শিশুদের সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহারের শাস্তি
১৮ জুন ২০১৩তবে বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকট এলিনা খান মনে করেন, এই আইনের অপব্যবহার রোধে কোনো রক্ষাকবচ না থাকায় তা হয়রানির জন্য ব্যবহার হতে পারে৷
রবিবার জাতীয় সংসদে পাস হওয়া শিশু বিল ২০১৩-তে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি শিশুদের সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহার করে তাহলে তার বিচার হবে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে৷ আইনের বিধান অনুযায়ী, যারা সন্ত্রাসী কাজে শিশুদের নিয়োগ করবে অপরাধ তার ওপরই বর্তাবে৷
অ্যাডভোকট এলিনা খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, আইনটির মূল চেতনার সঙ্গে তিনিও একমত৷ শিশুদের কোনোভাবেই সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহার করা যাবে না৷ যারা শিশুদের সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহার করবে বা শিশুদের অপরাধ জগতে নিয়ে যাবে, তাদের আইনের আওতায় আনা খুবই জরুরি৷ তবে তিনি মনে করেন, এই আইনের অপব্যাহারের দিকটি মাথায় না রেখেই পাস করা হয়েছে৷
এলিনা খান বলেন, এই আইনে যারা প্রকৃতই অপরাধী তারা ছাড়া পেয়ে যেতে পারে৷ আর যারা অপরাধী নয়, তারা হয়রানির শিকার হতে পারেন৷ কারণ এই আইনে অনেক ফাঁকফোকর আছে৷ তাই যারা নিরীহ তারা শেষ পর্যন্ত রেহাই পেলেও মাঝখানে হয়রানির শিকার হবেন৷ তাই তিনি বলেন, এই আইনে রক্ষাকবচ থাকা উচিত৷ নয়ত পুলিশ এর অপব্যবহার করবে৷ এমনকি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেও এই আইনের ব্যবহার হতে পারে৷ এলিনা খান মনে করেন, শুধু আইন নয়, শিশুদের সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহারের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনসচেতনতাও গড়ে তোলা উচিত৷
গত ৫ই মে ঢাকায় হেফাজতের ঢাকা অবরোধ এবং মতিঝিলের সমাবেশে মাদ্রাসা পড়ুয়া শিশুদের ব্যবহার করার প্রেক্ষাপটে আইনে এ ধারাটি অন্তর্ভূক্ত করা হয়৷ শুধু সমাবেশ নয়, রাতে হেফাজত কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযানের সময়ও মাদ্রাসার শিশুদের ‘মানব ঢাল' হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা হয়৷ এছাড়া, বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে শিশুদের অংশগ্রহণও লক্ষ্যণীয়৷ বিশেষ করে গাড়ি ভাঙচুর, আগুন দেয়া এবং ককটেল ছোড়ায় তাদের সক্রিয় দেখা যায়৷ এর বাইরে অপরাধীরা শিশুদের অস্ত্র ও মাদকের ‘ক্যারিয়ার' হিসেবে ব্যবহার করে৷ অপরাধমূলক কাজের তথ্য আদান-প্রদানেও তাদের ব্যবহার লক্ষ্য করার মতো৷