সন্ত্রাসের কাছে মাথা নত করেনি সুইডেন
শুক্রবার এক ট্রাক হামলায় সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে ৪ জন মারা যায়, আহত হয় ১৫ জন৷ তারপর থেকে সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্যে একটাই বার্তা পাঠাচ্ছে সুইডেন আর তা হলো, ‘‘সন্ত্রাসীরা কখনো জয়ী হতে পারে না৷’’
যেভাবে হামলা
শুক্রবার স্টকহোমের সেরগেল স্কয়্যারে অতর্কিতে ঢুকে পড়ে একটি ট্রাক৷ দ্রুত গতিতে ঢুকে পড়ে এথেন্স ডিপার্টমেন্ট স্টোরে৷ এ ঘটনায় চার জন নিহত এবং ১৫ জন আহত হয়৷
নিহতরা কোন কোন দেশের?
সুইডেনের পুলিশ ট্রাক হামলায় নিহতদের পরিচয় প্রকাশ করেছে৷ তারা জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে দু’জন সুইডিশ, একজন ব্রিটিশ এবং একজন বেলজিয়ামের নাগরিক৷ আহত ১৫ জনের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক৷
দু’জন গ্রেপ্তার
ট্রাক হামলার প্রধান আসামী হিসেবে উজবেকিস্তান থেকে আসা এক অভিবাসনপ্রত্যাশীকে আটক করেছে পুলিশ৷ ওই ব্যক্তির অভিবাসনের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে এবং দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য পুলিশ তাকে খুঁজছিল৷ ৩৯ বছর বয়সি ওই সন্দেহভাজন তখাকথিত জঙ্গি সংগঠন আইএস-এ যোগ দিতে সিরিয়ায় যাবার আগ্রহ প্রকাশ করতেন বলেও পুলিশ জানতে পেরেছে৷ হামলায় জড়িত সন্দেহ আরেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তার বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি৷
সন্ত্রাসীরা আতঙ্ক ছড়াতে ব্যর্থ
শুক্রবারের হামলায় হতাহতদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে রবিবার স্টকহোমের সেরগেল স্কয়্যার সমবেত হয় অন্তত ২০ হাজার মানুষ৷
সন্ত্রাসের জবাবে ‘ভালোবাসার উৎসব’
বারের সমাবেশটির নাম ছিল ‘লাভফেস্ট’, অর্থাৎ ‘ভালোবাসার উৎসব’৷ উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে স্টকহোমের মেয়র কারিন ভানগার্ড বলেন, ‘‘ভয় রাজত্ব করতে পারবে না৷ সন্ত্রাস কখনো জয়ী হতে পারে না৷’’ উপস্থিত একজনের হাতে ছিল ‘কারো প্রতি ঘৃণা নয়, সবার জন্য ভালোবাসা’ লেখা প্ল্যাকার্ড৷ হেডস্কার্ফ পরা এক নারীর হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘‘(সন্ত্রাসের) প্রতিক্রিয়ায় আমরা ভয় পাই না, আমরা বরং মানুষকে আরো ভালোবাসি৷’’
শোকের দেশ
হামলার পর থেকে সুইডেন যেন শোকের দেশ৷ রবিবারের সমাবেশে অনেককেই অঝোরে কাঁদতে দেখা গেছে৷ কেউ কেউ কাঁদতে কাঁদতে সাহস এবং দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দেয়ায় পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন৷ অনেকে আবার হতাহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আনা ফুল থেকে কয়েকটি ফুল তুলে দিয়েছেন পুলিশের হাতে৷
এক মিনিটে সারা দেশের প্রতিবাদ
ট্রাক হামলার প্রতিবাদ জানাতে সোমবার দুপুরে এক মিনিটের জন্য স্তব্ধ হয়ে যায় সুইডেন৷ ওই এক মিনিট সারা দেশের কোথাও কোনো কাজ হয়নি, কেউ কোনো শব্দ করেনি৷ হত্যার মতো ঘৃণ্য অপরাধের প্রতি এভাবেই নীরব প্রতিবাদ জানিয়েছে সুইডেনের সব মানুষ৷