1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কল্পনার চরিত্রের বাস্তব রূপ

২৭ মে ২০২১

নিষ্পাপ ও সরল শিশুদের সীমাহীন কল্পনাশক্তির পথে বাধা সৃষ্টি করলে অনেক মৌলিক আইডিয়া হারিয়ে যেতে পারে৷ ব্রিটেনের এক ডিজাইনার নিজের শিশুসন্তানদের উৎসাহ দিয়ে তাদের কল্পনার ফসলের অভিনব রূপ তুলে ধরছেন৷

https://p.dw.com/p/3u1A9
Euromaxx 20.03.2021 | Tom Curtis
ছবি: Tom Curtis

ব্রিটিশ ডিজাইনার টম কার্টিসের মনে শিশুদের কল্পনার জগতকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার আইডিয়া আসে৷ শিশুদের আঁকা ছবি বাস্তবে রূপান্তরিত করতে অনবদ্য কিছু প্রাণী সৃষ্টি করেছেন তিনি৷ যেমন, গলাহীন এক ঘোড়া, বিড়ালের মুখে মানুষের দাঁত অথবা গরুর শরীরে বিড়ালের মতো পা৷ এমন বিচিত্র শখের সূচনার বর্ণনা দিতে গিয়ে টম বলেন, ‘‘প্রথম যে ছবির মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করেছিলাম, সেটি ছিল আমার ছেলে ডমের আঁকা আমারই পোরট্রেট৷ জানতাম বেশ উদ্ভট কিছু হবে৷ গোটা প্রক্রিয়া বেশ দীর্ঘ৷ জঘন্য ছবিটি তৈরি হবার প্রক্রিয়া লক্ষ্য করলাম৷ একদিকে আঁকা ছবি, অন্যদিকে মূল বাস্তব সংস্করণ দেখা যাচ্ছে৷ আমার স্ত্রী বেকি ছবিটি দেখে নিশ্চয় ভেবেছে যে ভুল মানুষটিকে বিয়ে করেছে!''

২০১৫ সালে টম কার্টিস ‘থিংস আই হ্যাভ ড্রন' প্রকল্প শুরু করেন৷ তখন তার দুই সন্তান ডম ও অ্যাল ছোট ছিল৷ তাদের আঁকা জন্তুজানোয়ার, দৈত্য-দানব, গাড়ি অথবা মানুষ দেখে টম প্রেরণা পেয়েছিলেন৷ ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে তিনি সেগুলিকে বিস্ময়কর ছবিতে রূপান্তরিত করেন৷ টম বলেন, ‘‘আমার মতে, শিশুদের সৃজনশীল হতে উৎসাহ দেওয়াই এই প্রকল্পের বিশেষত্ব৷ বাইরের জগতে কম্পিউটার গেমসের মতো কতরকম হাতছানি যে রয়েছে! এখানে শিশুরা কাগজের উপর ইচ্ছামতো আঁকার সুযোগ পাচ্ছে৷''

শিশুদের কল্পনার চরিত্রের বাস্তবায়ন

লন্ডনের উত্তর পশ্চিমে কার্টিস পরিবারের ভিটে চেডিংটনের আশাপাশে ঘোরার সময়ই আঁকার বেশিরভাগ খোরাক পাওয়া গিয়েছিল৷ টম ও তার স্ত্রী শুরু থেকেই সন্তানদের সৃজনশীল হতে উৎসাহ দিয়ে গেছেন৷ বাবার মজার ইলাস্ট্রেশন দেখে তারা আরো উৎসাহ পেয়েছে৷ সূচনার কয়েক বছরের মধ্যেই পারিবারিক এই প্রকল্প গোটা বিশ্বে পরিচিতি পায়৷ প্রথমে শুধু বন্ধুবান্ধবরাই নিজেদের সন্তানের আঁকা ছবি তাকে পাঠাতেন৷ তারপর টম কার্টিস সেগুলির উদ্ভট সংস্করণ সৃষ্টি করতেন৷

তারপর তিনি রূপান্তরের আগের ও পরের ছবিগুলি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করতে শুরু করেন৷ আজ তিনি প্রতি মাসে গোটা বিশ্বের শিশুদের হাতে আঁকা প্রায় ১০০ ছবি হাতে পান৷ তারা সেই ছবির থ্রিডি সংস্করণের আবদার জানায়৷ টম মনে করেন, নিষ্পাপ ও নির্মল দেখতে ছবিগুলিই আসলে সেরা৷ কোনো শিশু শুধু কল্পনা থেকেই কোনো জীব আঁকলে তা বোঝা যায়৷

হাতে আঁকা কোনো ছবির ‘রূপান্তর' ঘটাতে প্রায় ১৫ ঘণ্টা সময় লাগে৷ টম কার্টিস শিল্পকলা নিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে একটি এজেন্সিতে ‘ক্রিয়েটিভ ডায়রেক্টর' হিসেবে কাজ শুরু করেন৷ অবসর সময়েই ছবি রূপান্তরের কাজে মেতে ওঠেন৷ ‘থিংস আই হ্যাভ ড্রন' তার কাছে হবি বা শখ হয়ে উঠেছে৷ কম্পিউটারের পর্দায় নিজের কাজের ধরন ব্যাখ্যা করে টম কার্টিস বলেন, ‘‘যেমন মূল ফটোর এই চোখ নিয়ে আমি ছবির মধ্যে সঠিক জায়গায় ফুটিয়ে তুলবো৷ জুম করে খুঁটিনাটী বিষয়গুলি দেখে মাপ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারি৷ তারপর একটু এদিক-ওদিক করেও দেখতে পারি৷''

এভাবে খরগোসের একটি ফটো থেকে কোনো শিশুর কল্পনার জগতের জীব জন্ম নেয়৷ বয়স বেড়ে যাওয়ায় নিজের দুই ছেলে সেই প্রকল্পের জন্য আর উপযুক্ত না থাকলেও গোটা বিশ্ব থেকে পাওয়া ছবির দৌলতে টম কার্টিস শিশুদের কল্পনার ফসলকে খেলাচ্ছলে বাস্তবে রূপান্তরিত করে চলেছেন৷

ডিয়ানা পিনিয়েরোস/এসবি