শুধু কি টাকার জন্য হত্যা করা হয়েছিল ফাহিমকে?
১৯ জুলাই ২০২০অ্যামেরিকান তদন্তকারীদের বরাত দিয়ে শনিবার খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি৷ ৩৩ বছর বয়সী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কোটিপতি ফাহিম সালেহ গেল সোমবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের নিজস্ব বিলাসবহুল বাসভবনে নৃশংসভাবে খুন হন৷ তার মাথা ও শরীরের অংশগুলো কেটে আলাদা করে করা ছিল৷ ফাহিমের এক বোন তার লাশ উদ্ধার করেন৷
আসামী হ্যাসপিলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ডিগ্রি হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে৷ হ্যাসপিল অবশ্য নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন৷ তবে আদালত তাকে জামিন দেননি৷
সোমবার বিকেলে তদন্তকারীরা সিকিউরিটি ক্যামেরার ভিডিও উদ্ধার করেন৷ সেখানে দেখা যায়, ফাহিমের পেছন পেছন হ্যাসপিল (পরে চিহ্নিত) লিফট দিয়ে ওঠেন৷ অভিযোগে বলা হয়েছে, দুই বেডরুমের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটটিতে এরপর ফাহিমকে একটি স্টানগান দিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়৷ মঙ্গলবার একটি হার্ডওয়্যার স্টোরের ফুটেজে দেখা যায়, সেদিন সকালে হ্যাসপিল একটি ইলেকট্রিক করাত ও ঘর পরিষ্কার করার পণ্য কিনছিলেন৷
হ্যাসপিলের অ্যাটর্নির যুক্তি, যেহেতু এই ২১ বছর বয়সী যুবকের আগের কোন অপরাধের রেকর্ড নেই, তাই অভিযোগের বাইরেও ঘটনা থাকতে পারে৷
‘‘আমরা এখনো খুব প্রাথমিক পর্যায়ে আছি৷ এই মামলা দীর্ঘসূত্রী ও জটিল হবে,’’ বিবৃতি দেন হ্যাসপিলের আইনজীবীদের সংগঠন লিগ্যাল এইড সোসাইটির দুই অ্যাটর্নি স্যাম রবার্টস ও নেভিল মিশেল৷
ফাহিমের ঘাড় ও গলায় পাঁচটি কোপের দাগ পাওয়া গেছে৷ এছাড়া কাঁধে ও বাঁ হাতে আঘাতের চিহ্ন আছে৷ আদালতে জমা দেয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, তার হাঁটুর ঠিক নীচে থেকে, কাঁধ ও গলা থেকে কেটে ফেলা হয়েছে৷
নিজের যোগ্যতা, নিষ্ঠা ও পরিশ্রম দিয়ে অতি অল্প বয়সে সাফল্য পান কোটিপতি ফাহিম৷ তিনি বাংলাদেশের জনপ্রিয় রাইড শেয়ারিং কোম্পানি পাঠাওয়ের একজন প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন৷ পরবর্তীতে নাইজেরিয়ায় গোকাডা নামে একটি রাইড শেয়ারিং কোম্পানিও প্রতিষ্ঠা করেন৷ যুক্তরাষ্ট্রের বেন্টলি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে৷ ডিজিটাল স্টার্টআপ নিয়ে কাজ করতেন শুরু থেকেই৷ তিনি ছিলেন টেক মিলিওনেয়ার৷ যে বাড়িটিতে তিনি থাকতেন তার দাম কয়েক লাখ ডলার৷
সহকারি হ্যাসপিল তার আর্থিক বিষয়গুলো দেখতেন৷ ধারণা করা হচ্ছে, ফাহিমের অনেকগুলো টাকা নয়ছয় করেছিলেন হ্যাসপিল৷ সেগুলো নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকেই এই খুন করা হতে পারে৷
ম্যানহাটানের তদন্ত পুলিশ বিভাগের প্রধান রডনি হ্যারিসন মঙ্গলবার প্রেস কনফারেন্সে বলেন, ‘‘মনে করা হচ্ছে, অপরাধের শিকার ব্যক্তির অভিযুক্তের কাছে বড় অঙ্কের অর্থ পাওনা ছিল৷’’ এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত ছিল কি না তাও খুঁজে দেখা হচ্ছে৷
জেডএ/এফএ (এপি)