1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ষাট বছরে আস্টেরিক্স

৪ ডিসেম্বর ২০১৯

কমিক চরিত্র কীভাবে জাতীয় সম্পদ হয়ে উঠতে পারে, ফ্রান্সের আস্টেরিক্স তার অন্যতম সেরা উদাহরণ৷ ফ্রান্সে এই চরিত্রের ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে অনেক আয়োজন করা হয়েছে৷ নতুন প্রজন্মের দুই লেখক আরও কাহিনি সৃষ্টি করে চলেছেন৷

https://p.dw.com/p/3UBTX
ছবি: Reuters/P. Rossignol

আস্টেরিক্স ২০১৯ সালে তার ৬০ বছরের জন্মদিন পালন করছে৷ অনুরাগীরা অধীর আগ্রহে নতুন অ্যাডভেঞ্চারের অপেক্ষায় রয়েছে৷

জ-নিভ ফেরি ও দিদিয়ে কনরাড সেই কাহিনি লিখেছেন৷ এটি তাঁদের লেখা চতুর্থ কাহিনি৷ এই দুই ফরাসি লেখক আস্টেরিক্সের সৃষ্টিকর্তা রনে গসিনি ও আলবেয়ার উ্যদেরসো-র উত্তরাধিকারী৷ দিদিয়ে মনে করেন, ‘‘আস্টেরিক্স কোনো সাধারণ হিরো নয়৷ সে টিনটিন বা সুপারম্যান নয়, বরং এক কার্টুন চরিত্র৷ তাকে দেখলে গুরুত্ব দেওয়া কঠিন৷ আসলে সে এক বামন৷’’

গল সম্প্রদায়ের ছোট্ট এই মানুষটি সাহস ও বুদ্ধি সম্বল করে শক্তিশালী রোমানদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে নামে৷ অনেক ব্যঙ্গকৌতুকসহ আস্টেরিক্স অনেকটা ডেভিড বনাম গলিয়াথের এক আধুনিক সংস্করণ৷ তার কাহিনি শুধু ফ্রান্সেই জনপ্রিয় হয় নি, গোটা বিশ্বে এখনো পর্যন্ত প্রায় ৩৮ কোটি বই বিক্রি হয়েছে৷ বছর দুয়েক আগে সর্বশেষ কাহিনিটি ৫০ লাখ কপি কিনেছেন মানুষ৷ জ-নিভ ফেরি বলেন, ‘‘এমন দুই লেখকের খোঁজ চলছিল, যাদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া রয়েছে৷ আমাদের কাছেও শুরুতে বিষয়টি কঠিন ছিল৷’’

কার্টুন চরিত্র যখন জাতীয় সম্পদ

২০১৩ সাল থেকে এই দুই নতুন লেখক মোটামুটি জাঁকিয়ে বসেছেন৷ তবে আলবেয়ার উ্যদেরসো ও রনে গসিনির কন্যা আন এখনো কাহিনির ছাড়পত্র সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন৷ আন বলেন, ‘‘তাঁরা আমাকে সবার আগে একটা সারাংশ পাঠান৷ তারপর একটি করে অধ্যায় আসে৷ যখন মনে হয় আইডিয়াগুলি মূল লেখা থেকে বড্ড দূরে সরে যাচ্ছে, তখন খোলাখুলি সে কথা বলি৷ অন্যদিকে তাঁদেরও নির্দিষ্ট মাত্রায় স্বাধীনতা থাকা উচিত৷ তবে মূলমন্ত্র সব সময়েই অক্ষত থাকে৷’’

বর্তমান কাহিনিতে নতুন প্রজন্মকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷ আদ্রেনালিন নামের এক নারী এই কাহিনির মূল চরিত্র৷ দিদিয়ে কনরাড বলেন, ‘‘আস্টেরিক্সের কাহিনিতে অনেক পুরুষ চরিত্র রয়েছে৷ সে কারণে নারী চরিত্র সৃষ্টি করা আমাদের জন্য অনেক সহজ৷’’

লেখক জ-নিভ ফেরি এ প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দেন, ‘‘আজ আমরা এমন এক যুগে বাস করছি, যেখানে নারীদের আচরণ বদলে গেছে৷ নারী সম্পর্কে ধারণারও পরিবর্তন হয়েছে৷ তবে আস্টেরিক্সের ক্ষেত্রে আমরা ঠিক নারীবাদী হয়ে উঠি নি৷ সেটা একেবারেই খাপ খাবে না৷’’

আস্টেরিক্স ও তার প্রাণের বন্ধু ওবেলিক্সের মাঝে এক বিদ্রোহী কিশোরীর চরিত্র! মোক্ষম চাল বলতে হয়, কারণ আস্টেরিক্স বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে খুব জনপ্রিয়৷ এমনকি ফরাসি ভাষার ক্লাসেও এই চরিত্রের বই পড়ানো হয়৷

আস্টেরিক্সের ৬০ বছর পূর্তি ফ্রান্সে বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে পালন করা হচ্ছে৷ প্যারিস শহরের মেট্রো রেলের যাত্রীদের অবাক করছে এই চরিত্র৷ আস্টেরিক্সের সম্মানে ডাকটিকিটও ছাপা হয়েছে৷ দিদিয়ে কনরাড বলেন, ‘‘মানুষ আস্টেরিক্সকে চেনেন, বেশ পছন্দও করেন৷ ইতিবাচক ও পরিচিত বলে তাঁদের মনে হয়৷’’

জ-নিভ ফেরি একটি ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, ‘‘বইয়ের দোকানে এক মা তাঁর ছেলেকে বলছিলেন, তুমি কিন্তু কিছুই কিনবে না! ছেলেটি ছুটে গিয়ে আস্টেরিক্সের বই নিয়ে এলো৷ মা বললেন, ও এইটা! ঠিক আছে৷ তাঁর হয়তো মনে হয়েছিল জাতীয় স্তরের পবিত্র এমন সম্পদকে তো আর অস্বীকার করা যায় না!’’

সফল দুই লেখকের মনে আইডিয়ার শেষ আছে বলে মনে হয় না৷ আগামী অ্যাডভেঞ্চারের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে এখনই তাঁদের মনে একটা ধারণা হয়েছে৷ দিদিয়ে কনরাড মনে করেন, ‘‘আরও কল্পনার আশ্রয় নিতে হবে বলে আমাদের দুজনের মনে হচ্ছে৷

জ-নিভ ফেরি পূর্বাভাষ দিয়ে বলেন, ‘‘পরের বইয়ে আস্টেরিক্স নিজেকে নিয়ে উপহাস করবে, অট্টহাসিতে ফেটে পড়বে – এমনটাই আমি চাই৷ তবে সেই লক্ষ্যে তাকে ঘটনাক্রমের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে হবে৷’’

সর্বশেষ কাহিনিটি আস্টেরিক্সের ভক্তদের কাছে কতটা সমাদর পাবে, আপাতত সেটাই জরুরি বিষয়৷

কাটিয়া লিয়র্শ/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য