একজন গুণী মানুষ আমায় নিজে ফোন করেছেন মহমারির সময়৷ তিনি আর নেই ভাবতে পারছি না আমি ৷ আমার বাড়ির লোক চলে গিয়েছে বলে মনে হচ্ছে৷ একটা অধ্যায়ের শেষ হয়ে গেল৷’’

রোশনি কুহু চক্রবর্তী